দুর্গাপুর, 10 ফেব্রুয়ারি: ভয়াবহ আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল 25 থেকে 30টি ঘর ৷ শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর থানা এলাকার প্রান্তিকা তালতলা বস্তিতে (Fire Incident in Durgapur) ৷ প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, আবর্জনার স্তূপে কোনওভাবে আগুন লেগে যায় ৷ তারপর তা ছড়িয়ে পড়ে পাশের একটি ঘরে ৷ ঘিঞ্জি বস্তিতে এরপরই একের পর এক ঘর আগুনের গ্রাসে চলে যায় ৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, আগুনের লেলিহান শিখায় ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে 25 থেকে 30টি ঘর ৷ তবে, দমকলকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রচেষ্টা আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে ৷ এদিনের এই অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের কোনও খবর নেই ৷
দুর্গাপুর থানা এলাকার এই প্রান্তিকা তালতলা বস্তিটি অত্যন্ত ঘিঞ্জি ৷ এখানকার বাসিন্দারা সকলেই নিম্নবিত্ত ৷ এঁদের অধিকাংশ বাড়ি বাড়ি ঘুরে ও রাস্তা থেকে বাতিল কাগজ, প্লাস্টিক প্রভৃতি সংগ্রহ করে আনেন ৷ তারপর তা জমিয়ে রেখে বিক্রি করেন ৷ ফলে বস্তির নানা জায়গায় এই ধরনের পণ্য এবং আবর্জনার স্তূপ দেখতে পাওয়া যায় ৷ এইসব পণ্য অতি দাহ্য ৷ শুক্রবার সকালে এমনই একটি স্তূপে কোনওভাবে আগুন লেগে যায় ৷ আর তা থেকেই ঘটে যায় ভয়াবহ বিপর্যয় ৷ প্রাথমিকভাবে স্থানীয় বাসিন্দারাই আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান ৷ পরে দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে ৷ বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকলকর্মীরা ৷ তাঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগুনের সঙ্গে লড়াই করতে দেখা যায় এলাকাবাসীকে ৷
আরও পড়ুন: বিয়ের সঙ্গীত অনুষ্ঠান চলাকালীন আগুন
দুর্গাপুর দমকল বিভাগের ওসি রহমান চৌধুরী জানান, ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয় ৷ তবে, আবর্জনার স্তূপ থেকে যে আগুন ছড়িয়েছিল, তেমন খবর দমকলের কাছেও রয়েছে বলে জানান তিনি ৷ এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা ৷ তিনি বলেন, "কীভাবে আগুন লাগল, সেটা দমকল খতিয়ে দেখবে ৷ আমাদের প্রধান কাজ হল, আক্রান্তদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেওয়া এবং তাঁদের পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত করা ৷ আমরা সেদিকেই নজর দিচ্ছি ৷"
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের জেরে বস্তির বিভিন্ন ঘরে রান্নার জন্য ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারগুলি একে এক ফাটতে শুরু করে ৷ অন্তত চার-পাঁচটি সিলিন্ডার এদিন এভাবে ফেটে যায় ৷ ফলে আগুন আরও ভয়াবহ হয়ে পড়ে ৷ তবে, এত কিছুর পরও কেউ হতাহত না হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ যদিও তাঁদের অনেকেই এই আগুনে তাঁদের সর্বস্ব খুইয়েছেন ৷