ETV Bharat / state

Mother-Son Duo in HS Exam: একসঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক দেবেন মা-ছেলে, সংসার সামলে পড়ায় মগ্ন লতিকা - শান্তিপুরের বছর আটত্রিশের গৃহবধূ

ছোটবেলায় আর্থিক অনটন ও মা'র শারীরিক অসুস্থতার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও তারপরে আর তা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি লতিকা মণ্ডল ৷ বিয়ের প্রায় বছর কুড়ি পর ছেলের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (Higher Secondary Exam) দিতে চলেছেন শান্তিপুরের বছর আটত্রিশের এই গৃহবধূ ৷ তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

Mother and Son Duo in HS Exam
মা ও ছেলে একসঙ্গে দিতে চলেছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা
author img

By

Published : Mar 12, 2023, 8:11 PM IST

মা ও ছেলে একসঙ্গে বসছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়

শান্তিপুর, 12 মার্চ: ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়! আরও একবার এই শব্দটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন এক বাঙালি গৃহবধূ। সংসারের শত বাধা পেরিয়ে নিজের ছেলের সঙ্গেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলেছেন বছর আটত্রিশের লতিকা মণ্ডল (Mother Appears for Higher Secondary Exam Along with Son)। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

নদিয়ার শান্তিপুর থানার নৃর্সিংহপুর সর্দারপাড়ার বাসিন্দা লতিকা মণ্ডল। প্রায় 19 বছর আগে বিয়ে হয় লতিকা মণ্ডলের। লতিকার বাপের বাড়ি নদিয়া জেলার ধুবুলিয়া থানা এলাকায়। বিয়ের আগে থেকেই পড়াশোনার প্রতি তীব্র আগ্রহ ছিল ওই তাঁর। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় উপায় হয়ে ওঠে না নানা কারণে। ঠিক সেই রকমই একদিকে আর্থিক অনটন অন্যদিকে মা'র শারীরিক অসুস্থতার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও তারপরে আর তা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। এরপর আর্থিক অনটনের কথা মাথায় রেখেই লতিকা মণ্ডলকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাঁর পরিবার।

ঠিক সেই মতো শান্তিপুরের সর্দারপাড়ায় এক যুবকের সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর স্বামী কাজের সুবাদে ভিন রাজ্যে থাকেন। বর্তমানে লতিকার দুই সন্তান রয়েছে। একটি পুত্র সন্তান এবং একটি কন্যা সন্তান। তাঁর মেয়ে রানি মণ্ডল শান্তিপুর কলেজের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আর ছেলে সৌরভ মণ্ডল বর্তমানে পূর্ব বর্ধমান জেলার অম্বিকা কালনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। এবার সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে। মেয়েকে পড়াতেন তিনিই ৷ তখন নতুন করে পড়াশোনার আগ্রহ জাগে তাঁর। পুরনো ইচ্ছা জেগে উঠতে শুরু করে গৃহবধূর।

আরও পড়ুন: মা ও মেয়ে একসঙ্গে দিচ্ছেন স্নাতকের পরীক্ষা

এক আত্মীয়র উদ্যোগে নতুন করে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন লতিকা ৷ এরপরেই শান্তিপুর মিউনিসিপাল স্কুলে ভরতি হন ৷ 2019-2020 বর্ষে মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। মিউনিসিপাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করে নৃসিংহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভরতি হন। এবছর ছেলের সৌরভ মণ্ডলের সঙ্গে পরীক্ষায় বসতে চলেছেন মা লতিকা ৷ শুধু পরীক্ষাতে বসছেন তা নয়, প্রতিদিন সংসারের কাজ সামলে নিয়ম করে ছেলের সঙ্গে পড়তে বসেন লতিকা। তবে গৃহবধূর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

লতিকা মণ্ডল বলেন, "ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল আমার। পরিবারের পরিস্থিতি এবং আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না তাই ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা পর আর সুযোগ হয়নি। মনের ভিতর ইচ্ছা জেগেছিল যেভাবেই হোক পড়াশোনা চালিয়ে যাব। তাই বিয়ের পরে সেই ইচ্ছা সফল করতে পুনরায় সিদ্ধান্ত নিই পড়াশোনা করার। শুধুমাত্র চাকরি পাওয়ার জন্য পড়াশোনা করা নয়, শিক্ষালাভের জন্য পড়াশোনা করা অনেক জরুরি ৷"
অন্যদিকে, ছেলে সৌরভ মণ্ডল এবিষয়ে অনেকটাই খুশি। সে জানিয়েছে নিয়ম করে তাঁর মায়ের সঙ্গে সে একসঙ্গে পড়তে বসে। আগামিদিনে দু'জনেই ভালো রেজাল্ট করবে বলে আশাবাদী ছেলে ৷

