ETV Bharat / state

নেত্রীর নির্দেশ মানবেন কৃষ্ণেন্দু-নীহার ? উঠছে প্রশ্ন

ইংরেজবাজার পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্ব কিছুদিন আগেই একটি সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়ে গেছেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি ও নীহাররঞ্জন ঘোষকে ৷ কিন্তু নেত্রীর নির্দেশের পর কী মিটবে তাঁদের সমস্যা ? প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরে ।

Malda
ইংরেজবাজার পৌরসভা
author img

By

Published : Mar 10, 2020, 4:09 PM IST

Updated : Mar 11, 2020, 4:58 PM IST

মালদা, ১০ মার্চ : এগিয়ে আসছে পৌরসভা নির্বাচন ৷ গত 8 মার্চ জেলা সফরে এসে নির্বাচনের কার্যত দামামা বাজিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পুরাতন মালদার সভা থেকে ইংরেজবাজার পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্বও দিয়ে গেছেন দলীয় নেতৃত্বকে ৷ এই পৌরসভার ২৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে সিংহভাগ দায়িত্ব দিয়েছেন শহরের দুই প্রভাবশালী নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি ও নীহাররঞ্জন ঘোষকে ৷ সে-দিনের সভামঞ্চে দুই সেনানিকে কাছে ডেকে নিজেদের মধ্যে সমস্ত ঝামেলা মিটিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার নির্দেশও দিয়ে গেছেন তিনি ৷ কিন্তু তারপরও কি মালদা শহরের যুযুধান দুই নেতার দ্বন্দ্ব মিটবে ? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরমহলেও ৷



এই নিয়ে নীহাররঞ্জন ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমি আমার বক্তব্য বলতে পারি ৷ দিদি আমাকে যা নির্দেশ দেন, আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করি ৷ দলের ক্ষতি হবে কিংবা দলনেত্রীর কোথাও কোনও অসম্মান হবে, এমন কোনও কাজ আমি কখনই করি না ৷ নেত্রীর নির্দেশ পালন করা আমাদের সবারই কর্তব্য ৷ এই গণ্ডগোল যাতে বড় আকার নেয়, তার জন্য কিছু উসকানিও রয়েছে ৷ কিছু সংবাদপত্রও বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে ৷ রাজনীতি করতে গিয়ে যদি দলই না থাকে কিংবা দলনেত্রীর হাতই যদি আমরা শক্ত করতে না পারি, তাহলে আমাদের গণ্ডগোল কোথায় থাকবে?"

এরপরই নীহারবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, তবে কী আসন্ন পৌরভোটে নীহাররঞ্জন ঘোষ ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকে একজোট হয়ে লড়াই করতে দেখা যাবে ? পৌরসভার চেয়ারম্যানের সপ্রতিভ উত্তর, "প্রয়োজন হলে সেই ছবি অবশ্যই দেখা যাবে ৷ যদি কোনও ওয়ার্ডে আমাকে প্রয়োজন হয়, সেই ওয়ার্ডের মানুষ কিংবা কাউন্সিলর যদি আমাকে ডাকেন, আমি নিশ্চয়ই যাব ৷ দলের উর্ধ্বে আমরা কেউ নই ৷ আমাদের দলকে শক্তিশালী করতে হবে ৷ ইংরেজবাজার পৌরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে আমাদের আবার মানুষের কাজ করতে হবে ৷" কিন্তু পৌর নির্বাচনের কাজে তিনি কী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানাবেন ? নীহারবাবুর জবাব, "এখানে আমার ডাকার বিষয় নেই ৷ দলনেত্রী জেলা নেতৃত্বকেও পৌর নির্বাচন নিয়ে কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন ৷ নির্বাচনের রণকৌশল কী হবে, সেটা পরের ব্যাপার ৷"

একই প্রশ্ন করা হয়েছিল কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকেও ৷ তিনি বলেন, "আসল ফ্যাক্টরটা হল দলনেত্রী যে নির্দেশ দেবেন, তা পালন করা ৷ যাঁদের উপর দায়িত্ব বর্তেছে, তাঁদের সবাইকেই নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে ৷ তা না হলে দলের বিভিন্ন ভিজিলেন্স এজেন্সির রিপোর্টের ভিত্তিতে সেই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ দিদির নির্দেশ পালনে আমার কোনও অসুবিধে নেই ৷ একটা সময়ে বরকতদার সঙ্গেও মতবিরোধ হয়েছিল ৷ কিন্তু তার কোনও প্রভাব ভোটের বাক্সে পড়েনি ৷ পার্টির নির্দেশ মতোই ভোট হয় ৷ আমাদের গণতান্ত্রিক দল ৷ গণতন্ত্রে বিতর্ক থাকবেই ৷ আমার ভুলত্রুটি হলে মানুষ আমাকেও বলতে পারে ৷ অন্য কারও ভুল হলে মানুষ সেটাও বলবে ৷ আমি যদি নিজের কিংবা দলের সমালোচনা না করি, মানুষ ভাববে দল অন্যায় করলে আমরা মুখ বন্ধ করে থাকি ৷ দল ঠিকমতো পরিচালনা হচ্ছে কি না, সরকারি সুযোগ সুবিধা মানুষ ঠিক পাচ্ছে কি না, সেটা দেখাও আমাদের দায়িত্ব ৷"

তাহলে কি পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নীহাররঞ্জন ঘোষ ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকে একজোট হতে দেখা যাবে? প্রাক্তন চেয়ারম্যানের উত্তর, "আমি কারও সঙ্গে কারও তুলনা করি না ৷ সবারই নিজস্ব সত্তা রয়েছে ৷ ৪৭ বছর ধরে রাজনীতি করছি ৷ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করেছি ৷ কীভাবে দায়িত্ব সামলাতে হবে, তা আমি ভালো করেই জানি ৷"

নেত্রীর নির্দেশ মানবেন কৃষ্ণেন্দু-নীহার ?

