কেশপুর, 11 এপ্রিল: জীবিত তৃণমূল নেতার নামে মৃত্যুর শংসাপত্র বের করে এবং ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে সেই শংসাপত্র পেশ করে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ! এভাবে মোট 11 ডেসিমেল জমি বেহাত হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে ৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর ব্লকের এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তৃণমূলেরই এক কর্মী ও তাঁর স্ত্রী ! বিষয়টি জানাজানি হতেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা ৷ দলীয়ভাবে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বও ৷
তৃণমূল নেতা তাজ মহম্মদ বক্স ওরফে লখু ৷ দলের শ্রমিক সংগঠনের ব্লক সভাপতি তিনি ৷ এখনও দিব্যি বেঁচেবর্তেই রয়েছেন ৷ সেই তাঁকেই মৃত বলে শংসাপত্র বের করে এবং নিজেকে তাঁর একমাত্র কন্য়া বলে দাবি করেন এলাকারই এক মহিলা ! তাঁর নাম তামান্না খাতুন ৷ তাঁর স্বামী শেখ আসাদুল হক তৃণমূলেরই সক্রিয় কর্মী !
তাজ মহম্মদের অভিযোগ, ভুল তথ্য পেশ করে তাঁর জমি হাতিয়ে নিয়েছেন এই দম্পতি ৷ এমনকী, সেই জমিতে বাড়ি তৈরির কাজও শুরু হচ্ছে ! বিষয়টি জানতে পেরেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তাজ মহম্মদ ৷ পঞ্চায়েত প্রধান ও স্থানীয় থানায় আসাদুল ও তামান্নার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি ৷
প্রসঙ্গত, তাজ মহম্মদ বক্স কেশপুর ব্লকের কেশপুর 10 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সরই গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ৷ বর্তমানে তাঁর বয়স 65 বছর ৷ একসময় পরিবহণ কর্মী ছিলেন ৷ রাজনীতির সঙ্গেও তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ৷ প্রথমে কংগ্রেস, পরবর্তীতে তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে এখনও পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দলের সক্রিয় সদস্য এই বৃদ্ধ ৷ দলের শ্রমিক সংগঠনের ব্লক সভাপতি পদেও রয়েছেন তিনি ৷
ঘটনা প্রসঙ্গে তাজ বলেন, "তামান্না খাতুন ও তাঁর স্বামী শেখ আসাদুর হক আমার প্রতিবেশী ৷ রক্তের সম্পর্কে এঁরা আমার কেউ নন ৷ আমার নয় ছেলেমেয়ের মধ্যে একজন মারা গিয়েছেন ৷ বাকি আটজন এবং আমার দুই স্ত্রী বর্তমান ৷ আমার ওই প্রতিবেশী দম্পতি আমাকে মৃত দেখিয়ে, এবং নিজেদের আমার একমাত্র মেয়ে-জামাই পরিচয় দিয়ে, ভুয়ো সার্টিফিকেট পেশ করে আমার 11 ডেসিমেল জমি হাতিয়ে নিয়েছেন ৷"
আরও পড়ুন: মমতার সতর্কবার্তার পরদিনই নানুরে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ বলেন, "এমন একটি অভিযোগ বিএলআরওর কাছে জমা পড়েছে ৷ বিএলআরও পুলিশের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷" কেশপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রদ্যুত পাঁজা বলেন, "অভিযোগ শুনেই আমরা প্রশাসনের কাছে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি ৷ পঞ্চায়েত প্রধানের পক্ষে এত খোঁজ রাখা সম্ভব নয় ৷ তবে, পঞ্চায়েতের তরফেও ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে ৷"