ETV Bharat / state

Malda Boro Rice Cultivation : গ্রীষ্মের বৃষ্টিতে কয়েক হাজার বিঘার পাকা বোরোধান জলের নীচে, মাথায় হাত চাষিদের - Untimely rain affects Boro Rice cultivation in Old Malda

গ্রীষ্মের দাবদাহ মিটেছে ঠিকই কিন্তু ভারী বৃষ্টিতে মালদার চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে (paddy farmers affected due to rain) ৷ কালনা বিলের জলস্তর বেড়ে গিয়েছে ৷ জলে ডুবে থাকায় ধানগাছ পচতে শুরু করেছে। যতটা সম্ভব ধান তুলে আনছেন জল থেকে। ভিজে ধানই মেশিনে ঝাড়াই করছেন। প্রকৃতির রোষে বিপর্যয়ে পড়ে চাষিরা সরকারি সহায়তার আর্জি জানাচ্ছেন।

Paddy Cultivation
মালদায় বোরোধান জলের নীচে
author img

By

Published : May 19, 2022, 2:06 PM IST

মালদা, 19 মে : গ্রীষ্মের বৃষ্টিতে কপাল পুড়েছে পুরাতন মালদার কয়েকশো বোরো চাষির (Untimely rain affects Boro Rice cultivation in Old Malda) । বৃষ্টির জল আশেপাশের এলাকা থেকে মিশেছে বিলের জলে। ফলে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে বিলের। অন্যদিকে প্রতি বছর বিলের জল শুকোলে সেখানকার উর্বর জমিতে বোরো ধান চাষ করেন স্থানীয় চাষিরা। ফলন হয় খুব ভাল। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ধান পেকেও গিয়েছিল। কিন্তু সেই ধান কেটে ঘরে তোলার আগেই ডুবে গিয়েছে জলে।

সোমবার থেকে ডুবে থাকায় ধানগাছ পচতে শুরু করেছে। শিস থেকেই ধানের চারা গজিয়ে যাচ্ছে। পরিশ্রমে লাভ হবে না বুঝে সেই ধান কাটতে চাইছেন না শ্রমিকরাও। এই পরিস্থিতিতে চাষিরাই নেমে পড়েছেন জলে। যতটা সম্ভব ধান তুলে আনছেন জল থেকে। ভিজে ধানই মেশিনে ঝাড়াই করছেন। প্রকৃতির রোষে বিপর্যয়ে পড়ে তাঁরা সরকারি সহায়তার আর্জি জানাচ্ছেন।

এহেন পরিস্থিতি পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। এই পঞ্চায়েতে রয়েছে একটি বিশাল বিল। স্থানীয়দের কেউ সেটিকে যাত্রাডাঙা বিল অথবা কালনা বিল বলে থাকেন। কয়েক হাজার বিঘার এই বিল শুকিয়ে গেলেই সেই মাটিতে বোরো চাষ শুরু করে দেন চাষিরা। যাত্রাডাঙা, মেহেরপুর, পোপড়া, গোয়ালটুলি, হালনা প্রভৃতি গ্রামের চাষিরা এই বিলে বোরোধান চাষ করে গোটা বছরের অন্নসংস্থান করেন। কিন্তু এবার বৈশাখের বৃষ্টি তাঁদের একেবারে পথে বসিয়ে দিয়েছে।

ভারী বৃষ্টিতে পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙায় নষ্ট হচ্ছে প্রায় বারোশো বিঘা জমির ধান

আরও পড়ুন : রাস্তা সংস্কারের আবেদন শুনেই তেড়ে গালি রতুয়ার বিধায়কের; ক্ষমা চাইতে হবে, দাবি গ্রামবাসীদের

