আসানসোল, 1 নভেম্বর: সিবিআই অভিযানের পর বেআইনি কয়লার কারবারে প্রায় 90 শতাংশ রাশ টানা গিয়েছে । কিন্তু সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমেনি । রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা ইসিএলের কাছে যারা ই-অকশনে কয়লা কিনছেন বৈধ পথে, খনি থেকে কয়লা নিতে গেলেই অসাধু সিন্ডিকেটের লোকজনকে তোলা দিতে হচ্ছে । সেই অঙ্ক কম টাকা নয় । প্রতিমাসে 25 কোটি টাকার উপর তোলা তুলছে সিন্ডিকেটের অসাধু লোকজন । মঙ্গলবার এমনই অভিযোগ করলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি ।
মঙ্গলবার নিজের আবাসনে জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, তিনি ইতিমধ্যেই সিন্ডিকেটের এই তোলাবাজির বিরুদ্ধে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি, কোল ইন্ডিয়ার সেক্রেটারি এবং ইসিএলের সিএমডিকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করেছেন ।
এদিন তিনি বলেন, "রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা ইসিএল অনলাইন বিডিংয়ে উৎপাদিত কয়লা বিক্রি করে প্রতিমাসে প্রায় 8 লক্ষ মেট্রিক টন । এই কয়লা ই-অকসেনের মাধ্যমে বহু ব্যবসায়ী কেনেন । কিন্তু তাঁরা বিভিন্ন খনি থেকে কয়লা তুলতে শ্রমিক, লরি ইত্যাদির জন্য স্থানীয় ব্যবস্থাপকদের সহায়তা নেন । খনি পরিভাষায় এদের লিফটার বলা হয় । এই লিফটারদের সিন্ডিকেটের অসাধু লোকেদের দ্বারা হুমকি দেওয়া হচ্ছে । প্রতি টন পিছু 300 টাকা সিন্ডিকেটকে তোলা দিতে হচ্ছে । না দিলেই মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে নানান হুমকি দেওয়া হচ্ছে লিফটারদের । অর্থাৎ, টন পিছু 300 টাকা তোলা নিলে, যে পরিমাণ কয়লা বিডিং হচ্ছে তাতে প্রায় 25 কোটি টাকা তোলা তুলছে সিন্ডিকেটের লোকেরা । যা বিরাট পরিমাণ ।"
তাঁর দাবি, এর ফলে কয়লার দাম বেড়ে যাচ্ছে । তোলাবাজির টাকা দিয়ে বিডার'রা যখন সেই কয়লা বিক্রি করতে যাচ্ছে তখন কয়লার দাম এমনিতেই 300 টাকা প্রতি টন বেড়ে যাচ্ছে । তার মানে পাশাপাশি একটি ব্ল্যাক ইকোনমি তৈরি হচ্ছে শিল্পাঞ্চলে । এই ব্ল্যাক ইকোনমিকে বন্ধ করার জন্য পুলিশ থেকে শুরু করে খনি সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট দফতরে যেমন চিঠি দেওয়া হয়েছে তেমনি রাজ্যের শাসকদল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে যাতে এই সিন্ডিকেট রাজের তোলাবাজি বন্ধ হয় । না হলে আসানসোল-সহ খনি অঞ্চলের বদনাম হচ্ছে গোটা দেশের কাছে । কারণ গোটা দেশের ব্যবসায়ীরা বিডিংয়ের মাধ্যমে এই কয়লা কিনতে এলে তাদেরকে পশ্চিমবঙ্গে সিন্ডিকেটের তোলাবাজির শিকার হতে হচ্ছে ।
আরও পড়ুন : রাজ্যে ঢুকলেই লাগে ডান্ডা ট্যাক্স ! তটস্থ ভিন রাজ্যের লরি চালকরা