নদিয়া, 2 জুন : প্রথমে মাটি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে কাঠামো । তারপর রঙের মাধ্যমে সেই কাঠামোকে রূপ দান করছেন মৃৎশিল্পীরা । তৈরি হচ্ছে হরেক রকমের রং-বেরঙের মাটির পুতুল ও মূর্তি । সেই পুতুল ও মূর্তি কিনতেই ভিড় জমায় পর্যটকরা । এটাই কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির চিরাচরিত ছবি । কিন্তু কোরোনা মৃৎশিল্পী থেকে শুরু করে পুতুল ব্যবসায়ীদের সমস্ত রং কেড়ে নিয়েছে । যার জেরে দোকানে সারি করে পড়েই রয়েছে নিখুঁত হাতের সেই সব কারিগরি ।
দেশজুড়ে নাম রয়েছে কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির মাটির পুতুল ও মূর্তির । এই এলাকার প্রায় বেশিরভাগই তাই মৃৎশিল্পীর কাজে যুক্ত । তাঁদের হাতের দক্ষতায় অনায়াসে হরেকরকমের পুতুলের রূপ পায় মাটি । তাই কৃষ্ণনগর এলে ঘূর্ণিতেও ভিড় জমান পর্যটকরা । স্মৃতি হিসেবে কিনে নিয়ে যান পছন্দের পুতুলটি । কিন্তু কোরোনা এক তুড়িতে বদলে দিয়েছে সবকিছু ।
কোরোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে । বিরত থাকতে বলা হয়েছে সবরকমের জমায়েত থেকে । তাই এখন আর আসেন না কোনও পর্যটক । ফলে বিক্রিও নেই মাটির পুতুলের । দোকানেই পড়ে রয়েছে সেগুলি । যার জেরে মৃৎশিল্পী থেকে দোকানদার সকলেই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন ।
বর্তমানে লকডাউনের নিয়ম খানিকটা শিথিল হয়েছে ঠিকই । কিন্তু তাতেও ভরসা পাচ্ছেন না তাঁরা । রয়েছেন চরম অনিশ্চয়তায় । কারণ লকডাউন শিথিল হলেও পরিবহন ব্যবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে এখনও বেশ খানিকটা সময় লাগবে । সংক্রমণের আশঙ্কায় পর্যটকরাও যে আসতে শুরু করবে তাও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না । তার উপর দু'মাসের উপর কাজ বন্ধ থাকায় ব্যবসায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করতেও হিমসিম খাচ্ছেন তাঁরা । এককথায় এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো বিপর্যস্ত কৃষ্ণনগরের পুতুল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষ ।
এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে তাই সরকারের সাহায্য চাইছেন মৃৎশিল্পী ও দোকানদাররা । তাঁদের আবেদন, রাজ্য সরকার সব ক্ষেত্রে যেমন নজর রাখছেন, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সেভাবেই যেন তাঁদেরকেও সাহায্য করা হয় ।