দুর্গাপুর, 2 অক্টোবর : উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদ পানাগড়ে । কাঁকসার পানাগড় রেলপাড়ে মোমবাতি মিছিল করল স্থানীয় বাসিন্দারা । মহিলারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হল ।
আজ সন্ধ্যায় পানাগড় রেলপাড় থেকে মিছিল শুরু করে মিছিল শেষ হয় রেলপাড়ের ট্যাঙ্কি তলায় । মিছিল শেষে হাথরসের মৃত নির্যাতিতার আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানায় রেলপাড়ের বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা স্বপ্না বৈদ্য বলেন, ‘‘যেভাবে উত্তরপ্রদেশের ঘটনাকে সেখানকার পুলিশ চাপা দিতে চাইছে আমরা তার প্রতিবাদ করছি । এই নারকীয় ঘটনার তীব্র নিন্দার পাশাপাশি দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি ।’’
হাথরসের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও টুইট করে শোকপ্রকাশ করেন ৷ ঘটনাটিকে বর্বরোচিত বলে আখ্যা দেন তিনি ৷ গতকাল দুর্গাপুরে TMCP-র তরফেও মৌন মিছিলের আয়োজন করা হয় ৷
14 সেপ্টেম্বর মা ও ভাইয়ের সঙ্গে ঘাস কাটতে গিয়ে হাথরসে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন 20 বছরের এক যুবতি । অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে পাশের একটি জমিতে নিয়ে যায় ও গণধর্ষণ করে চারজন ৷ জিভ টেনে ছিঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় ৷ তাঁর জিভে গভীর ক্ষত ছিল । JNMC-তে চিকিৎসা চলছিল যুবতির । অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সোমবার দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভরতি করা হয় । সেখান থেকে পরে AIIMS-এ নিয়ে আসা হয় । টানা 15 দিনের লড়াই শেষে মঙ্গলবার দিল্লিতে মৃত্যু হয় তাঁর ।
এমনকী আরও অভিযোগ ওঠে পরিবারের অনুপস্থিতিতেই হাথরসের নির্যাতিতার শেষকৃত্য সেরে ফেলে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ । এই ঘটনার পর থেকেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা দেশ ।
গতকাল নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছিলেন রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধি । কিন্তু হাথরস ঢোকার আগে একাধিকবার তাঁদের আটকানো হয় । এরপর হেঁটে হাথরসে যেতে গেলে ফের বাধা দেয় পুলিশ । চলে বচসা । ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যান রাহুল। পরে তাঁদের আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ । রাতে গৌতম বুদ্ধ নগরের ইকোটেক ওয়ান পুলিশ স্টেশনে রাহুল ও প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় ।
আজ সকালে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল হাথরসের উদ্দেশে রওনা দেয়। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সমবেদনা জানাতে যাচ্ছিলেন তৃণমূল নেতারা। কিন্তু, হাথরসে ঢোকার মাত্র দেড় কিলোমিটার আগে সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল ও মমতাবালা ঠাকুর(প্রাক্তন সাংসদ)-কে আটকে দেওয়া হয়। বাধার মুখে পড়ে পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা।