ETV Bharat / state

কন্যাশ্রী, সবুজসাথী নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ; তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বললেন প্রধান শিক্ষক

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কন্যাশ্রী, সবুজসাথী সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ৷ তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলে দাবি শিক্ষকের ৷ ঘটনাকে ঘিরে শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর ৷

কন্যাশ্রী, সবুজসাথীর জন্য় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ
কন্যাশ্রী, সবুজসাথীর জন্য় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ
author img

By

Published : Feb 4, 2021, 1:22 PM IST

মালদা, 4 ফেব্রুয়ারি : কন্যাশ্রী, সবুজসাথী সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের তালবাংরুয়া হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৷ এনিয়ে আজ ওই মাদ্রাসায় বিক্ষোভও দেখান অভিভাবকরা ৷ যদিও এই ঘটনা তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক ৷ গোটা বিষয় নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর ৷ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি ৷ তবে বিরোধীদের কথায় গুরুত্ব দিতে রাজি নয় শাসকদল ৷

ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কন্যাশ্রীর টাকা থেকে শুরু করে লকডাউন চলাকালীন চাল, ডাল বিতরণ, এমনকি সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেল বিলিতেও দুর্নীতি করেছেন ৷ এসব অভিযোগে আজ মাদ্রাসায় বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকদের একাংশ ৷ তাঁদেরই একজন তজিবুর রহমান বলেন, “আমার ছেলে ও মেয়ে এই মাদ্রাসায় পড়ে ৷ এখানকার প্রধান শিক্ষক প্রতিটি বিষয়ে দুর্নীতি করছেন ৷ 2010 সালের পর থেকে এখানে পরিচালন সমিতির কোনও নির্বাচন হয়নি ৷ আমাদের চাপে নির্বাচন করলেও তা অবৈধভাবে করা হয়েছিল ৷ সেই বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন ৷ এরপর তাঁকে মাদ্রাসার প্রশাসক ও ডিডিয়ো (ড্রইং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার) করা হয় ৷ তিনি নিজের প্রভাব খাটিয়ে বাইরের স্কুলের মেয়েদের এই মাদ্রাসার কন্যাশ্রী তালিকায় ঢোকাচ্ছেন ৷ সেই মেয়েদের কাছ থেকে তিনি 15 হাজার করে টাকা নিচ্ছেন ৷ 2018-19 সালের ভরতির ফি’র টাকাও তিনি আত্মসাৎ করেছেন ৷ এই মাদ্রাসার মেয়েদের কন্যাশ্রী ফর্মের জন্য তিনি 100 থেকে 200 টাকা করে নিচ্ছেন ৷ টাকা পাচ্ছেন না বলে মাদ্রাসার 100টি কে-2 ফর্ম তিনি আপলোড করছেন না ৷ কে-1 ফর্মের ক্ষেত্রে তদন্তে দেখা গিয়েছে, 90টি ফর্মের মধ্যে 45টি বাইরের স্কুলের ছাত্রীদের ৷ এখন তিনি সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেলের জন্যও টাকা দাবি করছেন ৷ এসব কারণেই আজ আমরা মাদ্রাসার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছি ৷”

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কাট মানি নেওয়ার অভিযোগ । দেখুন ভিডিয়ো...

আরও পড়ুন : "নির্ভয়ে ভোট দিন", গ্রামে গ্রামে বিডিও-আইসি

যদিও প্রধান শিক্ষক মহম্মদ খাইরুল আলমের বক্তব্য, “সাইকেলে কিছু না হলেও একাধিক ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে ৷ কন্যাশ্রীতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে ৷ 2018 সালে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি ৷ বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করাতে যাই ৷ সেই সময় কন্যাশ্রীর সব দায়িত্ব ক্লার্ককে দিয়ে গিয়েছিলাম ৷ সেই ক্লার্কই গোটা দুর্নীতিতে যুক্ত ৷ এনিয়ে আমাকে জেলা থেকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল ৷ আমি জেলায় গিয়ে 200টি কন্যাশ্রী ফর্ম বাতিল করেছি ৷ বিডিওকেও জানিয়েছি ৷ তার সব নথি আমার কাছে আছে ৷ এরপর পাসওয়ার্ড আমার নামে ট্রান্সফার করিয়ে নিতেই এদের সঙ্গে আমার ঝামেলা শুরু ৷ একদিন ছেলের সঙ্গে মাদ্রাসায় যাই ৷ ছেলের সামনেই আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করে ৷ ছেলে প্রতিবাদ করলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় ৷ এরা সব তৃণমূলের নামধারী গুন্ডা ৷ এদের কাজই হল হামলা করা, টাকা আদায় করা ৷ আমি সরকারের লোক, সরকারি পার্টি করি ৷ সরকার বিরোধী কিছু করি না, কাউকে করতেও দেব না ৷”

একুশের ভোটের আগে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি ৷ দলের জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “এটা তৃণমূলের কালচার ৷ কাটমানি ওদের জীবনের স্বাভাবিক বিষয় ৷ শুধু হরিশ্চন্দ্রপুর মাদ্রাসায় নয়, তদন্ত করলে গোটা রাজ্যের প্রতিটি স্কুলে এমন দুর্নীতি ধরা পড়বে ৷ এর সঙ্গে প্রশাসনও জড়িত ৷” তবে বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরি বলেন, “এক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে বিডিও কিংবা নোডাল অফিসার কেন কোনও এফআইআর করেননি ? আসলে ভোট আসছে, এখন এসব মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে ৷ কেউ অন্যায় করলে তার জন্য প্রশাসন আছে ৷ এই ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে ৷”

