ETV Bharat / state

World Ozone Day: আজ বিশ্ব ওজোন দিবস, প্রতি বছর 16 সেপ্টেম্বর কেন পালিত হয় এই দিনটি ?

প্রতি বছর 16 সেপ্টেম্বর বিশ্ব ওজোন দিবস পালিত হয় ৷ জেনে নিন এই দিনটি সম্বন্ধে খুঁটিনাটি ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 16, 2023, 2:01 PM IST

Picture Curtesy- UN Twitter (X)
ছবি সৌজন্য- জাতিসংঘ টুইটার(এক্স)

কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর: ক্ষত বিক্ষত ওজোন স্তর রক্ষায় আজকের দিনে 1987 সালে প্রথম মন্ট্রিল চুক্তি হয় । তাই এই দিনটি প্রতি বছর বিশ্ব ওজোন দিবস হিসেবে পালিত হয় । সূর্যের আলোর অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের জিন বিকৃতি এবং চামড়া ও দেহের অন্যান্য অংশের ক্যানসারের মত মারণ রোগের জন্য দায়ী ৷ এই অতিবেগুণি রশ্মিকে রুখে দেয় ওজোন গ্যাস । তবে বিজ্ঞানের চাকা ঘোরার সঙ্গেই মানব সভ্যতার নানা কর্মকাণ্ডের জেরে ক্রমশ ফুটো হতে থাকছে বায়ুমণ্ডলের এই ওজোন স্তর । যা মানব জীবনে ডেকে আনছে নানা মারণ রোগ ৷ তৈরি করছে বিভিন্ন সমস্যা । প্রভাব পড়ছে জীব জগতে ।

মন্ট্রিল চুক্তি

18-19 শতকের দিকে ঠান্ডা রাখার রেফ্রিজারেটরে ব্যবহৃত হত মিথাইল ক্লোরাইড, এ্যানহাইড্রাস বা জলবিহীন এ্যামোনিয়া এবং সালফার ডাইঅক্সাইড । এরপর ফ্রিজার ও এসির জন্য এ্যামোনিয়ার পাশাপাশি ব্যবহৃত হতে শুরু করে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন গ্যাস বা ফ্রেয়ন । তবে পরবর্তী সময় দেখা যায়, এই গ্যাসগুলো ভূপৃষ্ঠ থেকে 70-80 কিলোমিটার উপরে প্রায় 30 কিলোমিটার চওড়া ওজোন স্তরকে ধীরে ধীরে ফুটো করে দিচ্ছে । সেই সব ছিদ্র ক্রমশ বেড়ে চলেছে । এই স্তর দ্রুত গতিতে ক্ষয়ে যাওয়ার ফলে বায়ুমণ্ডলে বেশ কিছু বড় ওজোন ছিদ্র দেখা দিয়েছে । এই ছিদ্র গোটা মানব সভ্যতার কাছে গভীর সঙ্কট তৈরি করেছে । তাই সঙ্কট মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ 1985-1987 দীর্ঘ দু'বছর যাবত বিস্তারিত আলোচনা করে । আলোচনার শেষে 16 সেপ্টেম্বর 1987 সালে মন্ট্রিল চুক্তি কার্যকর করেন ।

বিকল্প গ্যাসের ব্যবহার

এই আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে রেফ্রিজারেটর, কুলার বা এয়ার কন্ডিশন মেশিনে ওই জাতীয় গ্যাস ব্যবহার বন্ধ করার পদক্ষেপ করে । ঠান্ডা করার বিকল্প গ্যাসের খোঁজে বিজ্ঞানীরা গুরুত্ব দেন । পরবর্তী সময় এসি বা ফ্রিজে হাইড্রোফ্লুরোকার্বন বা এইচএফসি, আইসোবিউটেন, টেট্রাফ্লুরোকার্বন অথবা একেবারে আধুনিকতম পিউরোন গ্যাস ব্যবহার শুরু হয় । এর ফলে ওজোন স্তরের ক্ষত অনেক জায়গায় নিরাময় করাও সম্ভব হয় । যা সামান্য হলেও সঙ্কট মোকাবিলায় ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই দেখছেন বিশ্বের বিজ্ঞানী মহল ।

