ETV Bharat / state

প্রতিযোগিতা মেটার দু'দিন পর এল চিঠি, মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হারাল পড়ুয়ারা

10 অগাস্ট থেকে 25 অগাস্ট পর্যন্ত ISRO ও MyGov.in যৌথ উদ্যোগে একটি কুইজ় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল । যেখানে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করতে পারত । অনলাইন এই প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত দু'জন পড়ুয়ার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ISRO-র বেঙ্গালুরু সেন্টারে চন্দ্রযান 2-র চাঁদে নামা সরাসরি দেখার সুযোগ ছিল। কিন্তু সমগ্র শিক্ষা মিশনের পশ্চিমবঙ্গের স্টেট প্রজেক্ট ডিরেক্টর এই বিষয়টি জানিয়ে ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসারদের চিঠি দিয়েছেন গত 27 অগাস্ট । অর্থাৎ সময়সীমার দু'দিন পর । কিন্তু প্রতিযোগিতার দিন পার হয়ে যাওয়ার পর প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানানোর অর্থ কী? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে ।

isro
author img

By

Published : Aug 31, 2019, 11:08 PM IST

Updated : Sep 1, 2019, 6:30 PM IST

কলকাতা, 31 অগাস্ট : 10 অগাস্ট থেকে 25 অগাস্ট পর্যন্ত ISRO ও MyGov.in যৌথ উদ্যোগে একটি কুইজ় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল । যেখানে ক্লাস এইট থেকে ক্লাস টেনের পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করতে পারত । অনলাইন এই প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত দু'জন পড়ুয়ার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ISRO-র বেঙ্গালুরু সেন্টারে চন্দ্রযান 2-র চাঁদে নামা সরাসরি দেখার সুযোগ ছিল । কিন্তু সমগ্র শিক্ষা মিশনের পশ্চিমবঙ্গের স্টেট প্রোজেক্ট ডিরেক্টর এই বিষয়টি জানিয়ে ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসারদের চিঠি দিয়েছেন গত 27 অগাস্ট । অর্থাৎ সময়সীমার দু'দিন পর । কিন্তু প্রতিযোগিতার দিন পার হয়ে যাওয়ার পর প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানানোর অর্থ কী? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে । শিক্ষা মহলের একাংশের বক্তব্য, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, লজ্জাজনক ও নিন্দাজনক । সঠিক সময়ে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে না জানানোয় অনেক পড়ুয়াই বঞ্চিত হল বলে মনে করছেন তাঁরা ।

27 অগাস্টের ওই চিঠি সমগ্র শিক্ষা মিশনের ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসারদের উদ্দেশে পাঠিয়েছিলেন সমগ্র শিক্ষা মিশনের স্টেট প্রোজেক্ট ডিরেক্টর আর. বিমলা (IAS) । সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, "আপনারা সবাই জানেন 2019 সালের 22 জুলাই চন্দ্রযান-2 লঞ্চ করেছে ISRO । চন্দ্রযান-2-র বিক্রম ল্যান্ডার 7 সেপ্টেম্বর চাঁদে নামবে বলে মনে করা হচ্ছে । এপ্রসঙ্গে আমায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আপনাদের জানাতে যে ISRO 10 অগাস্ট থেকে একটি অনলাইন কুইজ় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে । এটি MyGov.in-এর সঙ্গে আমাদের যৌথ উদ্যোগ । এই কুইজ়ে অংশগ্রহণ করার জন্য পড়ুয়াদের https://quiz.mygov.in ওয়েবসাইটে ভিজ়িট করতে হবে ।" কিন্তু চিঠিটি পৌঁছানোর আগেই এই প্রতিযোগিতা শেষ হয়ে যায় । ফলে প্রতিযোগিতার বিষয় জানাতেই পারেনি স্কুলগুলি । এতে পড়ুয়ারা বঞ্চিত হল বলেই মনে করছে শিক্ষক মহলের একাংশ ।

