ETV Bharat / state

মালদায় আত্মঘাতী যুবক, তদন্তে পুলিশ

মালদার রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের ফরিদপুর গ্রামে আত্মঘাতী যুবক ৷ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে ৷

Police investigating on the suicide case of a man in malda
মালদায় আত্মঘাতী যুবক , তদন্তে পুলিশ
author img

By

Published : Jul 4, 2020, 6:30 PM IST

মালদা, 4 জুলাই : অনার কিলিং ৷ শব্দটার সঙ্গে এখন অনেকেই পরিচিত ৷ কিন্তু অনার সুইসাইড? এই শব্দের প্রচলন বোধহয় এখনও শোনা যায়নি ৷ অথচ তেমনই ঘটনা ঘটেছে মালদার রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের ফরিদপুর গ্রামে ৷ গ্রামের সালিশি সভায় বোনের জন্য কথা শুনতে হয়েছে বলে, অপমানে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক ৷ এমনটাই অভিযোগ পরিবারের ৷ খবর পেয়ে রতুয়া থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠিয়েছে ৷ তবে এনিয়ে এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷

জানা গেছে, গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিল বোন ৷ সেকথা জানাজানি হতে গ্রামে সালিশি সভাও বসে ৷ খোদ পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে সেই সভা হয় ৷ সভায় বোনের কীর্তির জন্য কথা শুনতে হয় দাদাকে ৷ মাথা হেঁট হয়ে যায় দাদার ৷ সেই অপমান সহ্য করতে পারেননি দাদা ৷ অপমানে, লজ্জায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি ৷

মৃতের নাম মোবারক হোসেন ( ২৭ ) ৷ পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী রুকবানু বিবি ও 8 মাসের ছেলে ৷ মোবারকরা চার ভাই, এক বোন ৷ মোবারক সবার বড় ৷ অবিবাহিত বোন বড় দাদার সংসারে থাকেন ৷ মোবারক ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন ৷ লকডাউনের আগে বাড়ি ফিরেছিলেন ৷ বাড়ি ফেরার পর এলাকাতেই শ্রমিকের কাজ করে অন্ন সংস্থান করতেন ৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, তাঁর বোন এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ৷ দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে বলে জানা যায় ৷ সেকথা গ্রামে জানাজানি হয়ে যায় ৷ এনিয়ে তিনদিন আগে গ্রামে সালিশি সভা বসে ৷ সভায় উপস্থিত ছিল গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যরা ৷ সভায় দু’পক্ষকেই আর্থিক জরিমানা করা হয় ৷ বোনের রাশ ধরে রাখতে না পারায় মোবারককে প্রচণ্ড তিরষ্কারও করা হয় ৷ তারপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন মোবারক ৷ শেষ পর্যন্ত গতকাল নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি ৷ এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসে পুলিশ ৷ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ৷

গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউল হক বলেন, " মোবারকের বোনের সঙ্গে সামনের বাড়ির একটি ছেলের ওঠাবসা হয়েছিল ৷ এনিয়ে সমাজের লোক তিনদিন আগে দু’পক্ষকে নিয়ে বিচারে বসে ৷ বিচারে দুই পক্ষকেই জরিমানা করা হয় ৷ গোটা ঘটনা সহ্য করতে পারেনি মোবারক ৷ শেষ পর্যন্ত শোওয়ার ঘর থেকে আজ তার মৃতদেহ উদ্ধার হয় ৷ কিছুদিন আগেই ভিনরাজ্য থেকে ঘরে ফিরেছিল মোবারক ৷ বোনের কাজকর্ম নিয়ে ওর মাথায় টেনশন ছিল ৷ ওর বক্তব্য ছিল, যেহেতু ওর বোনকে ছেলেটি ভালোবেসেছে, তাই বোন ওই ছেলের সঙ্গেই ঘর করবে ৷ কিন্তু বিচারসভায় তার কথা কেউ গ্রাহ্য করেনি ৷ এরপরেই সে ভাবতে শুরু করে, এই পরিস্থিতিতে সে মুখ দেখাবে কেমন করে ৷ সেই ভাবনা থেকেই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ৷ "

এবিষয়ে গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, " মোবারকের বোনের ভালোবাসা নিয়ে তিনদিন আগে সমাজে বিচার হয়েছিল ৷ বিচারে সমাজের মাতব্বররাও ছিলেন ৷ সভায় দুই পক্ষকে জরিমানা করা হয় ৷ তারপরেই মোবারক ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ৷ কী কারণে সে এই সিদ্ধান্ত নিল, তা জানা নেই ৷ তবে সভায় তাকে এমন কিছু বলা হয়নি ৷ " রতুয়া থানার OC কুণালকান্তি দাস জানান, " এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি ৷ পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে মালদা মেডিকেলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ৷ তার রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্টভাবে জানা যাবে ৷ এই ঘটনায় আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে ৷ "

