মালদা, 18 এপ্রিল : দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণকে ঘিরে যখন রণক্ষেত্র চোপড়া, ঠিক তখন রাজনীতিতে গান্ধিগিরির পরিচয় দিলেন উত্তর মালদার BJP প্রার্থী খগেন মুর্মু৷ ভোটপ্রচারে বেরিয়ে সোজা চলে গেলেন যুব তৃণমূল পার্টি অফিসে৷ জড়িয়ে ধড়লেন যুব তৃণমূল কর্মীদের৷ এলাকার উন্নয়নের জন্য একসাথে পথ চলার বার্তাও দিলেন। BJP প্রার্থীর এমন প্রচারে হতচকিত হয়ে পড়েন শাসকদলের কর্মীরা৷ তাঁদের বক্তব্য, হয়তো ভুল করে তাঁদের পার্টি অফিসে চলে এসেছিলেন খগেন মুর্মু৷
আজ দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই উত্তপ্ত চোপড়া৷ ভোটারদের ভোটদানে বাধা, পথ অবরোধ, পাথরবৃষ্টি, বোমা-গুলি সবই চলে সেখানে৷ কিন্তু এরই মধ্যে অন্য ছবি উত্তর মালদা কেন্দ্রের বামনগোলায়৷ প্রচারে বেরিয়ে সোজা যুব তৃণমূলের পার্টি অফিসে চলে যান সেখানকার BJP প্রার্থী খগেন মুর্মু৷ সেই সময় পার্টি অফিসের সামনে ছিলেন বেশ কিছু যুব তৃণমূলের কর্মী৷ ছিলেন খোদ ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতিও৷ কাউকে কিছু বোঝার সুযোগ দেওয়ার আগেই খগেনবাবু জড়িয়ে ধরেন তৃণমূল কর্মীদের৷ সাথেই বলতে থাকেন, "আরে আমরা আলাদা দল করি৷ তা বলে কি এলাকার উন্নয়নে এক হতে পারব না? দল দলের জায়গায় থাকুক৷ আমাদের তো একইসঙ্গে থাকতে হবে৷ এলাকার উন্নয়নে একসঙ্গে আওয়াজ তুলতে হবে৷" খগেনবাবুর এই কথায় একমত হন যুব তৃণমূল কর্মীরাও৷
পরে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি সুভাষ বর্মণ বলেন, "খগেন মুর্মু আমাদের কাছে এসেছিলেন৷ কিন্তু আমাদের মনে হয়, উনি ভুল করে এখানে চলে এসেছিলেন৷ কারণ, তিনি সদ্য BJP-তে যোগ দিয়েছেন৷ বুঝতে পারেননি, এটা তৃণমূল না কি BJP-র পার্টি অফিস৷ যখন তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন, তখন এখান থেকে চলে গেছেন৷"
তবে, সুভাষবাবু যাই বলুন না কেন, রাজনৈতিক মহলের কথায়, গত 13 বছর ধরে বামনগোলা এলাকার বিধায়ক খগেনবাবু৷ এলাকার প্রতিটি পাড়ার প্রায় প্রত্যেককেই তিনি নামে চেনেন৷ গোটা এলাকা হাতের তালুর মতো চেনা৷ ফলে তিনি ভুল করে যুব তৃণমূলের পার্টি অফিসে চলে গেছেন, এটা ভাবা ভুল৷ এটা তাঁর প্রচারের একটি অঙ্গ৷ যদিও এবিষয়ে খগেনবাবুর বক্তব্য, শান্তিপূর্ণ ভোট মালদার ঐতিহ্য৷ এবারও সেই ঐতিহ্যে যেন কোনও দাগ না পড়ে, সেটাই তাঁর লক্ষ্য৷ তাছাড়া এলাকার উন্নয়ন করতে গেলে দলমত ভুলে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে৷ এটা তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনের উপলব্ধি৷ সেকারণেই তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে যুব তৃণমূলের পার্টি অফিসে গেছেন৷