2
দেখুন ছবি

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, "ISRO এই কুইজ়টা কন্ডাক্ট করছে 10-25 অগাস্ট । অথচ নোটিফিকেশনটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমগ্র শিক্ষা মিশন থেকে এল 27 অগাস্ট । যেখানে বাংলার কোনও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীই অংশগ্রহণ করতে পারল না । এর একমাত্র কারণ হল প্রশাসনিক ব্যর্থতা । যদি আমি দেখতাম যে আগেই এই নোটিফিকেশন ইশু হয়েছে কিন্তু স্কুলের ছাত্ররা গেল না অথবা পারল না তখন সেটা স্কুলের দায়িত্ব । কিন্তু এখন এই চিঠি নিয়ে কী হবে? কোনও স্কুলের কোনও ছাত্র-ছাত্রী কি অংশগ্রহণ করতে পারবে? পারবে না । সুতরাং এই চিঠি পাঠানোর কোনও যুক্তি আছে বলেই আমার মনে হয় না । এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, লজ্জাজনক এবং নিন্দাজনক ।"

এপ্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, "যাতে কেউ অংশগ্রহণ করতে না পারে তার চেষ্টা করা হল অফিশিয়ালি । এটা বড় একটা সুযোগ ছিল । কত ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করতে পারত । ISRO-র অ্যাক্টিভিটি সম্পর্কে জানতে পারত । চন্দ্রযান কী করবে, কবে চাঁদে নামবে সেই সম্পর্কে পড়াশোনা হত । সচেতনতার মাত্রাবৃদ্ধি পেত এবং সর্বোপরি বিজ্ঞানমনস্কতার প্রচার হত । কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হল । সরকার যদি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এই কাজগুলো করে তাহলে তো বুঝতে হবে সরকার চালানোর যে পদ্ধতি সেটার সঙ্গে তাঁরা সম্পৃক্ত নয় । মানুষের জন্য নয় তারা ধান্দাবাজির জন্য সরকার চালায় ।"

1
দেখুন ছবি

একইভাবে এই চিঠি আগে এলে ভালো হত বলেই মনে করছেন পূর্ব মেদিনীপুরের সাবাজপুট সম্বোধী শিক্ষাতীর্থের প্রধান শিক্ষক নন্দীশ নিয়োগী । তিনি বলেন, "ওঁরাও পরে জানতে পেরেছেন কি না জানি না । আমাদের যদি আগে জানানো হত, আমরা চেষ্টা করতাম । হয়তো কোনওভাবে কোথাও যোগাযোগের অভাব থেকে গেছে । সেটা হওয়াটাও বাঞ্ছনীয় ছিল না । ঠিক সময়ে চিঠি এলে বাচ্চারা অবশ্যই উৎসাহিত হত । একটু আগে জানালে ভালো হত ।" এপ্রসঙ্গে বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, "না, আমরা জানাতে পারিনি ছাত্রীদের । যখন দেখেছি, তখন শেষ হয়ে গেছে । যা হয়নি, তা হয়নি । সেটা ভেবে আর লাভ নেই ।"

কিন্তু, কেন 25 অগাস্ট প্রতিযোগিতা শেষ হয়ে যাওয়ার পর 27 অগাস্ট চিঠি পাঠানো হল? সেবিষয়ে জানতে আর. বিমলার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয় । কিন্তু তিনি ETV ভারতের প্রতিনিধির পরিচয় শোনামাত্র ফোন কেটে দেন ।

কলকাতা, 31 অগাস্ট : 10 অগাস্ট থেকে 25 অগাস্ট পর্যন্ত ISRO ও MyGov.in যৌথ উদ্যোগে একটি কুইজ় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল । যেখানে ক্লাস এইট থেকে ক্লাস টেনের পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করতে পারত । অনলাইন এই প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত দু'জন পড়ুয়ার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ISRO-র বেঙ্গালুরু সেন্টারে চন্দ্রযান 2-র চাঁদে নামা সরাসরি দেখার সুযোগ ছিল । কিন্তু সমগ্র শিক্ষা মিশনের পশ্চিমবঙ্গের স্টেট প্রোজেক্ট ডিরেক্টর এই বিষয়টি জানিয়ে ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসারদের চিঠি দিয়েছেন গত 27 অগাস্ট । অর্থাৎ সময়সীমার দু'দিন পর । কিন্তু প্রতিযোগিতার দিন পার হয়ে যাওয়ার পর প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানানোর অর্থ কী? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে । শিক্ষা মহলের একাংশের বক্তব্য, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, লজ্জাজনক ও নিন্দাজনক । সঠিক সময়ে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে না জানানোয় অনেক পড়ুয়াই বঞ্চিত হল বলে মনে করছেন তাঁরা ।