কিগালি সংশোধনী

তবে বিকল্প গ্যাস ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অন্য বিপদ নজরে আসে । যা মানব সভ্যতায় আরও বেশি প্রভাব ফেলে । সেই বিপদ হল বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন । কারণ হাইড্রোফ্লুরোকার্বন বা এইচএফসির মত গ্যাস ব্যবহারে ওজোন স্তর বাঁচানো গেলেও এই গ্যাস কিন্তু গ্রিন হাউজ গ্যাস হিসাবে কার্বন ডাই অক্সাইডের থেকে হাজার গুণেরও বেশি ক্ষতিকর । এই গ্যাস ব্যবহারের জেরে বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন ভয়ঙ্কর গতিতে তরান্বিত হয়ছে । এই সমস্যা কতটা গুরুতর তা সাধারণ জনজীবনে হারে হারে টের পাচ্ছেন মানুষ । ফলে সমস্যা সমাধানে 2016 সালে কিগালি শহরে ফের বিশ্বের একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা নতুন করে আলোচনায় বসেন । মন্ট্রিল চুক্তির কিগালি সংশোধনী আনেন ।

আরও পড়ুন: কলকাতায় বাড়ছে ওজোনের মাত্রা, ভিক্টোরিয়ার ক্ষতির আশঙ্কা

এইচএফসি গ্যাসের ব্যবহার ক্রমশ কমিয়ে এনে একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার প্রশ্নে সহমত হয় সব দেশের প্রতিনিধিরা । কাগজে কলমে কিগালি সংশোধনী কার্যকর হয়ে গিয়েছে 2019 থেকেই । বিজ্ঞানকর্মীদের কথায়, বাস্তবে মন্ট্রিল চুক্তি ও কিগালি সংশোধনী কার্যকর হয়ে গেলে বিশ্বে উষ্ণায়ন কমতে পারে অন্তত 0.5 ডিগ্রি সেলসিয়াস । তাই বিশ্ব ওজন দিবসে মন্ট্রিল চুক্তি ও কিগালি সংশোধনী কার্যকর করার দাবি তুলেছেন তাঁরা ।

কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর: ক্ষত বিক্ষত ওজোন স্তর রক্ষায় আজকের দিনে 1987 সালে প্রথম মন্ট্রিল চুক্তি হয় । তাই এই দিনটি প্রতি বছর বিশ্ব ওজোন দিবস হিসেবে পালিত হয় । সূর্যের আলোর অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের জিন বিকৃতি এবং চামড়া ও দেহের অন্যান্য অংশের ক্যানসারের মত মারণ রোগের জন্য দায়ী ৷ এই অতিবেগুণি রশ্মিকে রুখে দেয় ওজোন গ্যাস । তবে বিজ্ঞানের চাকা ঘোরার সঙ্গেই মানব সভ্যতার নানা কর্মকাণ্ডের জেরে ক্রমশ ফুটো হতে থাকছে বায়ুমণ্ডলের এই ওজোন স্তর । যা মানব জীবনে ডেকে আনছে নানা মারণ রোগ ৷ তৈরি করছে বিভিন্ন সমস্যা । প্রভাব পড়ছে জীব জগতে ।

