মালদা, 3 নভেম্বর: ছোট থেকেই তিনি জানতেন, তাঁর রক্তের গ্রুপ 'বি' পজিটিভ ৷ কিন্তু মালদার এক নামি নার্সিং হোমের রিপোর্টে তাঁর রক্তের গ্রুপ 'ও' পজিটিভ আসে ৷ চিন্তায় পড়ে যান সুজাপরের চাষপাড়ার মহম্মদ জান্নাতুল ফিরদৌস ৷ এদিকে তাঁর মুত্রথলির পাথর দ্রুত অপারেশন করাতে বলে দিয়েছেন চিকিৎসক ৷ শেষ পর্যন্ত বীরভূমের রামপুরহাটে এক বেসসরকারি হাসপাতালে সেই অপারেশন করানোর সিদ্ধান্ত নেন জিন্নাতুল সাহেব ৷ সেখানেও তাঁর রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা হয় ৷ সেখানকার পরীক্ষায় রক্তের গ্রুপ 'বি' পজিটিভই আসে ৷ স্বস্তি ফেরে তাঁর ৷ অপারেশনের পর সুস্থ হতেই আইনজীবীর মাধ্যমে মালদার ওই নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের সব জায়গায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি ৷
জিন্নাতুল সাহেব বলেন, “আমার মুত্রথলিতে পাথর হয়েছিল ৷ মালদার একটি নামি নার্সিং হোমের আউটডোর ইউনিটের চিকিৎসক দীপঙ্কর বেরার কাছে চিকিৎসা করাই ৷ তিনি আমাকে অপারেশন করানোর কথা বলেন ৷ তিনি আমাকে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে বলেন ৷ ওই নার্সিং হোমের প্যাথলজি বিভাগেই সেসব পরীক্ষা করাই ৷ রিপোর্ট হাতে পেলে দেখা যায়, আমার রক্তের গ্রুপ নাকি 'ও' পজিটিভ ৷ 14 অক্টোবর আমি অপারেশনের জন্য রামপুরহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হই ৷ সেখানে ফের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করাই ৷ সেখানে কিন্তু আমার রক্তের গ্রুপ 'বি' পজিটিভই আসে ৷ সেটাই ঠিক রিপোর্ট ৷ অপারেশনের সময় বা পরে চিকিৎসকরা যদি আমার শরীরে 'ও' পজিটিভ রক্ত দিতেন তাহলে আমার মৃত্যুও হতে পারত ৷ তাই আমি ওই নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনেক মহলে অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ আমি সুবিচার দাবি করছি ৷”
জিন্নাতুলের আইনজীবী মুশারফ রহমান বিশ্বাস বলেন, “এই বিষয়টি নিয়ে জিন্নাতুল ফিরদৌস আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ মালদার একটি নামি নার্সিং হোম তাঁর রক্তের রিপোর্ট ভুল দেয় ৷ তিনি অস্ত্রোপচারের জন্য রামপুপহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন ৷ সেখানেও তাঁর রক্ত পরীক্ষা করা হয় ৷ তখন রিপোর্ট আসে 'বি' পজিটিভ ৷ মালদার নার্সিং হোমের রিপোর্টের ভিত্তিতে যদি তাঁর শরীরে 'ও' পজিটিভ রক্ত দেওয়া হত, তাহলে তিনি আর বাঁচতেন না ৷ আজ আমরা জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি ৷ পুলিশ সুপার, ইংরেজবাজার থানাতেও অভিযোগ দায়ের করছি ৷ এছাড়াও ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে আমরা মামলা রুজু করতে চলেছি ৷”
আরও পড়ুন: মদ্যপ অবস্থায় স্কুল আসার অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে তালাবন্দি
এনিয়ে অভিযুক্ত নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ শুধু জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তাদের কাছে এমন অভিযোগ কেউ করেনি ৷ অভিযোগ এলে তা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৷ জেলাশাসক নিতীন সিংহানিয়া বলেন, “অভিযোগ গুরুতর ৷ তবে এখনও অভিযোগপত্র আমার কাছে আসেনি ৷ অভিযোগপত্রটি হাতে এলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে ৷”