27 অগাস্টের ওই চিঠি সমগ্র শিক্ষা মিশনের ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসারদের উদ্দেশে পাঠিয়েছিলেন সমগ্র শিক্ষা মিশনের স্টেট প্রোজেক্ট ডিরেক্টর আর. বিমলা (IAS) । সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, "আপনারা সবাই জানেন 2019 সালের 22 জুলাই চন্দ্রযান-2 লঞ্চ করেছে ISRO । চন্দ্রযান-2-র বিক্রম ল্যান্ডার 7 সেপ্টেম্বর চাঁদে নামবে বলে মনে করা হচ্ছে । এপ্রসঙ্গে আমায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আপনাদের জানাতে যে ISRO 10 অগাস্ট থেকে একটি অনলাইন কুইজ় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে । এটি MyGov.in-এর সঙ্গে আমাদের যৌথ উদ্যোগ । এই কুইজ়ে অংশগ্রহণ করার জন্য পড়ুয়াদের https://quiz.mygov.in ওয়েবসাইটে ভিজ়িট করতে হবে ।" কিন্তু চিঠিটি পৌঁছানোর আগেই এই প্রতিযোগিতা শেষ হয়ে যায় । ফলে প্রতিযোগিতার বিষয় জানাতেই পারেনি স্কুলগুলি । এতে পড়ুয়ারা বঞ্চিত হল বলেই মনে করছে শিক্ষক মহলের একাংশ ।

2
দেখুন ছবি

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, "ISRO এই কুইজ়টা কন্ডাক্ট করছে 10-25 অগাস্ট । অথচ নোটিফিকেশনটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমগ্র শিক্ষা মিশন থেকে এল 27 অগাস্ট । যেখানে বাংলার কোনও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীই অংশগ্রহণ করতে পারল না । এর একমাত্র কারণ হল প্রশাসনিক ব্যর্থতা । যদি আমি দেখতাম যে আগেই এই নোটিফিকেশন ইশু হয়েছে কিন্তু স্কুলের ছাত্ররা গেল না অথবা পারল না তখন সেটা স্কুলের দায়িত্ব । কিন্তু এখন এই চিঠি নিয়ে কী হবে? কোনও স্কুলের কোনও ছাত্র-ছাত্রী কি অংশগ্রহণ করতে পারবে? পারবে না । সুতরাং এই চিঠি পাঠানোর কোনও যুক্তি আছে বলেই আমার মনে হয় না । এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, লজ্জাজনক এবং নিন্দাজনক ।"

এপ্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, "যাতে কেউ অংশগ্রহণ করতে না পারে তার চেষ্টা করা হল অফিশিয়ালি । এটা বড় একটা সুযোগ ছিল । কত ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করতে পারত । ISRO-র অ্যাক্টিভিটি সম্পর্কে জানতে পারত । চন্দ্রযান কী করবে, কবে চাঁদে নামবে সেই সম্পর্কে পড়াশোনা হত । সচেতনতার মাত্রাবৃদ্ধি পেত এবং সর্বোপরি বিজ্ঞানমনস্কতার প্রচার হত । কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হল । সরকার যদি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এই কাজগুলো করে তাহলে তো বুঝতে হবে সরকার চালানোর যে পদ্ধতি সেটার সঙ্গে তাঁরা সম্পৃক্ত নয় । মানুষের জন্য নয় তারা ধান্দাবাজির জন্য সরকার চালায় ।"

