চন্দ্রকোনা, 25 সেপ্টেম্বর: পুজোর আগে ব্যস্ততা তুঙ্গে চন্দ্রকোনার ডিঙ্গাল গ্রামের মালাকার পরিবারে। চাহিদা থাকলেও কাঁচামালের সংকটে দুশ্চিন্তায় মালাকার পরিবারগুলি। বংশ পরম্পরায় তাঁদের কাজে হাত লাগিয়েছে মহিলা, পুরুষ নির্বিশেষে বড় থেকে ছোটরা। এরা বংশ পরম্পরায় শোলার কাজ করেন। শোলার চাঁদমালা, মুকুট, প্রতিমার অঙ্গসজ্জার নানান গহনা। দুর্গাপুজোর সময় তাঁদের ব্যস্ততা থাকে চরমে। যেমন এখন নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিনরাত ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাঁদমালা-সহ শোলার বিভিন্ন গহনা তৈরি করতে।
ঘরের দাওয়ায় বসে চাঁদমালায় ডিজাইন তুলতে যে তুলনায় পরিশ্রম হয় সেই তুলনায় রোজগার হয় না। তবুও পূর্বপুরুষদের পেশাকে ছাড়তে পারেননি বলে জানাচ্ছেন মালাকার পরিবারের সদস্যরা। আগে গ্রামে অধিকাংশ পরিবার এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল ৷ বর্তমানে পরিশ্রমের তুলনায় রোজগার কম তার ওপর কাঁচামালের সংকট। তাই এই পেশা থেকে মুখ ফেরাচ্ছে অনেক পরিবার। বংশ পরম্পরায় চলে আসা এই পেশা ধরে রেখেছেন ডিঙ্গাল গ্রামের প্রদীপ মালাকার ও তাঁর পরিবার। সামনেই দুর্গাপুজো ৷ তাই ডিঙ্গাল গ্রামের মালাকার পরিবারে শোলার গয়না তৈরিতে হাত লাগিয়েছে পরিবারের পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা সদস্যরাও।
পরিবারের দাবি, তাদের এই কাজের মূল সম্পদ হল শোলা ৷ সেই শোলা এখন অমিল নিজেদের এলাকাতেই। ফলে বাইরে থেকে চড়া দামে শোলা কিনে এনে গয়না তৈরির কাজ করতে হয়। পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া থেকে তাঁরা পাইকারি দরে শোলা কিনে এনে এইসব উপকরণ তৈরি করেন। সেই শোলাও এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলছে না। এ নিয়ে এক প্রদীপ মালাকার নামের এক শিল্পী বলেন, "আগে প্রচুর শোলা পাওয়া যেত এখানেই ৷ এখন তা মেলে না, বাইরে থেকে দ্বিগুণ দামে কিনতে হয়। এখন নানা কারণে শোলার সংকট দেখা দিচ্ছে ৷ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দামও বেড়েছে। তুলনায় মালা, চাঁদমালা-সহ গয়নার দাম বাড়েনি।"
দুর্গাপুজোর সময় বিভিন্ন দশকর্মা দোকান থেকে চাহিদা মতো অর্ডার আসে তাঁদের কাছে ৷ মালাকার পরিবারের দাবি, এখন আধুনিক জিনিসপত্র বেরিয়ে যাওয়ায় শোলার কাজের কদর কমেছে, তাই তাঁদেরও রোজগারপাতি কমেছে।
আরও পড়ুন: পুজোর কেনাকাটা করতে এবার থাকছে স্পেশাল মেট্রো পরিষেবা