মালদা, ২৮ মে: বানভাসি মালদা শহর ৷ শুধুমাত্র নিকাশি ব্যবস্থার অভাবে ৷ বৃহস্পতিবার বৃষ্টির জেরে শুক্রবারও শহরের অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন৷ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শহরবাসী ৷ ঘোড়াপীর এলাকায় নির্মীয়মাণ নিকাশি কালভার্টের পাশে মালদা-মানিকচক রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়েছে ৷ মানুষের দাবি, কালভার্টের কাজের জন্য বন্ধ করে দেওয়া নিকাশি নালা এখনই কেটে দিতে হবে ৷ জলমুক্ত করতে হবে শহরকে ৷ অবরোধস্থলে পুলিশ পৌঁছোলেও এখনও দেখা নেই ইংরেজবাজার পৌরসভার প্রশাসক, সদর মহকুমাশাসক শেখরকুমার চৌধুরীর ৷
যশের প্রভাবে তৈরি নিম্নচাপের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি ৷ ছ’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে একনাগাড়ে বৃষ্টি চলে ৷ রাত থেকে ফের বৃষ্টির তোড় ৷ শুক্রবার সকাল থেকে অবশ্য বৃষ্টি তেমন হয়নি ৷ কিন্তু এই মুহূর্তে ইংরেজবাজার পৌরসভার অর্ধেকের বেশি ওয়ার্ড জলমগ্ন ৷ মেডিক্যাল কলেজ, আদালত, বাজার, সহ বহু মানুষের বাড়িতেও জল ঢুকেছে ৷ অনেকের জামাকাপড় কিংবা খাদ্যসামগ্রীও শুকনো নেই ৷ তাঁরা রাস্তায় উঠে এসেছেন ৷ বৃহস্পতিবার রাতে সদর মহকুমাশাসক আশ্বাস দিয়েছিলেন রাত থেকেই পাম্প বসিয়ে জল বের করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত শহরের কোথাও পাম্প ব্যবহার করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ মালদা শহরের জমা জল ঘোড়াপীর এলাকার নিকাশি নালা দিয়েই এতদিন বেরিয়ে যেত ৷ তার জন্য সেখানে মালদা-মানিকচক রাজ্য সড়কের উপর একটি কালভার্টও তৈরি করা হয়েছিল ৷ বর্তমানে সেই কালভার্টটি নতুন করে তৈরি হচ্ছে ৷ তার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নিকাশি নালা ৷ এতেই শহরের সমস্যা আরও বেড়েছে ৷ শুক্রবার সকাল থেকে সেই কালভার্টের জায়গা কেটে দেওয়ার দাবি জানিয়ে পথ অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষ ৷ তাঁদের একজন, সুকুমার দাস বলেন, “১৯৭১ সালে যখন কালভার্টটি তৈরি হয়, তখন এটা অনেক বড় ছিল ৷ এখন সেটা অর্ধেক হয়েছে ৷ এর জন্যই এখন শহরের জল বেরোতে পারছে না ৷ আমাদের দাবি, এখানে রাস্তা কেটে শহরের জল বের করতে হবে ৷ সেই দাবিতেই আমরা পথ অবরোধ করেছি ৷ এখনও কেউ আসেনি ৷”
আরও পড়ুন:কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা
শহরের শকুন্তলা কলোনি এলাকায় এখন ঘরে ঘরে জল ৷ স্থানীয় বাসিন্দা ললিতা রায় বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘরে জল ঢুকেছে ৷ খাবার কিছু নেই ৷ এখন ঘরে কোমরের উপর জল জমে রয়েছে ৷ কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ ঘোষকে বলেছি ৷ কিছু করেননি ৷ এখন রাস্তায় উঠে আসতে হয়েছে ৷ প্রশাসনের কাছে দাবি, জমা জল বের করার দ্রুত ব্যবস্থা করা হোক ৷” একই বক্তব্য আরেক বাসিন্দা বিশাখা দাসেরও ৷ তাঁর কথায়, “ছেলেমেয়ে নিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছি ৷ জল বেরোনোর কোনও রাস্তা নেই ৷ মনে হচ্ছে না এখনই জল নামবে ৷ আমরা কিছু চাই না ৷ শুধু জল বের করে দিতে হবে ৷”