কলকাতা, 27 জুন: টমেটো 100 টাকা কেজি, বেগুন 100 টাকা কেজি । হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন, কলকাতার বাজারে এখন বাজারে সবজির এমনই চড়া দাম । প্রায় অধিকাংশ সবজি সেঞ্চুরি হাঁকাচ্ছে । এক সপ্তাহ আগেও যেখানে টম্যাটোর দাম ছিল প্রতি কেজি 50 টাকা, সেখানে এক লাফে দাম বেড়ে 100 টাকা ৷ অর্থাৎ, এক সপ্তাহের ব্যবধানে টম্যাটোর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে 100 শতাংশ ৷
কিন্তু এই সময়কালে সবজির এমন দ্বিগুণেরও বেশি দাম থাকার কারণ ঠিক কী ? নিউ মার্কেটের সবজি বিক্রেতা জয়দেব প্রামাণিকের কথায়, "বৃষ্টি বেশ খানিকটা দেরিতে এসেছে । তীব্র দাবদাহে নাজেহাল হচ্ছিলাম আমরা সকলে । ফলে যে সময়টা সবজি চাষের জন্য যেমন আবহাওয়া প্রয়োজন ছিল তেমনটা মেলেনি । যার ফলস্বরূপ ফলন ভালো হয়নি সবজির । তাই চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকায় এক ধাক্কায় বেশ খানিকটা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে । আবার এলাকার খুচরো বাজারগুলোয় বহু জায়গাতে আর একটু বেশি দামের কারণ তাদের পাইকারি বাজার থেকে গাড়ি ভাড়া করে কিনে নিয়ে যাওয়ার বাড়তি খরচ ।"
এই মুহূর্তে বাজারে বড় বেগুন কেজি প্রতি 100 টাকা, ছোট বেগুন 80 টাকা, উচ্ছে 100 টাকা, ঢ্যাঁড়শ 80 থেকে 100 টাকা, পটল কোথাও 40 কোথাও বা 50 থেকে 60 টাকা কেজি । পেঁপে 50 থেকে 60 টাকা, কচু 60 টাকা, লাউ 60 টাকা, শশা 70 থেকে 80 টাকা কেজি । বিনস ও গাজর যথাক্রমে একটু বেশি দাম 110 টাকা, 60 টাকা প্রতি কেজি ।
ক্যাপসিকাম কেজি প্রতি 100 টাকা, ঝিঙে 80 থেকে 90 টাকা, মুলো 60 থেকে 70 টাকা, টমেটো 90 থেকে 100 টাকা, বাঁধাকপি 40 টাকা, বরবটি 80 টাকা, কুমড়ো প্রতি কেজি 25 থেকে 30 টাকা ৷
নজিরবিহীনভাবে দাম বেড়েছে আদা-রসুনের । আদা পৌঁছেছে 250 টাকা প্রতি কেজিতে, রসুন 160 টাকা ৷ দাম বেড়েছে আলুরও ৷ জ্যোতি আলু কেজি প্রতি কেউ 20 টাকা, কেউ 22 টাকা আবার কেউ 24 টাকায় বিক্রি করছেন । চন্দ্রমুখী বিকোচ্ছে 28 থেকে 32 টাকা প্রতি কেজি হিসেবে ।
আরও পড়ুন : মোদি আজ আছে কাল নেই, বিএসএফ-কে স্বাধীনভাবে কাজ করার বার্তা মমতার
পাইকারি হাটের এক বিক্রেতার কথায়, বৃষ্টির পরিমাণের জেরে ফলন যেমন খানিকটা ঘাটতি আছে তেমন অন্যতম কারণ হল পঞ্চায়েত ভোট । এই সময় লেবাররা তাদের স্থানীয় এলাকার যারা পঞ্চায়েতে দাঁড়িয়েছেন তাদের হয়ে কাজকর্মে যুক্ত থাকে । দিনরাত মাঠে গিয়ে খেটে 300 টাকা রোজগার করা তুলনায় মিছিল মিটিংয়ে গিয়ে অপেক্ষাকৃত কম খাটাখাটনি করে 300 টাকা থেকে বেশি টাকা রোজগার হচ্ছে । ফলে হাটে সেই অর্থে এখনও মাল আসছে না। পঞ্চায়েত ভোট মিটলে ফের তারা মাঠে ফিরবে। পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে বলেই আশা করা যায় ।
নবান্নের তৈরির টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য কমল দে জানাচ্ছেন, এবার বৃষ্টি পরিমাণের তুলনায় খুবই কম হয়েছিল সবজি চাষের ক্ষেত্রে । পরবর্তী সময়ে সেচের জলে কিছুটা লাগাম দেওয়া গেলেও খামতি খানিকটা আছে । পাশাপাশি বিভিন্ন বড় বড় সবজির হাটে সেই অর্থে মাল আসছে না । তাই কলকাতার বাজারে খুচরো দোকানপাটে মালিকদের কিনতে হচ্ছে বেশি দরে । তারা বিক্রিও করছে খানিকটা বেশি টাকায় । আশা করা যাচ্ছে দ্রুত পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে ।