ETV Bharat / state

Malda : শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় মালদা টাউন স্টেশন থেকে গ্রেফতার তৃণমূল নেতা - ইংরেজবাজার পৌরসভা

চোর সন্দেহে শিক্ষক সুদীপ টুডুকে পেটান, সঙ্গে তাঁর পোষার কুকুরটিকেও লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ইংরেজবাজার পৌরসভার 3 নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর পরিতোষ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৷ তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে ওঠে আদিবাসী সংগঠন, শিক্ষক সংগঠনগুলি ৷ শেষমেশ তাঁকে গ্রেফতার করল ইরেজবাজার থানার পুলিশ ৷

গ্রেফতার পরিতোষ চৌধুরী
গ্রেফতার পরিতোষ চৌধুরী
author img

By

Published : Oct 26, 2021, 8:35 AM IST

মালদা, 26 অক্টোবর : কথা রেখেছে পুলিশ। জেলা থেকে পালানোর আগে গ্রেফতার করা হয়েছে আদিবাসী শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পরিতোষ চৌধুরীকে । সোমবার মালদা টাউন স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ । জেলা আদালতের অনুমতিতে তাঁকে 3 দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে । পুলিশের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন আদিবাসী সংগঠনের নেতা মোহন হাঁসদা । তিনি অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন । তবে এপ্রসঙ্গে পুলিশের কোনও আধিকারিক সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলতে চাননি । মুখ খোলেননি পরিতোষবাবুও ।

উল্লেখ্য, গত 17 অক্টোবর ইংরেজবাজার পৌরসভার 3 নম্বর ওয়ার্ডের মালঞ্চপল্লি এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন হবিবপুর ব্লকের মানিকোড়া হাইস্কুলের শিক্ষক সুদীপ টুডু (31) । তাঁর বাড়ি গাজোলের মালডাঙা গ্রামের বিবেকানন্দপল্লিতে । নিজের গাড়িতে সেদিন আত্মীয়ের বাড়ি এসেছিলেন ওই শিক্ষক । গাড়ি রাখা ছিল 12 নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে । অভিযোগ, বিকেলে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফেরার সময় মালঞ্চপল্লি সাবওয়ে গেটের কাছে সুদীপবাবুকে আটকান ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর, বর্তমান ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর পরিতোষ চৌধুরী ।

কী হয়েছিল 17 অক্টোবর ?

ওই দিন কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে একটি সাইকেল চুরি যায় । অভিযোগ, শিক্ষক সুদীপ টুডুকে দেখে তৃণমূল নেতা পরিতোষ 'চোর চোর' বলে চিৎকার শুরু করেন । শিক্ষক তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তিনি চোর নন, একজন শিক্ষক । কিন্তু সেসব কথা কানে তোলেননি তৃণমূল নেতা । তিনি সুদীপবাবুকে মারতে মারতে নিজের বাড়িতে টেনে নিয়ে যান । সেখানে তাঁর সঙ্গে তাঁর পরিচিত লোকজনও শিক্ষককে রাস্তায় ফেলে মারধর করতে থাকে । এমনকি পরিতোষবাবু তাঁর বাড়ির পোষা কুকুরটিকেও লেলিয়ে দেন বলে অভিযোগ সুদীপবাবুর । কুকুরের কামড়ে, আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত শিক্ষকের উপর দীর্ঘক্ষণ নির্যাতন চালানোর পর তাঁকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । এই ঘটনায় ইংরেজবাজার থানায় পরিতোষবাবু-সহ 10 জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সুদীপ টুডুর বাবা লক্ষ্মণ টুডু । এর আগে পুলিশ বিশ্বজিৎ হালদার ও জীতেন মণ্ডল নামে দু'জনকে গ্রেফতার করে ।

আরও পড়ুন : Malda : শিক্ষক নিগ্রহে অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ

আদিবাসী সংগঠনের প্রতিবাদ

মূল অভিযুক্ত পরিতোষবাবু গ্রেফতার না হওয়ায় গর্জে ওঠে শিক্ষক সমাজ, প্রতিবাদে সরব হয় আদিবাসী সমাজও । গত শুক্রবার আদিবাসীদের 7 টি সংগঠন যৌথভাবে পরিতোষ চৌধুরীর গ্রেফতারির দাবিতে মালদা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে । শহরের প্রাণকেন্দ্র, রথবাড়ি মোড়ে 12 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয় । শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) অনীশ সরকার আশ্বাস দেন, 72 ঘণ্টার মধ্যে পরিতোষ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হবে । তারপর অবরোধ তুলে নেয় আদিবাসী সংগঠন ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক'দিন ধরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে থাকার পর গতকাল মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পরিতোষ চৌধুরী শহর ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন । খবর পেয়ে মালদা টাউন স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ । তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের তরফে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল । পরে তার সঙ্গে 'প্রিভেনশন অফ অ্যাট্রোসিটিজ অ্যাক্ট'-এর (Prevention of Atrocities Act) ধারা জুড়ে দেওয়া হয়েছে । তাঁর বিরুদ্ধে মোট 5 টি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে ।

মূল অভিযুক্তকে 3 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন জেলা আদালতের মুখ্য দায়রা বিচারক অভিজিৎ ঘোষ । তবে এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মামলার তদন্তকারী অফিসার, ডিএসপি (সদর) প্রশান্ত দেবনাথ । বক্তব্য পাওয়া যায়নি পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ারও । এমনকি অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পরিতোষ চৌধুরীও সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি । শুধু জানান, তিনি আত্মসমর্পণ করেননি, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে । তবে পুলিশের এই ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান সংগঠনের মালদা জোনের সভাপতি মোহন হাঁসদা । তিনি বলেন, "ওই তৃণমূল নেতা শুধু সুদীপ টুডুর উপর নয়, গোটা আদিবাসী সমাজের উপরেই আঘাত হেনেছেন । আমরা তাঁর কঠোর শাস্তি দাবি করছি ।"

