ETV Bharat / state

অন্ধত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জুডোয় আন্তর্জাতিক খেতাব জয় অমিতের - অমিত যাদব

পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার দৃষ্টিহীন ছেলেদের নিয়ে জুডো এবং জুজুৎসুর পরীক্ষামূলক প্রশিক্ষণ শুরু হয় । সেখানেই ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ মেলে অমিতের । প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেই সবাইকে চমকে দেন । এক বছরের মধ্যেই জাতীয় স্তরে রুপো জিতে যায় । তারপর 2018 সালে রাজ্য জুডোতে সোনা জয়লাভ করে সে । পরপর আসতে থাকে সাফল্য । এরপরেই দক্ষিণ এশিয়ায় জুজুৎসু প্রতিযোগিতায় সোনা জয় করে আন্তর্জাতিক খেতাব অর্জন করে অমিত যাদব ।

অমিত যাদব
author img

By

Published : Oct 13, 2019, 5:31 PM IST

Updated : Oct 13, 2019, 5:42 PM IST

কুলটি, 13 অক্টোবর : আসানসোলের কুলটির বিড়লা পাড়ার বাসিন্দা অমিত যাদব ৷ বাবা ভোলা যাদব ঝালমুড়ি বিক্রেতা ৷ অমিতের লেখাপড়ায় কোনও বাধা পড়েনি তাতে ৷ কিন্তু হঠাৎই বিপর্যয় ৷ 2007 সালের নভেম্বরের একটি দিন বদলে দেয় অমিত যাদবের জীবন ৷ বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করতে গিয়ে হাতেই বাজি ফেটে যায় ৷ বাজির আগুনে দু'টো চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় অমিতের ৷ জীবনের শুরুতেই একটা বড় ধাক্কা ৷ কিন্তু দৃষ্টিশক্তি হারালেও হার মানতে নারাজ অমিত ৷ বরং সেখান থেকেই জীবনের লড়াই শুরু তার ৷ কঠিন পরিশ্রম আর মনোবলে আজ আন্তর্জাতিক খেতাব জিতেছে সে ৷ আন্তর্জাতিক স্তরে জুডো ও জুজুৎসু প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছে ৷ লক্ষ্য অলিম্পিকে যোগ দেওয়া ৷

অমিত নিজের চেষ্টাতেই আসানসোলের দৃষ্টিহীনদের বিশেষ স্কুল ব্রেইল অ্যাকাডেমিতে ভরতি হন । কিন্তু সেখানে বেশি দূর পড়াশোনা করার উপায় ছিল না ৷ পরে সে নিজেই খোঁজ নিয়ে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের দৃষ্টিহীনদের প্রশিক্ষণ স্কুলে ভর্তি হন । মাধ্যমিক পাশ করে 87% নম্বর নিয়ে । অঙ্কতে 100 পায় অমিত । শুধু তাই নয়, চলে আসে প্রথম সুযোগ ৷ পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার দৃষ্টিহীন ছেলেদের নিয়ে জুডো এবং জুজুৎসুর পরীক্ষামূলক প্রশিক্ষণ শুরু হয় । সেখানেই ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ মেলে অমিতের । প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেই সবাইকে চমকে দেন । এক বছরের মধ্যেই জাতীয় স্তরে রুপো জিতে যায় । তারপর 2018 সালে রাজ্য জুডোতে সোনা জয়লাভ করে সে । পরপর আসতে থাকে সাফল্য । এরপরেই দক্ষিণ এশিয়ায় জুজুৎসু প্রতিযোগিতায় সোনা জয় করে আন্তর্জাতিক খেতাব অর্জন করে অমিত যাদব ।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

চোখের সামনে এখন স্বপ্ন কমনওয়েলথ, অলিম্পিক । কিন্তু অভাবের সংসারে কীভাবে অমিত এগিয়ে যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে । কুলটির বিড়লা পাড়ায় ওঁদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল টালির ছাদ । কয়লার উনুনে হাঁড়িতে ফুটছে ভাত । বাবা ভোলা যাদব ঝাল মুড়ি বিক্রি করে মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা রোজগার করেন । এই পুজোর সময় রাত জেগে বাবার সঙ্গ দিয়েছেন অমিত নিজেও । কিন্তু সেই টাকায় সংসার চলে না । অমিতের পড়াশোনাও বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল আর্থিক কারণে । কিন্তু পাশে দাঁড়িয়েছে কুলটির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মদদ ফাউন্ডেশন ৷ প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক রবিশঙ্কর চৌবে জানান, প্রতিমাসে 2000 টাকার চেক অমিতের পড়াশোনার জন্য তাঁরা দেন । কথা দিয়েছেন যতদিন পড়াশোনা করবে ততদিন তাঁরা আর্থিক সাহায্য করবেন । কোনও সহৃদয় ব্যক্তি যদি পাশে দাঁড়ান, তাহলে অমিত আরও ভালো প্রশিক্ষণ নিতে পারবে জুডোর ।

