মালদা, ১৭ ফেব্রুয়ারি : রেজ়াল্ট বের হওয়ার পর উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ পাবে পড়ুয়ারা। তারপরও সন্তুষ্ট না হলে উত্তরপত্র দেখতে পারবে তারা। আজ সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে একথা ঘোষণা করল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
৩ জানুয়ারি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির পার্ট ওয়ান ও পার্ট টুয়ের রেজ়াল্ট প্রকাশিত হয়। দেখা যায়, পরীক্ষায় একাধিক বিষয়ে কেউ শূন্য, কেউ বা এক-দুই করে নম্বর পেয়েছে। অনেকে ফেলও করেছে। রেজ়াল্টে একাধিক ভুলের অভিযোগ তুলে পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভের মুখে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেন উপাচার্য স্বাগত সেন। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রকাশিত রেজ়াল্ট স্থগিত করার নির্দেশ দেন উপাচার্য। বলেন, "সব ভুল শুধরে ফের রেজ়াল্ট প্রকাশ করা হবে।"
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফের রেজ়াল্ট প্রকাশ করা হয়। কিন্তু, তাতেও অসংখ্য ভুল থাকার অভিযোগ জানায় পড়ুয়ারা। তা নিয়ে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখায় পুরাতন মালদার গৌড় কলেজের পড়ুয়ারা। রেজ়াল্টের পুনর্মূল্যায়নসহ উত্তরপত্র খতিয়ে দেখার দাবি তোলা হয়। উপাচার্য না থাকায় পড়ুয়ারা ভারপ্রাপ্ত কন্ট্রোলার শ্যামাপদ মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করার জন্য দীর্ঘক্ষণ তাঁর ঘরের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ করে। চাপের মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে ফিরে গেলেও পড়ুয়ারা হুঁশিয়ারি দেয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত কোনও সিদ্ধান্ত না নিলে আগামীকাল (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে তারা লাগাতার আন্দোলন শুরু করবে। পড়ুয়াদের দাবিকে সমর্থন করে ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
শুধুমাত্র গৌড় কলেজ নয়। আগামীকাল (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে এই ইশুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল অন্য কলেজের পড়ুয়ারাও। চাপের মুখে পড়ে আজ ছুটির দিনেও নতুন সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জেলার বাইরে থাকলেও বিবৃতি প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি। বিবৃতিতে বলা হয়, "বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) অনার্সের পার্ট ওয়ান ও পার্ট টুয়ের রেজ়াল্ট প্রকাশিত হয়। তাতে কিছু ভুল নজরে এসেছে। তারপর কন্ট্রোলার অফ এগজ়ামিনেশনের সঙ্গে আলোচনা করেন উপাচার্য। পডু়য়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত হয়, যারা নিজেদের রেজ়াল্টে সন্তুষ্ট নয় তারা উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়ন করতে পারবে। পডু়য়ারা সবকটি বিষয়েই পুনর্মূল্যায়ন করতে পারবে। সেজন্য আলাদা কোনও টাকা জমা দিতে হবে না। শুধুমাত্র কলেজের অধ্যক্ষ বা টিচার-ইন-চার্জের কাছে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। কোন কোন বিষয়ের উত্তরপত্র তারা পুনর্মূল্যায়ন করতে চাইছে তা আবেদনপত্রে লেখা থাকবে। নিজেদের রোল নম্বর লিখতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের আবেদনপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাবে। পুনর্মূল্যায়নের পরও সন্তুষ্ট না হলে পড়ুয়ারা উত্তরপত্র দেখতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পড়ুয়াদের সেই সুযোগ দেওয়া হবে। পড়ুয়ারা আগামীকাল থেকেই নিজেদের কলেজের অধ্যক্ষের কাছে আবেদনপত্র জমা দিতে পারবে। ৫ মার্চ পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে।"
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে নিজেদের নৈতিক জয় হিসেবেই দেখছে পড়ুয়ারা। তাদের আশা, এবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় ত্রুটিমুক্ত রেজ়াল্ট প্রকাশ করবে।