এপ্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের বিডিও পার্থ দাস বলেন, “এনিয়ে একটি আরটিআই জমা পড়েছিল ৷ আমার অফিস থেকে তার উত্তর দিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷”

মালদা, 4 ফেব্রুয়ারি : কন্যাশ্রী, সবুজসাথী সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের তালবাংরুয়া হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৷ এনিয়ে আজ ওই মাদ্রাসায় বিক্ষোভও দেখান অভিভাবকরা ৷ যদিও এই ঘটনা তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক ৷ গোটা বিষয় নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর ৷ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি ৷ তবে বিরোধীদের কথায় গুরুত্ব দিতে রাজি নয় শাসকদল ৷

ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কন্যাশ্রীর টাকা থেকে শুরু করে লকডাউন চলাকালীন চাল, ডাল বিতরণ, এমনকি সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেল বিলিতেও দুর্নীতি করেছেন ৷ এসব অভিযোগে আজ মাদ্রাসায় বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকদের একাংশ ৷ তাঁদেরই একজন তজিবুর রহমান বলেন, “আমার ছেলে ও মেয়ে এই মাদ্রাসায় পড়ে ৷ এখানকার প্রধান শিক্ষক প্রতিটি বিষয়ে দুর্নীতি করছেন ৷ 2010 সালের পর থেকে এখানে পরিচালন সমিতির কোনও নির্বাচন হয়নি ৷ আমাদের চাপে নির্বাচন করলেও তা অবৈধভাবে করা হয়েছিল ৷ সেই বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন ৷ এরপর তাঁকে মাদ্রাসার প্রশাসক ও ডিডিয়ো (ড্রইং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার) করা হয় ৷ তিনি নিজের প্রভাব খাটিয়ে বাইরের স্কুলের মেয়েদের এই মাদ্রাসার কন্যাশ্রী তালিকায় ঢোকাচ্ছেন ৷ সেই মেয়েদের কাছ থেকে তিনি 15 হাজার করে টাকা নিচ্ছেন ৷ 2018-19 সালের ভরতির ফি’র টাকাও তিনি আত্মসাৎ করেছেন ৷ এই মাদ্রাসার মেয়েদের কন্যাশ্রী ফর্মের জন্য তিনি 100 থেকে 200 টাকা করে নিচ্ছেন ৷ টাকা পাচ্ছেন না বলে মাদ্রাসার 100টি কে-2 ফর্ম তিনি আপলোড করছেন না ৷ কে-1 ফর্মের ক্ষেত্রে তদন্তে দেখা গিয়েছে, 90টি ফর্মের মধ্যে 45টি বাইরের স্কুলের ছাত্রীদের ৷ এখন তিনি সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেলের জন্যও টাকা দাবি করছেন ৷ এসব কারণেই আজ আমরা মাদ্রাসার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছি ৷”

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কাট মানি নেওয়ার অভিযোগ । দেখুন ভিডিয়ো...

আরও পড়ুন : "নির্ভয়ে ভোট দিন", গ্রামে গ্রামে বিডিও-আইসি

যদিও প্রধান শিক্ষক মহম্মদ খাইরুল আলমের বক্তব্য, “সাইকেলে কিছু না হলেও একাধিক ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে ৷ কন্যাশ্রীতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে ৷ 2018 সালে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি ৷ বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করাতে যাই ৷ সেই সময় কন্যাশ্রীর সব দায়িত্ব ক্লার্ককে দিয়ে গিয়েছিলাম ৷ সেই ক্লার্কই গোটা দুর্নীতিতে যুক্ত ৷ এনিয়ে আমাকে জেলা থেকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল ৷ আমি জেলায় গিয়ে 200টি কন্যাশ্রী ফর্ম বাতিল করেছি ৷ বিডিওকেও জানিয়েছি ৷ তার সব নথি আমার কাছে আছে ৷ এরপর পাসওয়ার্ড আমার নামে ট্রান্সফার করিয়ে নিতেই এদের সঙ্গে আমার ঝামেলা শুরু ৷ একদিন ছেলের সঙ্গে মাদ্রাসায় যাই ৷ ছেলের সামনেই আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করে ৷ ছেলে প্রতিবাদ করলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় ৷ এরা সব তৃণমূলের নামধারী গুন্ডা ৷ এদের কাজই হল হামলা করা, টাকা আদায় করা ৷ আমি সরকারের লোক, সরকারি পার্টি করি ৷ সরকার বিরোধী কিছু করি না, কাউকে করতেও দেব না ৷”

একুশের ভোটের আগে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি ৷ দলের জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “এটা তৃণমূলের কালচার ৷ কাটমানি ওদের জীবনের স্বাভাবিক বিষয় ৷ শুধু হরিশ্চন্দ্রপুর মাদ্রাসায় নয়, তদন্ত করলে গোটা রাজ্যের প্রতিটি স্কুলে এমন দুর্নীতি ধরা পড়বে ৷ এর সঙ্গে প্রশাসনও জড়িত ৷” তবে বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরি বলেন, “এক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে বিডিও কিংবা নোডাল অফিসার কেন কোনও এফআইআর করেননি ? আসলে ভোট আসছে, এখন এসব মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে ৷ কেউ অন্যায় করলে তার জন্য প্রশাসন আছে ৷ এই ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে ৷”

এপ্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের বিডিও পার্থ দাস বলেন, “এনিয়ে একটি আরটিআই জমা পড়েছিল ৷ আমার অফিস থেকে তার উত্তর দিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.