মালদা, ১০ মার্চ : এগিয়ে আসছে পৌরসভা নির্বাচন ৷ গত 8 মার্চ জেলা সফরে এসে নির্বাচনের কার্যত দামামা বাজিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পুরাতন মালদার সভা থেকে ইংরেজবাজার পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্বও দিয়ে গেছেন দলীয় নেতৃত্বকে ৷ এই পৌরসভার ২৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে সিংহভাগ দায়িত্ব দিয়েছেন শহরের দুই প্রভাবশালী নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি ও নীহাররঞ্জন ঘোষকে ৷ সে-দিনের সভামঞ্চে দুই সেনানিকে কাছে ডেকে নিজেদের মধ্যে সমস্ত ঝামেলা মিটিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার নির্দেশও দিয়ে গেছেন তিনি ৷ কিন্তু তারপরও কি মালদা শহরের যুযুধান দুই নেতার দ্বন্দ্ব মিটবে ? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরমহলেও ৷



এই নিয়ে নীহাররঞ্জন ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমি আমার বক্তব্য বলতে পারি ৷ দিদি আমাকে যা নির্দেশ দেন, আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করি ৷ দলের ক্ষতি হবে কিংবা দলনেত্রীর কোথাও কোনও অসম্মান হবে, এমন কোনও কাজ আমি কখনই করি না ৷ নেত্রীর নির্দেশ পালন করা আমাদের সবারই কর্তব্য ৷ এই গণ্ডগোল যাতে বড় আকার নেয়, তার জন্য কিছু উসকানিও রয়েছে ৷ কিছু সংবাদপত্রও বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে ৷ রাজনীতি করতে গিয়ে যদি দলই না থাকে কিংবা দলনেত্রীর হাতই যদি আমরা শক্ত করতে না পারি, তাহলে আমাদের গণ্ডগোল কোথায় থাকবে?"

এরপরই নীহারবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, তবে কী আসন্ন পৌরভোটে নীহাররঞ্জন ঘোষ ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকে একজোট হয়ে লড়াই করতে দেখা যাবে ? পৌরসভার চেয়ারম্যানের সপ্রতিভ উত্তর, "প্রয়োজন হলে সেই ছবি অবশ্যই দেখা যাবে ৷ যদি কোনও ওয়ার্ডে আমাকে প্রয়োজন হয়, সেই ওয়ার্ডের মানুষ কিংবা কাউন্সিলর যদি আমাকে ডাকেন, আমি নিশ্চয়ই যাব ৷ দলের উর্ধ্বে আমরা কেউ নই ৷ আমাদের দলকে শক্তিশালী করতে হবে ৷ ইংরেজবাজার পৌরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে আমাদের আবার মানুষের কাজ করতে হবে ৷" কিন্তু পৌর নির্বাচনের কাজে তিনি কী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানাবেন ? নীহারবাবুর জবাব, "এখানে আমার ডাকার বিষয় নেই ৷ দলনেত্রী জেলা নেতৃত্বকেও পৌর নির্বাচন নিয়ে কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন ৷ নির্বাচনের রণকৌশল কী হবে, সেটা পরের ব্যাপার ৷"

একই প্রশ্ন করা হয়েছিল কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকেও ৷ তিনি বলেন, "আসল ফ্যাক্টরটা হল দলনেত্রী যে নির্দেশ দেবেন, তা পালন করা ৷ যাঁদের উপর দায়িত্ব বর্তেছে, তাঁদের সবাইকেই নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে ৷ তা না হলে দলের বিভিন্ন ভিজিলেন্স এজেন্সির রিপোর্টের ভিত্তিতে সেই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ দিদির নির্দেশ পালনে আমার কোনও অসুবিধে নেই ৷ একটা সময়ে বরকতদার সঙ্গেও মতবিরোধ হয়েছিল ৷ কিন্তু তার কোনও প্রভাব ভোটের বাক্সে পড়েনি ৷ পার্টির নির্দেশ মতোই ভোট হয় ৷ আমাদের গণতান্ত্রিক দল ৷ গণতন্ত্রে বিতর্ক থাকবেই ৷ আমার ভুলত্রুটি হলে মানুষ আমাকেও বলতে পারে ৷ অন্য কারও ভুল হলে মানুষ সেটাও বলবে ৷ আমি যদি নিজের কিংবা দলের সমালোচনা না করি, মানুষ ভাববে দল অন্যায় করলে আমরা মুখ বন্ধ করে থাকি ৷ দল ঠিকমতো পরিচালনা হচ্ছে কি না, সরকারি সুযোগ সুবিধা মানুষ ঠিক পাচ্ছে কি না, সেটা দেখাও আমাদের দায়িত্ব ৷"

তাহলে কি পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নীহাররঞ্জন ঘোষ ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকে একজোট হতে দেখা যাবে? প্রাক্তন চেয়ারম্যানের উত্তর, "আমি কারও সঙ্গে কারও তুলনা করি না ৷ সবারই নিজস্ব সত্তা রয়েছে ৷ ৪৭ বছর ধরে রাজনীতি করছি ৷ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করেছি ৷ কীভাবে দায়িত্ব সামলাতে হবে, তা আমি ভালো করেই জানি ৷"

নেত্রীর নির্দেশ মানবেন কৃষ্ণেন্দু-নীহার ?
Last Updated : Mar 11, 2020, 4:58 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.