শান্তিপুর, 7 সেপ্টেম্বর : ঝুড়ি তৈরির কারিগররা পড়েছেন ভীষণ ফাঁপড়ে ৷ নেপথ্যে লকডাউন ৷ আটকে গিয়েছে জীবিকা ৷ থমকে যেতে বসেছে প্রাত্যহিক জীবন ৷ আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে একাধিক পরিবার ।
কোভিড পরিস্থিতি আর লকডাউন শ্রমজীবী মানুষের জীবিকার উপর আঘাত হেনেছে সব থেকে বেশি । বিগত প্রায় দু'বছর ধরে চলছে কোভিড পরিস্থিতি ৷ সরকার নির্দেশিত লকডাউন বা কড়া বিধি-নিষেধে দমবন্ধ হচ্ছে সাধারণ শ্রমজীবীদের ৷ একই অবস্থা নদিয়া জেলার শান্তিপুরের গোবিন্দপুর গ্রামেরও ৷ সেখানে বেশ কয়েকটি পরিবার শুধু বাঁশের ঝুড়ি তৈরি করেই জীবিকা নির্বাহ করে ৷ লকডাউনে উপার্জন প্রায় নেই বললেই চলে ৷
শান্তিপুর ব্লকের বাবলা অঞ্চলের গোবিন্দপুরের এই ঝুড়ি তৈরির কারিগররা চাঁছাড়ি দিয়ে বিভিন্ন রকমের ঝুড়ি বানান । এই ঝুড়ির একটা বড় অংশ ব্যবহৃত হয় আমের সিজিনে আম বাগানে । তাছাড়া হাঁস-মুরগি রাখার ঝুড়িও বানান তাঁরা ৷ এমনিতেই কুটিরশিল্পের অবস্থা কোনওদিনই ভাল ছিল না ৷ কষ্টেসৃষ্টেই জীবনযাপন করতে হত তাঁদের ৷ লকডাউনের মধ্যে তা তলানিতে পৌঁছেছে ৷
গোবিন্দপুর গ্রামের গণেশ দাস, অনিতা দাস, সুনীল দাস জন্মাবধি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত । তাঁদের বাপ-ঠাকুর্দাও এই একই কাজ করতেন । তাঁদের কথায়, "এতবছর এই কাজ করছি ৷ এমনিতে কষ্ট করেই দিন কেটেছে ৷ তবে এইরকম আর্থিক সঙ্কটে কখনও দিন কাটেনি । যে ঝুড়ি দু'বছর আগে 50-60 টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা আজ 40 টাকাতেও নিতে চাইছে না মহাজন । বিক্রি নেই ৷ তাই মহাজন দাম দিতে চাইছেন না ৷ যে দাম দিচ্ছে তাতে বাঁশের দামও উঠছে না ৷ মজুরির তো প্রশ্নই নেই ।"
আপাতত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্য আর রেশনের চাল দিয়ে কোনও রকমে দিন চলে যাচ্ছে ৷ কিন্তু অভাবে আর ক'দিন ? তাই তাঁরা সরকারি সাহায্যের আশা করছেন ৷ যদিও শান্তিপুরের অধিকাংশ মানুষ তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত, তবে ব্লকে আরও অনেক ছোটখাটো শিল্প ছড়িয়ে রয়েছে ৷ এগুলির সঙ্গে যুক্তরা গোবিন্দপুরের ঝুড়ি তৈরির কারিগরদের মতোই সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন ৷
আরও পড়ুন : Ganga Erosion at Santipur : শান্তিপুরে গঙ্গায় ভাঙন, প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