মন্ট্রিল চুক্তি

18-19 শতকের দিকে ঠান্ডা রাখার রেফ্রিজারেটরে ব্যবহৃত হত মিথাইল ক্লোরাইড, এ্যানহাইড্রাস বা জলবিহীন এ্যামোনিয়া এবং সালফার ডাইঅক্সাইড । এরপর ফ্রিজার ও এসির জন্য এ্যামোনিয়ার পাশাপাশি ব্যবহৃত হতে শুরু করে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন গ্যাস বা ফ্রেয়ন । তবে পরবর্তী সময় দেখা যায়, এই গ্যাসগুলো ভূপৃষ্ঠ থেকে 70-80 কিলোমিটার উপরে প্রায় 30 কিলোমিটার চওড়া ওজোন স্তরকে ধীরে ধীরে ফুটো করে দিচ্ছে । সেই সব ছিদ্র ক্রমশ বেড়ে চলেছে । এই স্তর দ্রুত গতিতে ক্ষয়ে যাওয়ার ফলে বায়ুমণ্ডলে বেশ কিছু বড় ওজোন ছিদ্র দেখা দিয়েছে । এই ছিদ্র গোটা মানব সভ্যতার কাছে গভীর সঙ্কট তৈরি করেছে । তাই সঙ্কট মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ 1985-1987 দীর্ঘ দু'বছর যাবত বিস্তারিত আলোচনা করে । আলোচনার শেষে 16 সেপ্টেম্বর 1987 সালে মন্ট্রিল চুক্তি কার্যকর করেন ।

বিকল্প গ্যাসের ব্যবহার

এই আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে রেফ্রিজারেটর, কুলার বা এয়ার কন্ডিশন মেশিনে ওই জাতীয় গ্যাস ব্যবহার বন্ধ করার পদক্ষেপ করে । ঠান্ডা করার বিকল্প গ্যাসের খোঁজে বিজ্ঞানীরা গুরুত্ব দেন । পরবর্তী সময় এসি বা ফ্রিজে হাইড্রোফ্লুরোকার্বন বা এইচএফসি, আইসোবিউটেন, টেট্রাফ্লুরোকার্বন অথবা একেবারে আধুনিকতম পিউরোন গ্যাস ব্যবহার শুরু হয় । এর ফলে ওজোন স্তরের ক্ষত অনেক জায়গায় নিরাময় করাও সম্ভব হয় । যা সামান্য হলেও সঙ্কট মোকাবিলায় ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই দেখছেন বিশ্বের বিজ্ঞানী মহল ।

কিগালি সংশোধনী

তবে বিকল্প গ্যাস ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অন্য বিপদ নজরে আসে । যা মানব সভ্যতায় আরও বেশি প্রভাব ফেলে । সেই বিপদ হল বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন । কারণ হাইড্রোফ্লুরোকার্বন বা এইচএফসির মত গ্যাস ব্যবহারে ওজোন স্তর বাঁচানো গেলেও এই গ্যাস কিন্তু গ্রিন হাউজ গ্যাস হিসাবে কার্বন ডাই অক্সাইডের থেকে হাজার গুণেরও বেশি ক্ষতিকর । এই গ্যাস ব্যবহারের জেরে বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন ভয়ঙ্কর গতিতে তরান্বিত হয়ছে । এই সমস্যা কতটা গুরুতর তা সাধারণ জনজীবনে হারে হারে টের পাচ্ছেন মানুষ । ফলে সমস্যা সমাধানে 2016 সালে কিগালি শহরে ফের বিশ্বের একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা নতুন করে আলোচনায় বসেন । মন্ট্রিল চুক্তির কিগালি সংশোধনী আনেন ।

আরও পড়ুন: কলকাতায় বাড়ছে ওজোনের মাত্রা, ভিক্টোরিয়ার ক্ষতির আশঙ্কা

এইচএফসি গ্যাসের ব্যবহার ক্রমশ কমিয়ে এনে একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার প্রশ্নে সহমত হয় সব দেশের প্রতিনিধিরা । কাগজে কলমে কিগালি সংশোধনী কার্যকর হয়ে গিয়েছে 2019 থেকেই । বিজ্ঞানকর্মীদের কথায়, বাস্তবে মন্ট্রিল চুক্তি ও কিগালি সংশোধনী কার্যকর হয়ে গেলে বিশ্বে উষ্ণায়ন কমতে পারে অন্তত 0.5 ডিগ্রি সেলসিয়াস । তাই বিশ্ব ওজন দিবসে মন্ট্রিল চুক্তি ও কিগালি সংশোধনী কার্যকর করার দাবি তুলেছেন তাঁরা ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.