1
দেখুন ছবি

একইভাবে এই চিঠি আগে এলে ভালো হত বলেই মনে করছেন পূর্ব মেদিনীপুরের সাবাজপুট সম্বোধী শিক্ষাতীর্থের প্রধান শিক্ষক নন্দীশ নিয়োগী । তিনি বলেন, "ওঁরাও পরে জানতে পেরেছেন কি না জানি না । আমাদের যদি আগে জানানো হত, আমরা চেষ্টা করতাম । হয়তো কোনওভাবে কোথাও যোগাযোগের অভাব থেকে গেছে । সেটা হওয়াটাও বাঞ্ছনীয় ছিল না । ঠিক সময়ে চিঠি এলে বাচ্চারা অবশ্যই উৎসাহিত হত । একটু আগে জানালে ভালো হত ।" এপ্রসঙ্গে বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, "না, আমরা জানাতে পারিনি ছাত্রীদের । যখন দেখেছি, তখন শেষ হয়ে গেছে । যা হয়নি, তা হয়নি । সেটা ভেবে আর লাভ নেই ।"

কিন্তু, কেন 25 অগাস্ট প্রতিযোগিতা শেষ হয়ে যাওয়ার পর 27 অগাস্ট চিঠি পাঠানো হল? সেবিষয়ে জানতে আর. বিমলার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয় । কিন্তু তিনি ETV ভারতের প্রতিনিধির পরিচয় শোনামাত্র ফোন কেটে দেন ।

Intro:কলকাতা, ৩১ অগাস্ট: গত ১০ থেকে ২৫ অগাস্ট পর্যন্ত ISRO MyGov.in-এর সঙ্গে কো-অর্ডিনেশনে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। যেখানে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করতে পারত। অনলাইন এই প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত দু'জন পড়ুয়ার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ISRO-র বেঙ্গালুরু সেন্টারে চন্দ্রযান-২ এর চাঁদে ল্যান্ডিং লাইভ দেখার সুযোগ ছিল। কিন্তু, আশ্চর্যজনকভাবে সমগ্র শিক্ষা মিশনের পশ্চিমবঙ্গের স্টেট প্রজেক্ট ডিরেক্টর এই বিষয়টি জানিয়ে ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসারদের চিঠি দিয়েছেন গত ২৭ অগাস্ট। প্রতিযোগিতার শেষ দিন ২৫ অগাস্ট পার হয়ে যাওয়ার পর প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানানোর অর্থ কী? প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে। শিক্ষা মহলের একাংশের বক্তব্য, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, লজ্জাজনক ও নিন্দাজনক। সময়ে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে না জানানোয় অনেক পড়ুয়াই অংশগ্রহণ করার থেকে বঞ্চিত হল বলে মনে করছেন তাঁরা।
Body:২৭ অগাস্টের ওই চিঠি সমগ্র শিক্ষা মিশনের ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসারদের উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছিলেন সমগ্র শিক্ষা মিশনের স্টেট প্রজেক্ট ডিরেক্টর আর. বিমলা (IAS)। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনারা সবাই জানেন ২০১৯ সালের ২২ জুলাই চন্দ্রযান-২ লঞ্চ করেছে ISRO। চন্দ্রযান-২-এর বিক্রম ল্যান্ডার ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদে ল্যান্ড করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে আমায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আপনাদের জানাতে যে, ISRO ১০ অগাস্ট থেকে একটি অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে MyGov.in-এর সঙ্গে কো-অর্ডিনেশনে। ক্লাস এইট থেকে টেনের পড়ুয়াদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ২ জন ISRO-র বেঙ্গালুরু সেন্টারে আমন্ত্রণ পাবে। সেখানে তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চন্দ্রযান-২-এর ল্যান্ডিং লাইভ দেখতে পাবে। এই কুইজে অংশগ্রহণ করার জন্য পড়ুয়াদের https://quiz.mygov.in ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। এই বার্তাটি সব স্কুলের কাছে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছিল চিঠিতে, যাতে ক্লাস এইট থেকে টেনের সর্বোচ্চ সংখ্যক পড়ুয়া এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারে।

