দুর্গাপুর, 21 ফেব্রুয়ারি: দু’দিনের কর্ম বিরতির জেরে এবার থমকে গেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন (Teachers are Stop Working in Asansol) । কর্মবিরতির সুযোগে নিজেরদের মধ্য়ে আড্ডায় মশগুল ব্যস্ত 27 জন শিক্ষক ও শিক্ষিকা । ক্লাসরুমের ভেতর কার্যত গানের জমাটি আসর, কোনও কোনও ক্লাসরুমে পড়ুয়াদের দুপুরের ভাতঘুমে ব্যাস্ত থাকতেই দেখা গেল । সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকে ডিএ-র দাবিতে রাজ্য জুড়ে দু'দিনের কর্ম বিরতির ডাক। যার জেরে রাজ্যের একাধিক সরকারি দফতরে পরিষেবা বিঘ্নিত । এই পরিস্থিতির শিকার সরকারি স্কুলগুলিও ৷
দুর্গাপুরের নডিহা উচ্চ বিদ্যালয়ের চিত্র অনেকটা এইরকম ৷ দু’দিন ধরে বিদ্যালয় খোলা থাকলেও স্কুল গেটের ভেতর পোস্টারে লেখা 'কর্ম বিরতি'। তার জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকে স্কুলের পঠনপাঠন স্তব্ধ । বিদ্যালয়ের 27 জন শিক্ষক শিক্ষিকা কর্মবিরতির সুযোগ নিয়ে গল্প গুজবের আসর জমিয়েছেন । তবে পড়ুয়াদের একাংশ জানাচ্ছে তাদের স্কুল খোলা থাকলেও কোনও শিক্ষক শিক্ষিকা তাদের শ্রেণিকক্ষে আসেননি । তাদের দু’দিন ধরে চরম সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে । আর অপরদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি রাজ্য জুড়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন । সেই জন্য তারা এই কর্ম বিরতিতে । তবে তাঁরা পড়ুয়াদের দেখভাল করছেন ।
যদিও এই কর্ম বিরতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওই স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি অঞ্জন মুখোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "এইভাবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের কর্মবিরতি করা ঠিক হয়নি । তাদের তরফ থেকে ক্লাস নেওয়া হলেও কোনও শিক্ষক শিক্ষিকা ক্লাস নেননি বিদ্যালয়ে । আন্দোলনের বিরোধিতা করিনি । তবে স্কুলের ভেতরে কর্মবিরতির পোস্টার লাগিয়ে এই ধরনের আন্দোলনের বিরোধিতা করেছি।" ডিএ-র দাবিতে এই আন্দোলনে শামিল হতে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক সেলের সদস্য পল দাসকেও । তিনি জানালেন, "ডিএ চায় না এমন কেউ আছে কি ? সবাই ডিএ চায় । আমরা কর্মবিরতি পালন করছি । আমি তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠনের সদস্য। আমি একাই কি শুধুই কর্মবিরতি পালন করছি ? রাজ্যে আমার মত বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মবিরতি পালন করছেন।"
আরও পড়ুন: বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে অফিসে কর্মবিরতি, আন্দোলন যৌথ মঞ্চে
তবে ব্যতিক্রমতো থাকেই ৷ এই কর্মবিরতির মধ্যেই দশম শ্রেণির ছাত্রী সুস্মিতা বাগদি সে ছোটদের ক্লাস নিচ্ছিল এমন ছবিও ধরা পড়ল এই স্কুলেই । সুস্মিতা জানায়, তাদের খুব ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে । কারণ আগামী বছর তাদের মাধ্যমিক পরীক্ষা । চাই শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদের ক্লাস নিক । তবে স্কুলের ভেতরে পোস্টার টাঙ্গিয়ে এইভাবে কর্মবিরতির ছবি স্বাভাবিকভাবেই এক অন্য বার্তা দিচ্ছে ।