কলকাতা, 20 মার্চ : রাজ্যের কোরোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় ত্রাণ তহবিল ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । বিনামূল্যে চাল, চিকিৎসকদের পুজোর পরে বাড়তি ছুটির প্রস্তাব সহ একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী । পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে কর্মী সংখ্যা 50 শতাংশে নামিয়ে এনে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কাজ চালানোর প্রস্তাবও দিলেন তিনি ।
ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে কোরোনা আতঙ্ক থানা বসিয়েছে । মাত্র দিন তিনেকের মধ্যে রাজ্যের রাজধানী শহর কলকাতায় কোরোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি দু'জন । স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক বহুগুণ বেড়েছে । পরিস্থিতি জটিল হয়েছে কোরোনা আক্রান্ত এক যুবকের মা রাজ্য সরকারের শীর্ষপদে কর্মরত হওয়ায় এবং তাঁর বেশ কিছু অসচেতনমূলক পদক্ষেপের জন্য । ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । পরিস্থিতি যত জটিল হচ্ছে , ততই ফাঁকা হচ্ছে বাজার-শপিং মল থেকে শুরু করে ট্রেন, বাস । নিত্যযাত্রীর সংখ্যাও কমছে । রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় সবজি বাজারে ক্রেতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার ঘটনা চোখে পড়েছে । কমে গিয়েছে বিক্রেতার সংখ্যাও । মানুষ আতঙ্কিত হয়ে গৃহবন্দী থাকার প্রাথমিক শর্ত হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য মজুত করতে শুরু করেছে । এবার যাতে রাজ্যের সাধারণ মানুষের কোনও সমস্যা না হয়, তারজন্য নূন্যতম খাদ্যপণ্য অর্থাৎ চাল বিনামূল্যে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী । জানালেন, 2 টাকা কেজি দরে চাল এবার বিনামূল্যে দেওয়া হবে রাজ্যের মানুষকে । 7 লাখ 85 হাজার রাজ্যবাসী আগামী ছ'মাসের জন্য এই সুবিধা পাবেন ।
ইতিমধ্যেই সরকারি অফিসে ছুটির সময় একঘণ্টা এগিয়ে এনেছে নবান্ন । আজ মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির কাছেও কর্মীসংখ্যা কমিয়ে কাজ করার প্রস্তাব দিলেন । তাঁর প্রস্তাব পরিস্থিতি যতদিন না স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন যেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি কর্মী সংখ্যা যেন 50 শতাংশ নামিয়ে আনে । একইসঙ্গে তাঁর প্রস্তাব পুরো বিষয়টি যেন হয় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করা হয় । অর্থাৎ আজ যে 50 শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকবেন, আগামী দিন যেন বাকি 50 শতাংশ কর্মী অফিসে আসেন ।
চিকিৎসকদের কাছেও এদিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে বার্তা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী । বর্তমানে রাজ্যের হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে কার্যত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে । কোনও বিশেষ এবং গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছাড়া চিকিৎসক-নার্স-সহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীর ছুটি বাতিল করা হচ্ছে । সেকথা স্মরণ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা চিকিৎসক-নার্স-সহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে পুজোর পর বিশেষ ছুটি দেবে রাজ্য সরকার ।