অমিত জানায়, চ্যালেঞ্জ নিয়ে জয় করাই তাঁর লক্ষ্য । বিশেষভাবে সক্ষমদের উদ্দেশে অমিতের বার্তা, ''পরিশ্রম করে নিজের জায়গাটাকে তৈরি করতে হবে । তবেই সবাই সম্মান দেবে ।''

কুলটি, 13 অক্টোবর : আসানসোলের কুলটির বিড়লা পাড়ার বাসিন্দা অমিত যাদব ৷ বাবা ভোলা যাদব ঝালমুড়ি বিক্রেতা ৷ অমিতের লেখাপড়ায় কোনও বাধা পড়েনি তাতে ৷ কিন্তু হঠাৎই বিপর্যয় ৷ 2007 সালের নভেম্বরের একটি দিন বদলে দেয় অমিত যাদবের জীবন ৷ বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করতে গিয়ে হাতেই বাজি ফেটে যায় ৷ বাজির আগুনে দু'টো চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় অমিতের ৷ জীবনের শুরুতেই একটা বড় ধাক্কা ৷ কিন্তু দৃষ্টিশক্তি হারালেও হার মানতে নারাজ অমিত ৷ বরং সেখান থেকেই জীবনের লড়াই শুরু তার ৷ কঠিন পরিশ্রম আর মনোবলে আজ আন্তর্জাতিক খেতাব জিতেছে সে ৷ আন্তর্জাতিক স্তরে জুডো ও জুজুৎসু প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছে ৷ লক্ষ্য অলিম্পিকে যোগ দেওয়া ৷

অমিত নিজের চেষ্টাতেই আসানসোলের দৃষ্টিহীনদের বিশেষ স্কুল ব্রেইল অ্যাকাডেমিতে ভরতি হন । কিন্তু সেখানে বেশি দূর পড়াশোনা করার উপায় ছিল না ৷ পরে সে নিজেই খোঁজ নিয়ে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের দৃষ্টিহীনদের প্রশিক্ষণ স্কুলে ভর্তি হন । মাধ্যমিক পাশ করে 87% নম্বর নিয়ে । অঙ্কতে 100 পায় অমিত । শুধু তাই নয়, চলে আসে প্রথম সুযোগ ৷ পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার দৃষ্টিহীন ছেলেদের নিয়ে জুডো এবং জুজুৎসুর পরীক্ষামূলক প্রশিক্ষণ শুরু হয় । সেখানেই ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ মেলে অমিতের । প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেই সবাইকে চমকে দেন । এক বছরের মধ্যেই জাতীয় স্তরে রুপো জিতে যায় । তারপর 2018 সালে রাজ্য জুডোতে সোনা জয়লাভ করে সে । পরপর আসতে থাকে সাফল্য । এরপরেই দক্ষিণ এশিয়ায় জুজুৎসু প্রতিযোগিতায় সোনা জয় করে আন্তর্জাতিক খেতাব অর্জন করে অমিত যাদব ।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

চোখের সামনে এখন স্বপ্ন কমনওয়েলথ, অলিম্পিক । কিন্তু অভাবের সংসারে কীভাবে অমিত এগিয়ে যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে । কুলটির বিড়লা পাড়ায় ওঁদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল টালির ছাদ । কয়লার উনুনে হাঁড়িতে ফুটছে ভাত । বাবা ভোলা যাদব ঝাল মুড়ি বিক্রি করে মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা রোজগার করেন । এই পুজোর সময় রাত জেগে বাবার সঙ্গ দিয়েছেন অমিত নিজেও । কিন্তু সেই টাকায় সংসার চলে না । অমিতের পড়াশোনাও বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল আর্থিক কারণে । কিন্তু পাশে দাঁড়িয়েছে কুলটির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মদদ ফাউন্ডেশন ৷ প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক রবিশঙ্কর চৌবে জানান, প্রতিমাসে 2000 টাকার চেক অমিতের পড়াশোনার জন্য তাঁরা দেন । কথা দিয়েছেন যতদিন পড়াশোনা করবে ততদিন তাঁরা আর্থিক সাহায্য করবেন । কোনও সহৃদয় ব্যক্তি যদি পাশে দাঁড়ান, তাহলে অমিত আরও ভালো প্রশিক্ষণ নিতে পারবে জুডোর ।

অমিত জানায়, চ্যালেঞ্জ নিয়ে জয় করাই তাঁর লক্ষ্য । বিশেষভাবে সক্ষমদের উদ্দেশে অমিতের বার্তা, ''পরিশ্রম করে নিজের জায়গাটাকে তৈরি করতে হবে । তবেই সবাই সম্মান দেবে ।''

Intro:দুর্ঘটনায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়েও লড়াই থামেনি অমিতের, আন্তর্জাতিক খেতাব জয়