মালদা, 26 অক্টোবর : কথা রেখেছে পুলিশ। জেলা থেকে পালানোর আগে গ্রেফতার করা হয়েছে আদিবাসী শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পরিতোষ চৌধুরীকে । সোমবার মালদা টাউন স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ । জেলা আদালতের অনুমতিতে তাঁকে 3 দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে । পুলিশের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন আদিবাসী সংগঠনের নেতা মোহন হাঁসদা । তিনি অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন । তবে এপ্রসঙ্গে পুলিশের কোনও আধিকারিক সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলতে চাননি । মুখ খোলেননি পরিতোষবাবুও ।

উল্লেখ্য, গত 17 অক্টোবর ইংরেজবাজার পৌরসভার 3 নম্বর ওয়ার্ডের মালঞ্চপল্লি এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন হবিবপুর ব্লকের মানিকোড়া হাইস্কুলের শিক্ষক সুদীপ টুডু (31) । তাঁর বাড়ি গাজোলের মালডাঙা গ্রামের বিবেকানন্দপল্লিতে । নিজের গাড়িতে সেদিন আত্মীয়ের বাড়ি এসেছিলেন ওই শিক্ষক । গাড়ি রাখা ছিল 12 নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে । অভিযোগ, বিকেলে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফেরার সময় মালঞ্চপল্লি সাবওয়ে গেটের কাছে সুদীপবাবুকে আটকান ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর, বর্তমান ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর পরিতোষ চৌধুরী ।

কী হয়েছিল 17 অক্টোবর ?

ওই দিন কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে একটি সাইকেল চুরি যায় । অভিযোগ, শিক্ষক সুদীপ টুডুকে দেখে তৃণমূল নেতা পরিতোষ 'চোর চোর' বলে চিৎকার শুরু করেন । শিক্ষক তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তিনি চোর নন, একজন শিক্ষক । কিন্তু সেসব কথা কানে তোলেননি তৃণমূল নেতা । তিনি সুদীপবাবুকে মারতে মারতে নিজের বাড়িতে টেনে নিয়ে যান । সেখানে তাঁর সঙ্গে তাঁর পরিচিত লোকজনও শিক্ষককে রাস্তায় ফেলে মারধর করতে থাকে । এমনকি পরিতোষবাবু তাঁর বাড়ির পোষা কুকুরটিকেও লেলিয়ে দেন বলে অভিযোগ সুদীপবাবুর । কুকুরের কামড়ে, আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত শিক্ষকের উপর দীর্ঘক্ষণ নির্যাতন চালানোর পর তাঁকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । এই ঘটনায় ইংরেজবাজার থানায় পরিতোষবাবু-সহ 10 জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সুদীপ টুডুর বাবা লক্ষ্মণ টুডু । এর আগে পুলিশ বিশ্বজিৎ হালদার ও জীতেন মণ্ডল নামে দু'জনকে গ্রেফতার করে ।

আরও পড়ুন : Malda : শিক্ষক নিগ্রহে অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ

আদিবাসী সংগঠনের প্রতিবাদ

মূল অভিযুক্ত পরিতোষবাবু গ্রেফতার না হওয়ায় গর্জে ওঠে শিক্ষক সমাজ, প্রতিবাদে সরব হয় আদিবাসী সমাজও । গত শুক্রবার আদিবাসীদের 7 টি সংগঠন যৌথভাবে পরিতোষ চৌধুরীর গ্রেফতারির দাবিতে মালদা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে । শহরের প্রাণকেন্দ্র, রথবাড়ি মোড়ে 12 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয় । শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) অনীশ সরকার আশ্বাস দেন, 72 ঘণ্টার মধ্যে পরিতোষ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হবে । তারপর অবরোধ তুলে নেয় আদিবাসী সংগঠন ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক'দিন ধরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে থাকার পর গতকাল মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পরিতোষ চৌধুরী শহর ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন । খবর পেয়ে মালদা টাউন স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ । তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের তরফে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল । পরে তার সঙ্গে 'প্রিভেনশন অফ অ্যাট্রোসিটিজ অ্যাক্ট'-এর (Prevention of Atrocities Act) ধারা জুড়ে দেওয়া হয়েছে । তাঁর বিরুদ্ধে মোট 5 টি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে ।

মূল অভিযুক্তকে 3 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন জেলা আদালতের মুখ্য দায়রা বিচারক অভিজিৎ ঘোষ । তবে এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মামলার তদন্তকারী অফিসার, ডিএসপি (সদর) প্রশান্ত দেবনাথ । বক্তব্য পাওয়া যায়নি পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ারও । এমনকি অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পরিতোষ চৌধুরীও সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি । শুধু জানান, তিনি আত্মসমর্পণ করেননি, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে । তবে পুলিশের এই ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান সংগঠনের মালদা জোনের সভাপতি মোহন হাঁসদা । তিনি বলেন, "ওই তৃণমূল নেতা শুধু সুদীপ টুডুর উপর নয়, গোটা আদিবাসী সমাজের উপরেই আঘাত হেনেছেন । আমরা তাঁর কঠোর শাস্তি দাবি করছি ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.