নয়াদিল্লি, 1 ফেব্রুয়ারি: প্রতিরক্ষায় ফের বাড়ল বরাদ্দ ৷ পাকিস্তান ও চিনের চ্যালেঞ্জের মুখে আধুনিকীকরণের জন্য সামরিক বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপের প্রতিফল দেখা গেল কেন্দ্রীয় বাজেটে ৷ শনিবার 2025-26 সালে প্রতিরক্ষায় ব্যয় হিসাবে 681210 কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মোট বরাদ্দের মধ্যে 180000 কোটি টাকা খরচ হবে সশস্ত্র বাহিনীর মূলধন ব্যয়ের জন্য ৷ যার মধ্যে মূলত নতুন অস্ত্র, বিমান, যুদ্ধজাহাজ এবং অন্য প্রয়োজনীয় সামরিক হার্ডওয়্যার ক্রয় করার ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে দাবি করা হয়েছে, 6.81 লক্ষ কোটি টাকার মোট প্রতিরক্ষা বাজেট বর্তমান আর্থিক বছরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৷ যা গত বারের তুলনায় 9.53 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলধন ব্যয় সম্পর্কে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, 148722.80 কোটি টাকা নতুন সামরিক হার্ডওয়্যার সংগ্রহের জন্য 'আধুনিকীকরণ বাজেটে' ব্যয় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে ৷ অবশিষ্ট 31277 কোটি টাকা গবেষণা ও উন্নয়ন এবং পরিকাঠামোগত সম্পদ তৈরিতে ব্যয় করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, 111544 কোটি টাকা যা আধুনিকীকরণ বাজেটের 75 শতাংশ দেশিয় উৎসের মাধ্যমে সংগ্রহের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। শেয়ারের পঁচিশ শতাংশ যা 27886 কোটি টাকা দেশীয় বেসরকারি শিল্পের মাধ্যমে সংগ্রহের জন্য বলা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য মূলধন 2024-25 সালের বাজেট অনুমান 1.72 লক্ষ কোটি টাকার চেয়ে 4.65 শতাংশ বেশি। 2024-25-এর জন্য সংশোধিত মূলধন ব্যয় ধরা হয়েছিল 159500 কোটি টাকা। সামগ্রিক মূলধন ব্যয় 192387 কোটি টাকা রাখা হয়েছে ৷ যার মধ্যে 12387 কোটি টাকা প্রতিরক্ষা পরিষেবার জন্য রাখা হয়েছে।
আরও জানা গিয়েছে, পরবর্তী অর্থবছরে প্রতিদিনের অপারেটিং খরচ এবং বেতনের জন্য রাজস্ব ব্যয় 488822 কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে ৷ যার মধ্যে পেনশনের জন্য 160795 কোটি টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রতিরক্ষা বাজেটের জন্য বরাদ্দ অনুমান করা হয়েছে 2025-26 সালে অনুমানকৃত জিডিপির 1.91 শতাংশ।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং সামগ্রিক বরাদ্দকে স্বাগত জানিয়েছেন ৷ তাঁর কথায়, "প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতকে স্বনির্ভর করা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টিভঙ্গি। সেদিকেই এগিয়েছে বাজেট। " তিনি আরও বলেন, " এই বিরাট বরাদ্দ প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আধুনিক করার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং সক্ষম হতে আরও বেশি সাহায্য করবে।"
বাজাটের মূলধন ব্যয়ের অধীনে, বিমান এবং এয়ারো ইঞ্জিনের জন্য 48614 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ৷ অন্যদিকে, নৌ বহরের জন্য 24390 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অন্য সরঞ্জামের জন্য 63099 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নৌ ডকইয়ার্ড প্রকল্পের জন্য 4500 কোটি টাকা আলাদাভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে।
সীমান্ত এলাকায় পরিকাঠামো উন্নত করতে এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ভূখণ্ডে চলাচলের সুবিধার্থে, বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)-এও 7146 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বাজেট নথি অনুযায়ী, সশস্ত্র বাহিনীর জন্য রাজস্ব বরাদ্দ ছিল 311732 কোটি টাকা, যা মোট ব্যয়ের 45.76 শতাংশ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, সরকার 2022-23 সাল থেকে সশস্ত্র বাহিনীর "রক্ষণাবেক্ষণ এবং অপারেশনাল প্রস্তুতি"-এর জন্য ক্রমাগত বেশি মাত্রায় বরাদ্দ করে আসছে। সেই অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের বাজেট 2025-26 সালের জন্য 24.25 শতাংশের একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "সীমান্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন, জাহাজ ভাড়া, জাহাজের দীর্ঘ সমুদ্র যাত্রায় ব্যয় বৃদ্ধি এবং বিমানের জন্য এই বরাদ্দ প্রয়োজনীয়তা পূরণ করবে ৷" অন্যদিকে, প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)-এর বাজেট বরাদ্দ 23855 কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে 26816 কোটি টাকা করা হয়েছে। এর মধ্যে, 14923 কোটি টাকার একটি বড় অংশ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।