জামুড়িয়া, 3 জুন : আশ্রমের দেওয়াল টপকে পালিয়ে যায় আট নাবালক । তাদের মধ্যে পাঁচ জনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে । ওই পাঁচ নাবালকের অভিযোগ, তাদের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত আশ্রমের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক ও ম্যানেজার । সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই গতকাল তারা পালিয়ে যায় । জামুড়িয়া থানার অন্তর্গত সাতগ্রামের আনন্দ আশ্রম চ্যারিটেবল ট্রাস্ট আবাসিকের ঘটনা । ঘটনায় পাঁচ জন নাবালককে উদ্ধার করা গেলেও এখনও তিন জন নিখোঁজ ।
চাইল্ড লাইন থেকে মোট 11 জন নাবালকে আনা হয়েছিল আনন্দ আশ্রম চ্যারিটেবল ট্রাস্টে । এরমধ্যে গতকাল আট জন নাবালক আশ্রমের দেওয়াল টপকে পালিয়ে যায় । আনন্দ আশ্রম চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সদস্য ও পুলিশ যৌথভাবে গতকালই গভীর রাতে দুর্গাপুর থেকে তিন জনকে ও আসানসোলের চিত্তরঞ্জন থেকে দুই জনকে উদ্ধার করে । বাকি তিন জন নাবালকের নামে জামুড়িয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে ।
ঘটনার বিষয়ে পালিয়ে যাওয়া পাঁচ জন নাবালক ETV ভারতের প্রতিনিধিকে বলে, "আশ্রমের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক ও ম্যানেজার দীর্ঘদিন ধরে আমাদের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত । আমাদের দিয়ে আশ্রমের ক্যাম্পাসের ভেতরের বিভিন্ন কাজ করাত । সারাদিনে একবার খেতে দিত । বদমাইশি করলে ক্রিকেটের উইকেট দিয়ে মারত । তাই এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আমরা পালিয়ে যাই । " তারা আরও বলে, "আমাদের খুঁজে নিয়ে আসার পর একটি ঘরে তালাবন্দী করে রাখে । কিছু খেতে দেয়নি । এমন কী জলও দেয়নি ।"
ঘটনার বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাটুল রজ্জাক বলেন, "আনন্দ আশ্রম আবাসিক থেকে নাবালক পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি । আমি নিজে পুলিশকে ঘটনার তদন্ত করার জন্য জানিয়েছি ।"
আনন্দ আশ্রম চ্যারিটেবল ট্রাস্টের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আশ্রম থেকে নাবালক পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা স্বীকার করেন । কিন্তু নাবালকদের উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের বিষয়ে কিছু বলতে চাননি ।
বর্ধমান জেলার সমাজ কল্যাণ উন্নয়নের আধিকারিক পরিমল দাস জানান, ইতিমধ্যেই আমার কাছে ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ এসেছে । বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছি । পাশাপাশি তালা বন্দি নাবালকদের উদ্ধার করে খাবারের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছি ।