মালদা, ২৩ মার্চ : চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার নিদর্শন হয়ে রইল চাঁচলের কলমবাগানে আয়োজিত রাহুল গান্ধির সভা। অত্যধিক ভিড়ের চাপে ভেঙে গেল বাঁশের ব্যারিকেড। ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন অন্তত ৭ জন। ছ'জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। একজনকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারের জন্য প্রথমে মালদাকে বেছে নিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি। চাঁচলের কলমবাগান ময়দানে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। মাঠটিতে প্রায় এক লাখ লোক ধরে। মঞ্চের পিছনে মাঠের একদিকে অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছিল। কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছিল, দুপুর তিনটে নাগাদ রাহুল গান্ধির সভা শুরু হবে। তবে সভার কাজ দুপুর একটা থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বেলা ১২টা থেকে পিলপিল করে মাঠে ঢুকতে থাকে মানুষ। দুপুর দেড়টা নাগাদ মাঠ ভরতি হয়ে যায়। ভিড়ের চাপে বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে যায়। মুহূর্তের মধ্যে মঞ্চের সামনে VIP ও সংবাদমাধ্যমের জন্য নির্ধারিত জায়গায় ঢুকে পড়ে কয়েক হাজার মানুষ।
পরিস্থিতি দেখে ছুটে আসে SPG। মঞ্চ থেকে নেমে মানুষজনকে বোঝাতে এগিয়ে আসেন আবু হাসেম খান, দীপা দাশমুন্সি, ইশা খান চৌধুরিরা। কিন্তু ব্যর্থ হন তাঁরা। তাঁদের সামনেই চলতে থাকে চেয়ার ছোড়াছুড়ি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ফের মঞ্চে চলে যান নেতানেত্রীরা। মঞ্চ থেকেই শান্ত থাকার বার্তা দেওয়া হয়। আসরে নামতে হয় পুলিশকে। কিন্তু, পুলিশও উপস্থিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। পরিস্থিতি বুঝে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর ভাষণ কাটছাঁট করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নির্দিষ্ট সূচির আগেই বক্তব্য শুরু করেছিলেন রাহুল। তাঁর বক্তব্যের মধ্যেই একসময় ভেঙে পড়ে বৈদ্যুতিন মাধ্যমের সাংবাদিকদের জন্য নির্মিত ছোটো একটি এনক্লোজ়ারের ব্যারিকেডও। সামান্য আহত হন কয়েকজন সাংবাদিক। কয়েকজনের ক্যামেরার সামগ্রীও ভেঙে যায়।
রাহুল সভাস্থান ছেড়ে যাওয়ার পরও বিশৃঙ্খলা বন্ধ হয়নি। মঞ্চের সামনের ব্যারিকেড টপকে মানুষ দৌড়াতে শুরু করে রাহুল গান্ধির চপারের দিকে। তাদের আটকাতে পারেনি SPG-ও। বিশৃঙ্খলা নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য কিছু বলতে চায়নি। তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক নেতা বলেন, "এই মুহূর্তে উত্তর মালদায় কংগ্রেসের শক্তি যে অনেকটা কমেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু এই বাজারেও যে কংগ্রেসের এত সমর্থক চড়া রোদ মাথায় নিয়ে রাহুলজির সভায় আসবেন তা কেউ বুঝতে পারেনি। ওই নেতার দাবি, আজ সভায় দেড় লাখেরও বেশি লোক হয়েছিল। এত লোক ধারণ করার ক্ষমতা এই মাঠের নেই। সেকারণেই মানুষের আবেগকে আমরা আটকাতে পারিনি।"