ক্লাস এইট থেকে ট্রেনের সর্বোচ্চ সংখ্যক পড়ুয়ারা যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে উদ্দেশ্যে পাঠানো চিঠিটি স্কুলগুলির কাছে বেশ দেরিতেই পৌঁছেছে বলা যেতে পারে। কারণ ২৭ আগস্টের এই চিঠিটিতে যে প্রতিযোগিতার কথা বলা হয়েছে তা ১০ অগাস্ট থেকে শুরু হয়ে ২৫ অগাস্ট পর্যন্ত হয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তে প্রতিযোগিতার বিষয় সময় জানাতে পারেনি স্কুলগুলি। এতে পড়ুয়ারা বঞ্চিত হল বলেই মনে করছে শিক্ষক মহলের একাংশ।

মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, "ISRO এই কুইজটা কন্ডাক্ট করছে ১০-২৫ অগাস্ট। অথচ, নোটিফিকেশনটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমগ্র শিক্ষা মিশন থেকে হল ২৭ অগাস্ট। যেখানে বেঙ্গলের স্কুলের কোনও ছাত্র-ছাত্রীই অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এটা কেবলমাত্র প্রশাসনিক ব্যক্তিদের ব্যর্থতার জন্য। আর কোনও কারণ নয়। যদি আমি দেখতাম যে, আগেই এই নোটিফিকেশনটা ইশু করা হয়েছে কিন্তু স্কুলের ছাত্ররা গেল না, পারল না। সেটাতো স্কুলের ভূমিকা। কিন্তু, এখন স্কুলগুলো এটাকে নিয়ে কী করবে? কোনও স্কুলের কোনও ছাত্র কি অংশগ্রহণ করতে পারবে? পারবে না। কারণ, ১০ থেকে ২৫ অগাস্ট চলে গেছে অলরেডি। সুতরাং, এটা পাঠানোর কোনও যুক্তি আছে বলেই আমার মনে হয় না। এবং এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, লজ্জাজনক এবং নিন্দাজনক।"

পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, "যাতে কেউ অংশগ্রহণ করতে না পারে সেটাই চেষ্টা করা হল অফিশিয়ালি। এটা বড় একটা সুযোগ ছিল, কতগুলো ছেলে অংশগ্রহণ করত, ISRO-র অ্যাক্টিভিটি সম্পর্কে জানত, চন্দ্রযান কী করবে, কবে ল্যান্ড করবে সেই সম্পর্কে পড়াশোনা হতো, সচেতনতার লেভেল বাড়ত, বিজ্ঞান মনস্কতা প্রচার হতো। ইচ্ছাকৃতভাবে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হল। সরকার যদি ভিন্ডিক্টিভ হয়ে এই কাজগুলো করে তাহলে তো বুঝতে হবে সরকার চালানোর যে পদ্ধতি সেটার সঙ্গে তাঁরা সম্পৃক্ত নন। মানুষের জন্য নয়, ধান্দাবাজির জন্য সরকার চালায়।"

এই তথ্য আগে এলে ভালো হতো বলেই মনে করছেন পূর্ব মেদিনীপুরের সাবাজপুট সম্বোধী শিক্ষাতীর্থের প্রধান শিক্ষক নন্দীশ নিয়োগী। তিনি বলেন, "ওনারাও পরে ইনফর্মড হয়েছেন কিনা জানি না। আমাদের যদি আগে জানানো হতো তাহলে আমরা চেষ্টা করতাম। হয়তো কোনোভাবে কোথাও কমিউনিকেশনের অভাব থেকে গেছে। সেটা হওয়াটা বাঞ্ছনীয় ছিল না। বাচ্চারা অবশ্যই উৎসাহিত হতো। একটু আগে জানালে ভালো হতো।" বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের টিচার ইনচার্জ শাশ্বতী অধিকারী বলেন, "না আমরা জানাতে পারিনি বাচ্চাদের। লেটে দেখেছি, তখন শেষ হয়ে গেছিল। যা হয়নি তা হয়নি। সেটা ভেবে আর লাভ নেই।" কেন ২৫ অগাস্ট প্রতিযোগিতা শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানানোর চিঠি ২৭ অগাস্ট পাঠানো হল? সেই বিষয়ে জানতে আর. বিমলার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে ETV Bharat-এর প্রতিনিধির পরিচয় শোনামাত্র ফোন কেটে দেন।


Conclusion:
Last Updated : Sep 1, 2019, 6:30 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.