দুর্গাপুর, 4 জুলাই : পাঁচের দশকে স্টিল টাউনশিপ সহ দুর্গাপুর মহকুমা বিভিন্ন এলাকায় বহু জনজাতির বসবাস শুরু হয় । 1975 সালে দুর্গাপুরে প্রথম গণযোগাযোগ মাধ্যম হিসাবে মিনিবাস পরিষেবা চালু হয় । হাতেগোনা কয়েকটি মিনিবাস সেদিন দুর্গাপুরের মানুষের কাছে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে ।
বর্তমানে প্রায় 250টি মিনিবাস দুর্গাপুর মহকুমার বিভিন্ন রুটে চলাচল করে । প্রায় 1 হাজার মিনিবাস কর্মী ওতপ্রোতভাবে এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত । কিন্তু কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুর শহরজুড়ে সিএনজি অটো ও লাগামছাড়া টোটো গাড়ির চলাচল শুরু হয়েছে ৷ ফলে মিনিবাস পরিষেবার ধীরে ধীরে বন্ধের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে ।
ব্যাঙ্কে চড়া সুদে ঋণ নেওয়া মিনিবাস মালিকরা পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ৷ একদিকে কর্মীদের বেতন ৷ অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান জ্বালানির খরচ মিটিয়ে ব্যাঙ্কে মাসিক কিস্তি মেটাতে নাজেহাল তাঁরা । এরপরে আছে সরকারি কোষাগারে বিভিন্ন খাতে টাকা জমা করা । টোটো ও অটোর দৌরাত্ম্যে জেরে মিনিবাস পরিষেবা একেবারে লাটে ওঠার জোগাড় ৷
সবকিছু সামাল দিয়ে তাও কোনরকমে চলছিল মিনিবাস । ভোর থেকে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত দুর্গাপুরের লাইফ লাইন মিনিবাস পরিষেবা চালু ছিল । কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন হওয়ার পরেই আরও ধ্বংসের মুখে চলে যায় মিনিবাস । সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শ্রমিকদের বেতন । অথচ সরকারি নিষেধাজ্ঞা 50 শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চালাতে হবে । বাড়াতে দেওয়া হচ্ছে না বাসের ভাড়া । আর তাই দুর্গাপুরে মিনিবাস চালু করতে পারছেন না মালিকরা ।
বেসরকারি ভলভো বাস, ওলা, উবের, অটো এমনকি টোটোর ভাড়া বাড়লেও মিনিবাসের ভাড়া না বাড়ার কারণেই চরম সংকটের মুখে দুর্গাপুরের লাইফ লাইন । তাই দুর্গাপুর মহাকুমার মিনিবাস মালিকরা চরম দুশ্চিন্তায় দিনযাপন করছেন । কীভাবে ব্যঙ্কের দেনা মেটাবেন, কর্মীদের বেতন দিতে পারবেন কিনা, হাজারো প্রশ্নের ভিড়ে দমবন্ধ হওয়ার জোগাড় তাঁদের ৷
আরও পড়ুন : সেঞ্চুরি ছুঁইছুঁই জ্বালানির দাম, তৃণমূল-বিজেপির কাদা ছোড়াছুড়ি
মিনিবাস কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন । তাঁদের অভিযোগ, চরম সংকটের সময়ে তাঁদের পাশে কেউ নেই । মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই মিনিবাস বাঁচানোর আবেদন জানাচ্ছেন তাঁরা ৷