আরও পড়ুন: এমএ পাশ মেয়ের পরামর্শে ছেলের সঙ্গে মাধ্যমিকে বসলেন মা

মা ও ছেলে একসঙ্গে বসছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়

শান্তিপুর, 12 মার্চ: ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়! আরও একবার এই শব্দটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন এক বাঙালি গৃহবধূ। সংসারের শত বাধা পেরিয়ে নিজের ছেলের সঙ্গেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলেছেন বছর আটত্রিশের লতিকা মণ্ডল (Mother Appears for Higher Secondary Exam Along with Son)। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

নদিয়ার শান্তিপুর থানার নৃর্সিংহপুর সর্দারপাড়ার বাসিন্দা লতিকা মণ্ডল। প্রায় 19 বছর আগে বিয়ে হয় লতিকা মণ্ডলের। লতিকার বাপের বাড়ি নদিয়া জেলার ধুবুলিয়া থানা এলাকায়। বিয়ের আগে থেকেই পড়াশোনার প্রতি তীব্র আগ্রহ ছিল ওই তাঁর। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় উপায় হয়ে ওঠে না নানা কারণে। ঠিক সেই রকমই একদিকে আর্থিক অনটন অন্যদিকে মা'র শারীরিক অসুস্থতার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও তারপরে আর তা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। এরপর আর্থিক অনটনের কথা মাথায় রেখেই লতিকা মণ্ডলকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাঁর পরিবার।

ঠিক সেই মতো শান্তিপুরের সর্দারপাড়ায় এক যুবকের সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর স্বামী কাজের সুবাদে ভিন রাজ্যে থাকেন। বর্তমানে লতিকার দুই সন্তান রয়েছে। একটি পুত্র সন্তান এবং একটি কন্যা সন্তান। তাঁর মেয়ে রানি মণ্ডল শান্তিপুর কলেজের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আর ছেলে সৌরভ মণ্ডল বর্তমানে পূর্ব বর্ধমান জেলার অম্বিকা কালনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। এবার সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে। মেয়েকে পড়াতেন তিনিই ৷ তখন নতুন করে পড়াশোনার আগ্রহ জাগে তাঁর। পুরনো ইচ্ছা জেগে উঠতে শুরু করে গৃহবধূর।

আরও পড়ুন: মা ও মেয়ে একসঙ্গে দিচ্ছেন স্নাতকের পরীক্ষা

এক আত্মীয়র উদ্যোগে নতুন করে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন লতিকা ৷ এরপরেই শান্তিপুর মিউনিসিপাল স্কুলে ভরতি হন ৷ 2019-2020 বর্ষে মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। মিউনিসিপাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করে নৃসিংহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভরতি হন। এবছর ছেলের সৌরভ মণ্ডলের সঙ্গে পরীক্ষায় বসতে চলেছেন মা লতিকা ৷ শুধু পরীক্ষাতে বসছেন তা নয়, প্রতিদিন সংসারের কাজ সামলে নিয়ম করে ছেলের সঙ্গে পড়তে বসেন লতিকা। তবে গৃহবধূর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

লতিকা মণ্ডল বলেন, "ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল আমার। পরিবারের পরিস্থিতি এবং আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না তাই ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা পর আর সুযোগ হয়নি। মনের ভিতর ইচ্ছা জেগেছিল যেভাবেই হোক পড়াশোনা চালিয়ে যাব। তাই বিয়ের পরে সেই ইচ্ছা সফল করতে পুনরায় সিদ্ধান্ত নিই পড়াশোনা করার। শুধুমাত্র চাকরি পাওয়ার জন্য পড়াশোনা করা নয়, শিক্ষালাভের জন্য পড়াশোনা করা অনেক জরুরি ৷"
অন্যদিকে, ছেলে সৌরভ মণ্ডল এবিষয়ে অনেকটাই খুশি। সে জানিয়েছে নিয়ম করে তাঁর মায়ের সঙ্গে সে একসঙ্গে পড়তে বসে। আগামিদিনে দু'জনেই ভালো রেজাল্ট করবে বলে আশাবাদী ছেলে ৷

আরও পড়ুন: এমএ পাশ মেয়ের পরামর্শে ছেলের সঙ্গে মাধ্যমিকে বসলেন মা

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.