শান্তিপুর (নদিয়া), 4 মে: সময় হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের । বিগত পাঁচ বছরে মানুষ আদৌ কতটা পরিষেবা পেল, সে নিয়েই প্রতিক্রিয়া নেওয়া হয়েছিল এলাকার মানুষের । আর তাতেই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেয় তারা ৷ বেলঘড়িয়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাপাতলা এলাকায় রয়েছে আদিবাসী গ্রাম । করুণ চিত্র দেখা গেল ওই গ্রামে । হাতে গোনা কয়েকজন আবাস যোজনার ঘর পেলেও অধিকাংশ মানুষ এখনও ভাঙা ঘরে বসবাস করেন ।
ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে আতঙ্কে দিন কাটে তাদের । বৃষ্টি হলেই ঘরের মধ্যে জল পড়ে । দিন-আনা দিন-খাওয়া সংসারে জলটুকু কিনে খেতে হয় । কারণ এলাকায় টাইম কল বসানো হলেও সেটা দিয়ে জল পড়ে না । পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে পরিষেবা পাননি বলে সেখানকার বাসিন্দাদের হাজারো অভিযোগ ৷ অন্যদিকে পঞ্চায়েতের পরিষেবা নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপি ৷ যদিও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, বাড়ি থেকে কল সবই মিলেছে গ্রামবাসীদের ৷
ওই এলাকার বাসিন্দা শিবানী রায় বলেন, "ভোট আসলেই পঞ্চায়েত সদস্যদের দেখা পাওয়া যায় । ভাঙ্গা ঘরে আমাদের দিন কাটাতে হয় । ঝড়-বৃষ্টিতে চরম আতঙ্কের মধ্যে থাকি । খাবার জল টুকু আমাদের নেই । পঞ্চায়েতে তরফে কলের লাইন দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু বছর পেরিয়ে যায় তাতে জল আসে না ।" আরেক বাসিন্দা সুদাময় রায়ের দাবি, বয়স্ক ভাতা পেলেও অন্যান্য কোনও পরিষেবা তাঁরা পাননি । পঞ্চায়েত সদস্য কখনও খোঁজ নিতে আসেন না । তীব্র পানীয় জল কষ্টে ভুগছেন তাঁরা । জলের লাইন বসানো হয়েছে ৷ কিন্তু জল আসে না ৷ সেই কারণে নিম্নমানের জল খেয়ে দিন কাটাতে হয় তাদের ।
আরও পড়ুন: মালদার গাঁয়ে তীব্র জল সংকট, শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন গ্রামের বউরা
ওই এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা রথীন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর দাবি, আগে জল স্বাস্থ্য এবং কর্মের ব্যবস্থা করা উচিত । তিনি জানান, দু'চারটে রাস্তা হয়েছে ৷ তবে পঞ্চায়েত এলাকার রাস্তার বেহাল দশা হয়ে পড়ে রয়েছে । স্বাস্থ্য বজায় রাখতে হলে আগে বিশুদ্ধ পানীয় জল প্রয়োজন । অবিলম্বে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে পানীয় জলের পরিষেবা সকলের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছানো উচিত । এ বিষয়ে বিজেপি নেতা সুফল সরকার বলেন, "মানুষের অনেক চাওয়া পাওয়া আছে । ঠিকমতো মানুষ পরিষেবা পায় না । 100 দিনের কাজ থেকে শুরু করে বয়স্ক ভাতা কোনও কিছুই মানুষ সঠিকভাবে পায় না । পঞ্চায়েতের দায়িত্বে এলে মানুষের সঙ্গে নিয়ে কাজ করব ।"
যদিও নিজেদের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেছেন বেলঘড়ি এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপক মণ্ডল । তিনি বলেন, "পাঁচ বছরে সব দিক থেকেই যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে ।" জলের সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, "একটি ট্যাংকিতে যে পরিমাণে জলের লাইন থাকার কথা তার থেকে বেশি হওয়ার কারণে পরিষেবা দিতে একটু সমস্যা হচ্ছে । তবে যারা কাজ করছে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে ৷ অবিলম্বে নতুন একটি ট্যাংকি করে জল সরবরাহ করা হবে । রাস্তা থেকে শুরু করে বয়স্ক ভাতা এবং 100 দিনের কাজ যতটা পেরেছি মানুষের জন্য করেছি । পঞ্চায়েতে যে পরিমাণে অর্থ পাওয়া যায় সেখানে কিছুটা সমস্যা হয় বড় উন্নয়ন করতে ।"
আরও পড়ুন: চাকরির দাবিতে সরকারি পাম্পে তালা, তীব্র পানীয় জলের সংকটে গ্রামবাসীরা