হাতের মধ্যে বাজি ফেটে, সেই বাজির আগুনে দুটো চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। জীবনের পথ চলার শুরুতেই এত বড় ধাক্কা। কিন্তু দৃষ্টিশক্তি হারিয়েও দমে যায়নি কুলটির অমিত যাদব। বরং বলা চলে সেখান থেকেই তার লড়াই শুরু। কঠিন পরিশ্রম আর মনোবলে অমিত আজ আন্তর্জাতিক খেতাব জিতেছে। চোখের সামনে তাই অনেক বড় স্বপ্ন। কুলটির যুবক অমিত যাদব আন্তর্জাতিক স্তরে জুডো ও জিজিৎসু প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছে। তার আগামী দিনের লক্ষ্য অলিম্পিকে যোগদান করা।
আসানসোলের কুলটির বিড়লা পাড়ার বাসিন্দা অমিত যাদব। বাবা ভোলা যাদব সামান্য ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালায়। কিন্তু তার মাঝেও অমিতের পড়াশুনো ঠিকঠাক ভাবে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎই বিপর্যয়। ২০১২ সালে কালিপুজোর সময় বাজি পোড়াতে গিয়ে হাতের মধ্যেই বাজি ফেটে যায়। আর তার বারুদে এবং আগুনে অমিতের দুটো চোখ নষ্ট হয়ে যায়। দৃষ্টিহীন হয়ে যায় অমিত। গোটা পরিবার বিহ্বল হয়ে পড়ে অমিতের আগামী ভবিষ্যৎ চিন্তা করে। কিন্তু সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই অমিতের। নিজের চেষ্টাতেই সে আসানসোলের অন্ধদের স্কুল ব্রেইল একাডেমিতে ভর্তি হয়। কিন্তু সেখানে বেশি দূর পড়াশোনা করা যায় না। তাই নিজেই খোঁজ নিয়ে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের অন্ধদের প্রশিক্ষণ স্কুলে ভর্তি হয়। মাধ্যমিক পাস করে 87% নাম্বার নিয়ে ।অঙ্কতে একশোর মধ্যে একশো পায় অমিত। শুধু তাই নয় চলে আসে প্রথম সুযোগ পশ্চিমবঙ্গের প্রথমবার অন্ধ ছেলেদের নিয়ে জুডো এবং জিজিৎসুর পরীক্ষামূলক প্রশিক্ষণ শুরু হয় ।আর তাতেই সুযোগ পায় অমিত। কিন্তু অংশগ্রহণ করেই সবাইকে চমকে দেয় অমিত। এক বছরের মধ্যেই ন্যাশনাল মিটে রুপো জয় করে। তারপর 2018 সালে রাজ্য জুডোতে সোনা জয় করে সে। পরপর আসতে থাকে সাফল্য। এরপরেই দক্ষিণ এশিয়ায় জিজিৎসু প্রতিযোগিতায় সোনা জয় করে আন্তর্জাতিক খেতাব অর্জন করে অমিত যাদব। চোখের সামনে এখন স্বপ্ন কমনওয়েলথ, অলিম্পিক। কিন্তু দারিদ্রতার এই পরিবার ।কিভাবে অমিত এগিয়ে যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কুলটির বিড়লা পাড়ায় ওদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল টালির ছাদ। এককোনে কয়লার উনুনে হাড়িতে ফুটছে ভাত। গোটা পরিবারের স্পষ্টত দারিদ্রতা। বাবা ভোলা যাদব ঝাল মুড়ি বিক্রি করে মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা রোজগার করেন। এই পুজোর সময় রাত জেগে বাবার সঙ্গ দিয়েছে অমিত নিজেও। কিন্তু সেই টাকায় সংসার চলে না। অমিতের পড়াশোনাও বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো দারিদ্রতার কারণে। কিন্তু পাশে দাঁড়িয়েছে কুলটির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মদদ ফাউন্ডেশনম ফাউন্ডেশনের সম্পাদক রবিশঙ্কর চৌবে প্রতিমাসে 2000 টাকা করে চেক অমিতের পড়াশোনার জন্য দিয়ে আসেন। কথা দিয়েছেন যতদিন অনেক পড়াশোনা করবে ততদিন তারা আর্থিক সাহায্য করবে অমিতকে। তারা চাইছে আরও কোন সহৃদয় ব্যক্তি যদি পাশে দাঁড়ায় তাহলে অমিত আরও ভালো প্রশিক্ষণ নিতে পারবে জুডোর।
অমিত জানিয়েছে চ্যালেঞ্জ নিয়ে জয় করাই তার লক্ষ্য। যখন প্রথম তার দুর্ঘটনা ঘটে, বন্ধু, সমাজ, অন্যান্য সবাই তাকে সহানুভূতির ছলে বলেছিল সে অনেক কিছুই করতে পারবে না। আর যখন সে করে দেখাচ্ছে সেই তারাই এখন বাহবা দেয়। তাই তার মতো প্রতিবন্ধীদের উদ্দেশ্যে অমিতের বার্তা পরিশ্রম করে নিজের জায়গাটাকে তৈরি করতে হবে। তবেই সবাই সম্মান দেবে।


Body:..


Conclusion:
Last Updated : Oct 13, 2019, 5:42 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.