কলকাতা, 11 এপ্রিল: বের হল না রফা সূত্র । কাটল না জট । মঙ্গলবার কুড়মি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখ্যসচিবের বৈঠক এক রকম নিষ্ফলাই । গত কয়েকদিন রাজ্যের নানা প্রান্তে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়ায় কুড়মি সমাজ ৷ তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি ছাড়াও সারনা ধর্ম ও কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্তি-সহ একাধিক দাবিতে টানা রেল এবং সড়ক অবরোধের পথে হেঁটেছিলেন কুড়মিরা ৷ রাজ্য সরকারের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত সেই আন্দোলন ওঠে ৷ রাজ্যের তরফে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয় ৷
সেই মতো মঙ্গলবার কুড়মি সমাজের তরফ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নবান্নে পৌঁছে যায় ৷ প্রায় দু'ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক চলে ৷ বৈঠক থেকে বেরিয়ে কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দাবি পূরণের লক্ষ্যে কোনও নির্দিষ্ট আশ্বাস দেওয়া হয়নি । ফলে তারা এই বৈঠককে সফল বলছেন না । এ ক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কেন্দ্রীয় কমিটি ।
এ দিন রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে কুড়মি সমাজের তরফ থেকে যোগ দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সংগঠনের রাজ্য কমিটির সভাপতি রাজেশ মাহাত, সংগঠনের আহ্বায়ক কৌশিক মাহাত ও সদস্য অভিজিত্ মাহাত । একইসঙ্গে ছিলেন আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজি মাহাত এবং কুড়মি সেনার সদস্য সুদীপ মাহাত । এ দিনের বৈঠকের পর রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেওয়া প্রতিনিধিরা জানিয়ে দেন রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে তাঁরা এক রকম খুশি নন । তাঁরা ভেবেছিলেন, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নির্দিষ্ট আশ্বাস পাওয়া যাবে । কিন্তু তা না মেলায় এক রকম হতাশ তাঁরা । বৈঠক শেষে রাজেশ মাহাত বলেন, এ দিনের আলোচনা যথেষ্টই হতাশাব্যঞ্জক ।
কেন্দ্রীয় আদিবাসী মন্ত্রক একাধিক সুনির্দিষ্ট মাপকাঠির ভিত্তিতে 2017 সালে রাজ্যের কাছে কমেন্ট-জাস্টিফিকেশন চেয়েছিল সিআরআই রিপোর্টের উপর । 2017 থেকে 2022 সাল পর্যন্ত কোনও রিপোর্ট পাঠানো হয়নি । এ ক্ষেত্রে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে তা পুরনো । আজ প্রতিনিধিদের তরফ থেকে একটি কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছিল, সে কথাও মেনে নেয়নি রাজ্য ।
প্রসঙ্গত এ দিন এই আলোচনা এক রকম ভেস্তে যাওয়ায় আরও একবার আন্দোলন তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । এই অবস্থায় আগামী দিন গতিপ্রকৃতি কোন পথে যায়, সেদিকেই নজর থাকবে নবান্নের ।
আরও পড়ুন: নবান্নে পৌঁছলেন কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা, নজরে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক