ETV Bharat / state

বোধোদয় হতে কি দেরি হয়ে গেল রাজীব-সব্যসাচীদের ? - Struggle for political existence of turncoat leaders

বঙ্গ বিজেপি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বা সব্যসাচী দত্তের এই ধরনের আলটপকা মন্তব্য মোটেও ভাল ভাবে দেখছে না ৷ সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেই দিয়েছেন, যাঁরা যেতে চান, তাঁরা বিদায় নিন ৷ এদিকে তৃণমূলে ফেরার পথটাও একেবারে মসৃণ নয় ৷

রাজীব-সব্যসাচীদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত
রাজীব-সব্যসাচীদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত
author img

By

Published : Jun 10, 2021, 8:09 PM IST

Updated : Jun 10, 2021, 11:02 PM IST

কলকাতা, 10 জুন : ভোট মিটেছে ৷ গো হারা বিজেপি ৷ একশোর গণ্ডিও পেরোতে পারেনি বিজেপি ৷ মুখ থুবড়ে পড়েছে ৷ বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বার বাংলার তখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ভোটের আগে যে গতিতে নেতা-নেত্রীরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে নাম লিখিয়েছিলেন, এখন তার থেকেও বেশি গতিতে বেসুরো হচ্ছে একটা বড় অংশ ৷

সোনালি গুহ থেকে শুরু করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, শুভ্রাংশু রায় ৷ তালিকাটা এতদিনে বেশ বড় হয়ে গিয়েছে ৷ এখন আর এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা যায় না ৷ ঠিক যেদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে মুখ খুলছেন, ঠিক সেদিনই রাজীবের পোস্ট, 356 ধারার জুজু বাংলার মানুষ ভালভাবে নেবে না ৷

এরপর আসা যাক সব্যসাচীর কথায় ৷ হিন্দিভাষী নেতাদের নাকি গ্রহণ করেননি বাংলার মানুষ ৷ তাঁদের ভাষা বাংলার আমজনতা বুঝতে পারেননি ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উল্টোদিকে কোনও মুখ ছিল না বঙ্গ বিজেপির কাছে ৷

রাজীব বা সব্যসাচী ৷ দু'জনকেই বিজেপি দলবদলের পুরষ্কার দিয়েছিল ৷ টিকিট দিয়েছিল ৷ কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি কেউই ৷ দু'জনেই হেরেছেন ৷ এখন বিজেপিতে বড় কোনও পদেও নেই ৷ শুধু দলের সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবেই রয়েছেন ৷

আরও পড়ুন : মমতা-অভিষেকের বিরুদ্ধে শুভেন্দুকেই বঙ্গ-বিজেপির মুখ করার সম্ভাবনা

সব্যসাচীর কথায়, উনিশের লোকসভা ভোটে প্রচারের মুখ ছিলেন নরেন্দ্র মোদি ৷ তখন সাফল্যও এসেছিল ৷ কিন্তু এবার তো বিধানসভা ভোট ৷ মোদি বা অন্য হিন্দিভাষী কেন্দ্রীয় নেতারা তো আর বাংলায় এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন না ৷

কথাটা ঠিকই বলছেন বেসুরো নেতারা ৷ কিন্তু, বোধদয় হতে এতটা দেরি হয়ে গেল যে ৷ মাস ছয়েক আগে কি তাঁরা এই সহজ বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেননি ? আর এখন এই ধরনের আলটপকা মন্তব্য করে কি নিজেদেরই রাজনৈতিক অবস্থান প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছেন না রাজীব-সব্যসাচীরা ?

রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাশিস মৈত্রর মতে, স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, মানুষের অধিকার... এই সবের বিপরীতে গিয়ে বিজেপির হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থান একটি স্লোগান আছে ৷ একটি দেশ ৷ একটি ভাষা ৷ এটি শিক্ষিত সমাজের একটি বড় অংশ পছন্দ করেন না ৷ এর পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য অনেকে দায়ী করেছেন কেন্দ্রের দূরদর্শিতার অভাবকে । বঙ্গভোটে সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে । কিন্তু সেগুলি বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব বলতে চায় না । কারণ, সেগুলি বলতে গেলে নরেন্দ্র মোদির গায়ে লাগবে ।

আরও পড়ুন : বিজেপিতে থাকলেও ‘অধরা’ মুকুল, সৌগতর মন্তব্যে নতুন জল্পনা

তাছাড়া যেভাবে হিন্দিভাষী নেতারা বাংলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তাতে মনে হয়েছিল তাঁরা বাংলাকে দখল করতে আসছেন ৷ সকাল-বিকেল বিমানে করে আসা-যাওয়া ৷ এগুলি মেনে নিতে পারেননি বাংলার একটি বড় অংশ ৷

বঙ্গীয় বিজেপি কিন্তু রাজীবদের এই ধরনে আলটপকা মন্তব্য মোটেও ভাল ভাবে দেখছে না ৷ সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেই দিয়েছেন, যাঁরা যেতে চান, তাঁরা বিদায় নিন ৷ শোনা যাচ্ছিল, ভোটের পর থেকে নাকি রাজীবকে এলাকাতে দেখাই যাচ্ছিল না ৷ এখন হয়ত সেই দেখা মেলাটা আরও কঠিন হয়ে যাবে ৷ অন্যদিকে তৃণমূলে ফেরার যে আশা তাঁরা করছেন, তাতেও অনেক কিন্তু-কিন্তু ব্যাপার রয়েছে ৷ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে রাজীব বা সব্যসাচীকে আবার ফিরিয়ে নেওয়া হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে ৷

তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেচ দফতরের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ৷ তদন্তের আশ্বাসও দিয়েছেন ৷ আর সেই সময় সেচমন্ত্রী ছিলেন রাজীব ৷ এখন সেই রাজীবকে ফিরিয়ে নেওয়ার আগে অবশ্য দলনেত্রী দু'বার ভাববেন ৷

কলকাতা, 10 জুন : ভোট মিটেছে ৷ গো হারা বিজেপি ৷ একশোর গণ্ডিও পেরোতে পারেনি বিজেপি ৷ মুখ থুবড়ে পড়েছে ৷ বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বার বাংলার তখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ভোটের আগে যে গতিতে নেতা-নেত্রীরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে নাম লিখিয়েছিলেন, এখন তার থেকেও বেশি গতিতে বেসুরো হচ্ছে একটা বড় অংশ ৷

সোনালি গুহ থেকে শুরু করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, শুভ্রাংশু রায় ৷ তালিকাটা এতদিনে বেশ বড় হয়ে গিয়েছে ৷ এখন আর এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা যায় না ৷ ঠিক যেদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে মুখ খুলছেন, ঠিক সেদিনই রাজীবের পোস্ট, 356 ধারার জুজু বাংলার মানুষ ভালভাবে নেবে না ৷

এরপর আসা যাক সব্যসাচীর কথায় ৷ হিন্দিভাষী নেতাদের নাকি গ্রহণ করেননি বাংলার মানুষ ৷ তাঁদের ভাষা বাংলার আমজনতা বুঝতে পারেননি ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উল্টোদিকে কোনও মুখ ছিল না বঙ্গ বিজেপির কাছে ৷

রাজীব বা সব্যসাচী ৷ দু'জনকেই বিজেপি দলবদলের পুরষ্কার দিয়েছিল ৷ টিকিট দিয়েছিল ৷ কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি কেউই ৷ দু'জনেই হেরেছেন ৷ এখন বিজেপিতে বড় কোনও পদেও নেই ৷ শুধু দলের সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবেই রয়েছেন ৷

আরও পড়ুন : মমতা-অভিষেকের বিরুদ্ধে শুভেন্দুকেই বঙ্গ-বিজেপির মুখ করার সম্ভাবনা

সব্যসাচীর কথায়, উনিশের লোকসভা ভোটে প্রচারের মুখ ছিলেন নরেন্দ্র মোদি ৷ তখন সাফল্যও এসেছিল ৷ কিন্তু এবার তো বিধানসভা ভোট ৷ মোদি বা অন্য হিন্দিভাষী কেন্দ্রীয় নেতারা তো আর বাংলায় এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন না ৷

কথাটা ঠিকই বলছেন বেসুরো নেতারা ৷ কিন্তু, বোধদয় হতে এতটা দেরি হয়ে গেল যে ৷ মাস ছয়েক আগে কি তাঁরা এই সহজ বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেননি ? আর এখন এই ধরনের আলটপকা মন্তব্য করে কি নিজেদেরই রাজনৈতিক অবস্থান প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছেন না রাজীব-সব্যসাচীরা ?

রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাশিস মৈত্রর মতে, স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, মানুষের অধিকার... এই সবের বিপরীতে গিয়ে বিজেপির হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থান একটি স্লোগান আছে ৷ একটি দেশ ৷ একটি ভাষা ৷ এটি শিক্ষিত সমাজের একটি বড় অংশ পছন্দ করেন না ৷ এর পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য অনেকে দায়ী করেছেন কেন্দ্রের দূরদর্শিতার অভাবকে । বঙ্গভোটে সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে । কিন্তু সেগুলি বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব বলতে চায় না । কারণ, সেগুলি বলতে গেলে নরেন্দ্র মোদির গায়ে লাগবে ।

আরও পড়ুন : বিজেপিতে থাকলেও ‘অধরা’ মুকুল, সৌগতর মন্তব্যে নতুন জল্পনা

তাছাড়া যেভাবে হিন্দিভাষী নেতারা বাংলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তাতে মনে হয়েছিল তাঁরা বাংলাকে দখল করতে আসছেন ৷ সকাল-বিকেল বিমানে করে আসা-যাওয়া ৷ এগুলি মেনে নিতে পারেননি বাংলার একটি বড় অংশ ৷

বঙ্গীয় বিজেপি কিন্তু রাজীবদের এই ধরনে আলটপকা মন্তব্য মোটেও ভাল ভাবে দেখছে না ৷ সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেই দিয়েছেন, যাঁরা যেতে চান, তাঁরা বিদায় নিন ৷ শোনা যাচ্ছিল, ভোটের পর থেকে নাকি রাজীবকে এলাকাতে দেখাই যাচ্ছিল না ৷ এখন হয়ত সেই দেখা মেলাটা আরও কঠিন হয়ে যাবে ৷ অন্যদিকে তৃণমূলে ফেরার যে আশা তাঁরা করছেন, তাতেও অনেক কিন্তু-কিন্তু ব্যাপার রয়েছে ৷ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে রাজীব বা সব্যসাচীকে আবার ফিরিয়ে নেওয়া হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে ৷

তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেচ দফতরের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ৷ তদন্তের আশ্বাসও দিয়েছেন ৷ আর সেই সময় সেচমন্ত্রী ছিলেন রাজীব ৷ এখন সেই রাজীবকে ফিরিয়ে নেওয়ার আগে অবশ্য দলনেত্রী দু'বার ভাববেন ৷

Last Updated : Jun 10, 2021, 11:02 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.