বিলের জমিতে ডুবে যাওয়া ধান তুলছিলেন মেহেরপুরের বোরোচাষি ইমান আলি। তিনি জানালেন, "হঠাৎ করেই বিলের জল বেড়ে গিয়েছে। আমরা আগে থেকে কেউ তা বুঝতে পারিনি। এখন বিলের হাজার হাজার বিঘা জমির ধান জলের তলায়। আমাদের এলাকায় অন্তত দু'হাজার বিঘা জমির বোরোধান নষ্ট হয়েছে। নিজে 15 বিঘা জমিতে বোরোচাষ করেছিলাম। সব জলের নীচে। ধান কাটার শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। লাভ হবে না জেনে কেউ কাজ করতে চাইছে না। যেটুকু পারছি, নিজেরাই কাটছি। তবে যে ধান জলের উপর দেখা যাচ্ছে, সেটাই কাটা যাচ্ছে। যেটা সম্পূর্ণ জলের নীচে, সেটা কাটা যাচ্ছে না। বিলের জল বেড়ে যাওয়ায় আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেলাম। সরকারি সহায়তা ছাড়া বাঁচব না। তার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি।"

যাত্রাডাঙা গ্রামের আরেক চাষি মহম্মদ আসরাফি শেখ বলেন, "হঠাৎ বৃষ্টিতে বিলের জল অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। ধান পেকে গেলেও আমরা সেটা কাটতে পারিনি। ঠিকমতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু বিলের জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় পাকা ধান এখন জলের তলায়। ডুবে থাকা ধানের গাছ পচে যাচ্ছে। শিস থেকেই ধানের চারা বেরিয়ে যাচ্ছে। বিলের এপারে থাকা প্রায় 1300 বিঘা জমির ধান এখন জলের নীচে। নিজের জমির সম্পূর্ণ ধান এখনও তুলতে পারিনি। সেটা আর তোলাও যাবে না।"

আরও পড়ুন : মালদা মেডিক্যালে 3টি নতুন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স চালুর উদ্যোগ

যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নুর হক বলেন, "আমি নিজে গোটা এলাকা পরিদর্শন করেছি। অবস্থা সত্যিই ভয়াবহ। গোটা বিলের ধানচাষ জলের নীচে চলে গিয়েছে। সামান্য যেটুকু ধান এখন জলের উপর দেখা যাচ্ছে সেটাই কেটে তুলছেন চাষিরা। ধান কাটার শ্রমিকরাও এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছে। বিলের জল হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পোপড়া থেকে রানিগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো চাষিদের সর্বনাশ হয়ে গেল। আমি বিষয়টি ব্লক কৃষি আধিকারিক, বিডিও, এমনকি দলের জেলাস্তরেও জানিয়েছি। চাষিদের যাতে সরকারি আর্থিক সহায়তা করা যায়, তার জন্য যা করণীয়, করছি।"

মালদা, 19 মে : গ্রীষ্মের বৃষ্টিতে কপাল পুড়েছে পুরাতন মালদার কয়েকশো বোরো চাষির (Untimely rain affects Boro Rice cultivation in Old Malda) । বৃষ্টির জল আশেপাশের এলাকা থেকে মিশেছে বিলের জলে। ফলে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে বিলের। অন্যদিকে প্রতি বছর বিলের জল শুকোলে সেখানকার উর্বর জমিতে বোরো ধান চাষ করেন স্থানীয় চাষিরা। ফলন হয় খুব ভাল। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ধান পেকেও গিয়েছিল। কিন্তু সেই ধান কেটে ঘরে তোলার আগেই ডুবে গিয়েছে জলে।

সোমবার থেকে ডুবে থাকায় ধানগাছ পচতে শুরু করেছে। শিস থেকেই ধানের চারা গজিয়ে যাচ্ছে। পরিশ্রমে লাভ হবে না বুঝে সেই ধান কাটতে চাইছেন না শ্রমিকরাও। এই পরিস্থিতিতে চাষিরাই নেমে পড়েছেন জলে। যতটা সম্ভব ধান তুলে আনছেন জল থেকে। ভিজে ধানই মেশিনে ঝাড়াই করছেন। প্রকৃতির রোষে বিপর্যয়ে পড়ে তাঁরা সরকারি সহায়তার আর্জি জানাচ্ছেন।

এহেন পরিস্থিতি পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। এই পঞ্চায়েতে রয়েছে একটি বিশাল বিল। স্থানীয়দের কেউ সেটিকে যাত্রাডাঙা বিল অথবা কালনা বিল বলে থাকেন। কয়েক হাজার বিঘার এই বিল শুকিয়ে গেলেই সেই মাটিতে বোরো চাষ শুরু করে দেন চাষিরা। যাত্রাডাঙা, মেহেরপুর, পোপড়া, গোয়ালটুলি, হালনা প্রভৃতি গ্রামের চাষিরা এই বিলে বোরোধান চাষ করে গোটা বছরের অন্নসংস্থান করেন। কিন্তু এবার বৈশাখের বৃষ্টি তাঁদের একেবারে পথে বসিয়ে দিয়েছে।

ভারী বৃষ্টিতে পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙায় নষ্ট হচ্ছে প্রায় বারোশো বিঘা জমির ধান

আরও পড়ুন : রাস্তা সংস্কারের আবেদন শুনেই তেড়ে গালি রতুয়ার বিধায়কের; ক্ষমা চাইতে হবে, দাবি গ্রামবাসীদের

বিলের জমিতে ডুবে যাওয়া ধান তুলছিলেন মেহেরপুরের বোরোচাষি ইমান আলি। তিনি জানালেন, "হঠাৎ করেই বিলের জল বেড়ে গিয়েছে। আমরা আগে থেকে কেউ তা বুঝতে পারিনি। এখন বিলের হাজার হাজার বিঘা জমির ধান জলের তলায়। আমাদের এলাকায় অন্তত দু'হাজার বিঘা জমির বোরোধান নষ্ট হয়েছে। নিজে 15 বিঘা জমিতে বোরোচাষ করেছিলাম। সব জলের নীচে। ধান কাটার শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। লাভ হবে না জেনে কেউ কাজ করতে চাইছে না। যেটুকু পারছি, নিজেরাই কাটছি। তবে যে ধান জলের উপর দেখা যাচ্ছে, সেটাই কাটা যাচ্ছে। যেটা সম্পূর্ণ জলের নীচে, সেটা কাটা যাচ্ছে না। বিলের জল বেড়ে যাওয়ায় আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেলাম। সরকারি সহায়তা ছাড়া বাঁচব না। তার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি।"

যাত্রাডাঙা গ্রামের আরেক চাষি মহম্মদ আসরাফি শেখ বলেন, "হঠাৎ বৃষ্টিতে বিলের জল অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। ধান পেকে গেলেও আমরা সেটা কাটতে পারিনি। ঠিকমতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু বিলের জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় পাকা ধান এখন জলের তলায়। ডুবে থাকা ধানের গাছ পচে যাচ্ছে। শিস থেকেই ধানের চারা বেরিয়ে যাচ্ছে। বিলের এপারে থাকা প্রায় 1300 বিঘা জমির ধান এখন জলের নীচে। নিজের জমির সম্পূর্ণ ধান এখনও তুলতে পারিনি। সেটা আর তোলাও যাবে না।"

আরও পড়ুন : মালদা মেডিক্যালে 3টি নতুন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স চালুর উদ্যোগ

যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নুর হক বলেন, "আমি নিজে গোটা এলাকা পরিদর্শন করেছি। অবস্থা সত্যিই ভয়াবহ। গোটা বিলের ধানচাষ জলের নীচে চলে গিয়েছে। সামান্য যেটুকু ধান এখন জলের উপর দেখা যাচ্ছে সেটাই কেটে তুলছেন চাষিরা। ধান কাটার শ্রমিকরাও এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছে। বিলের জল হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পোপড়া থেকে রানিগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো চাষিদের সর্বনাশ হয়ে গেল। আমি বিষয়টি ব্লক কৃষি আধিকারিক, বিডিও, এমনকি দলের জেলাস্তরেও জানিয়েছি। চাষিদের যাতে সরকারি আর্থিক সহায়তা করা যায়, তার জন্য যা করণীয়, করছি।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.