মালদা, 4 ডিসেম্বর : বিশেষভাবে সক্ষম নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল আত্মীয়ের বিরুদ্ধে । পরিবারের তরফে জানা গেছে, নাবালিকা মূক ও বধির । বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্কে আত্মীয় ওই যুবক নাবালিকাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে । এমনকি, হুমকিও দেয়, কাউকে জানালে খুন করা হবে নাবালিকাকে । পরে অন্যত্র বিয়ে করে পালিয়ে যায় যুবক । বর্তমানে সাড়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা । ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে । পরিবারের দাবি, প্রথমে পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি । পরে 15 অক্টোবর অভিযোগ জমা নিলেও এখনও অধরা অভিযুক্ত । মালদার পুখুরিয়ার ঘটনা ।
মাস আটেক আগের কথা । সম্পর্কে আত্মীয় ওই যুবকের নাবালিকার বাড়িতে যাতায়াত ছিল । বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে ওই যুবক । নাবালিকাকে যুবক হুমকি দেয় যে, একথা কাউকে বললে তাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে । মাস ছয়েক পর মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন দেখে সন্দেহ হয় আম্মার ৷ মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে পুরো ঘটনা । এরপরই প্রতিবেশী ওই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে স্থানীয় থানায় যান ধর্ষিতা নাবালিকার অভিভাবকরা ৷ অভিযোগ, পুলিশ সেই সময় তাঁদের অভিযোগ নেয়নি ৷ শেষপর্যন্ত গত 15 অক্টোবর পুলিশ অভিযোগ জমা নিতে বাধ্য হয় ৷ তবে এখনও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ ৷
ঘটনায় নির্যাতিতা নাবালিকার আব্বা বলেন, "অভিযুক্ত সম্পর্কে আমার আত্মীয় । আমার মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে । এখন সে অন্তঃসত্ত্বা । বিষয়টি জানতে পেরে আমি আমার আত্মীয়দের সব ঘটনা জানাই ৷ কেউ আমার পাশে দাঁড়ায়নি ৷ পুলিশে অভিযোগ দায়ের করি ৷ এরপরও অভিযুক্তের আব্বা আরেকজন নাবালিকার সঙ্গে ছেলের নিকাহ দিয়ে তাকে বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে ৷ পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেনি ৷"
এদিকে, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ওই নাবালিকার পরিবারকে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে অভিযুক্ত ৷ বিচারের আশায় এখন সাড়ে সাত মাসের গর্ভবতী মেয়েকে নিয়ে পুলিশকর্তাদের দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওই নাবালিকার আব্বা-আম্মা৷ আজ তাঁরা জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়ে সুবিচার প্রার্থনা করেছেন ৷ নির্যাতিতার আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, "ধর্ষিতা নাবালিকা মূক ও বধির ৷ সাড়ে সাত মাস আগে প্রতিবেশী এক যুবকের লালসার শিকার হয় সে ৷ প্রতিবন্ধকতার সুযোগ নিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয় । অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে POCSO আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে ৷ কিন্তু বিশেষভাবে সক্ষম আইনের ধারা এই মামলায় যোগ করা হয়নি ৷ সেই দাবিতে আজ আমরা পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে জানিয়েছি ৷ এই ঘটনায় নির্যাতিতার ক্ষতিপূরণও দাবি করা হয়েছে । সবচেয়ে বড় বিষয়, অভিযোগ দায়ের হওয়ার এতদিন পরও পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেনি ৷ পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত খারাপ ৷"
তবে, এনিয়ে এখনও জেলাশাসক কিংবা পুলিশ সুপারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