নদিয়া, 23 এপ্রিল : ছেলে সরকারি কলেজের অধ্যাপক ৷ বাবার নামে আগেই চালু ছিল সরকারি প্রকল্পের বার্ধক্য ভাতা (Old Age Allowance ) । এর সঙ্গে 59 বছরেই মায়ের নামেও শুরু বার্ধক্য ভাতা । স্বভাবতই তৃণমূল সরকারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । ঘটনাটি শান্তিপুর পৌরসভার 21 নং ওয়ার্ডের ডক্টর বিসি রায় রোডের ৷
সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিপুর পৌরসভার বাসিন্দা মাধাই ঘোষ নিজে বার্ধক্য ভাতার উপভোক্তা ৷ স্ত্রী আভা ঘোষ বার্ধক্য ভাতার তালিকাভুক্ত হয়েছেন কয়েক বছর আগে । সরকারি নিয়ম অনুযায়ী 60 বছর অতিক্রান্ত হলে তবেই বার্ধক্য ভাতা মেলে ৷ এক্ষেত্রে পারিবারিক আয়ের ঊর্ধ্বসীমা, বাড়ির ভ্যালুয়েশন, পরিবারে কেউ সরকারি চাকরি করেন না, এই সব দিক খতিয়ে দেখা হয় ।
সুবিশাল অট্টালিকায় একই পরিবারে বসবাসকারী একমাত্র ছেলে সুমিত ঘোষ মুর্শিদাবাদ বেলডাঙা কলেজের অধ্যাপক ৷ সুমিতবাবুর বোনের অন্যত্র বিবাহ হলেও তিনি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা । ঘটনা জানাজানি হতে এলাকার দরিদ্র প্রবীণেরা ঘোষ পরিবারের দিকে আঙুল তুলেছেন ৷ তাঁরা বলেন, "ওই পরিবারের এক ভাইপো শান্তিপুর পৌরসভার কর্মচারী ৷ হয়তো সে কারণেই সঠিক অনুসন্ধান হয়নি । 59 বছরেই বার্ধক্য ভাতার উপভোক্তা হয়ে প্রতিমাসে নিয়মমতো ভাতা পাচ্ছেন অধ্যাপকের পিতা-মাতা দু'জনেই ।" বহু যোগ্য প্রবীণের অভিযোগ, তাঁদের বয়স ষাটের বেশি হওয়ার পরেও দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে আবেদন জমা পড়ে রয়েছে শান্তিপুর পৌরসভায় ।
শান্তিপুর পৌরসভা স্বচ্ছতা বজায় রাখতে গৃহ আবাস প্রকল্পের কাগজপত্র শিবির করে সরাসরি জমা নিচ্ছেন ৷ বিভিন্ন ভাতা প্রাপকরা বেঁচে আছেন কি না, অথবা তাঁরা প্রকৃতপক্ষে ভাতা পাওয়ার উপযুক্ত কি না, এই সব বিষয় খতিয়ে দেখতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান । তখনই বেনিয়ম নজরে আসে ৷
আরও পড়ুন : 3 শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের
তবে এ ব্যাপারে শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারপার্সন সুব্রত ঘোষ জানিয়েছেন, পৌর কর্মীদের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শুভজিৎ দে বলেন, "বৃদ্ধের বার্ধক্য ভাতা কথা জানলেও তাঁর স্ত্রীর ভাতা সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি ।" তিনি অধ্যাপক সুমিত ঘোষের বাড়িতে বিষয়টি জানতে গিয়েছিলেন ৷ সেখানে আলোচনার মাঝেই বাবা ভাতা প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করেন । অধ্যাপক সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি, এমনকি ছবি তুলতেও পর্যন্ত বাধা দিয়েছেন ।