মালদা, 4 জুলাই : অনার কিলিং ৷ শব্দটার সঙ্গে এখন অনেকেই পরিচিত ৷ কিন্তু অনার সুইসাইড? এই শব্দের প্রচলন বোধহয় এখনও শোনা যায়নি ৷ অথচ তেমনই ঘটনা ঘটেছে মালদার রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের ফরিদপুর গ্রামে ৷ গ্রামের সালিশি সভায় বোনের জন্য কথা শুনতে হয়েছে বলে, অপমানে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক ৷ এমনটাই অভিযোগ পরিবারের ৷ খবর পেয়ে রতুয়া থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠিয়েছে ৷ তবে এনিয়ে এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷

জানা গেছে, গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিল বোন ৷ সেকথা জানাজানি হতে গ্রামে সালিশি সভাও বসে ৷ খোদ পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে সেই সভা হয় ৷ সভায় বোনের কীর্তির জন্য কথা শুনতে হয় দাদাকে ৷ মাথা হেঁট হয়ে যায় দাদার ৷ সেই অপমান সহ্য করতে পারেননি দাদা ৷ অপমানে, লজ্জায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি ৷

মৃতের নাম মোবারক হোসেন ( ২৭ ) ৷ পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী রুকবানু বিবি ও 8 মাসের ছেলে ৷ মোবারকরা চার ভাই, এক বোন ৷ মোবারক সবার বড় ৷ অবিবাহিত বোন বড় দাদার সংসারে থাকেন ৷ মোবারক ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন ৷ লকডাউনের আগে বাড়ি ফিরেছিলেন ৷ বাড়ি ফেরার পর এলাকাতেই শ্রমিকের কাজ করে অন্ন সংস্থান করতেন ৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, তাঁর বোন এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ৷ দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে বলে জানা যায় ৷ সেকথা গ্রামে জানাজানি হয়ে যায় ৷ এনিয়ে তিনদিন আগে গ্রামে সালিশি সভা বসে ৷ সভায় উপস্থিত ছিল গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যরা ৷ সভায় দু’পক্ষকেই আর্থিক জরিমানা করা হয় ৷ বোনের রাশ ধরে রাখতে না পারায় মোবারককে প্রচণ্ড তিরষ্কারও করা হয় ৷ তারপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন মোবারক ৷ শেষ পর্যন্ত গতকাল নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি ৷ এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসে পুলিশ ৷ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ৷

গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউল হক বলেন, " মোবারকের বোনের সঙ্গে সামনের বাড়ির একটি ছেলের ওঠাবসা হয়েছিল ৷ এনিয়ে সমাজের লোক তিনদিন আগে দু’পক্ষকে নিয়ে বিচারে বসে ৷ বিচারে দুই পক্ষকেই জরিমানা করা হয় ৷ গোটা ঘটনা সহ্য করতে পারেনি মোবারক ৷ শেষ পর্যন্ত শোওয়ার ঘর থেকে আজ তার মৃতদেহ উদ্ধার হয় ৷ কিছুদিন আগেই ভিনরাজ্য থেকে ঘরে ফিরেছিল মোবারক ৷ বোনের কাজকর্ম নিয়ে ওর মাথায় টেনশন ছিল ৷ ওর বক্তব্য ছিল, যেহেতু ওর বোনকে ছেলেটি ভালোবেসেছে, তাই বোন ওই ছেলের সঙ্গেই ঘর করবে ৷ কিন্তু বিচারসভায় তার কথা কেউ গ্রাহ্য করেনি ৷ এরপরেই সে ভাবতে শুরু করে, এই পরিস্থিতিতে সে মুখ দেখাবে কেমন করে ৷ সেই ভাবনা থেকেই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ৷ "

এবিষয়ে গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, " মোবারকের বোনের ভালোবাসা নিয়ে তিনদিন আগে সমাজে বিচার হয়েছিল ৷ বিচারে সমাজের মাতব্বররাও ছিলেন ৷ সভায় দুই পক্ষকে জরিমানা করা হয় ৷ তারপরেই মোবারক ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ৷ কী কারণে সে এই সিদ্ধান্ত নিল, তা জানা নেই ৷ তবে সভায় তাকে এমন কিছু বলা হয়নি ৷ " রতুয়া থানার OC কুণালকান্তি দাস জানান, " এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি ৷ পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে মালদা মেডিকেলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ৷ তার রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্টভাবে জানা যাবে ৷ এই ঘটনায় আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে ৷ "

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.