কলকাতা, 11 জুন : রাজনীতিতে যে কেউ চিরবন্ধু বা চিরশত্রু হয় না, তা বিলক্ষণ বোঝেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । অগাধ রাজনৈতিক দূরদর্শিতা । যিনি কাজের মানুষ, তাঁর কদর বোঝেন । তাই কাজের মানুষদের সঙ্গে কখনও বিমাতৃসুলভ আচরণ করেন না মমতা ।
উদাহরণ ভুরি ভুরি রয়েছে । সুব্রত মুখোপাধ্যায় । কংগ্রেস ছেড়ে মমতার দলে এসেছিলেন । 2000 সালে তৃণমূলের হয়ে কলকাতা পৌরনিগমের ভোটে লড়েন । মেয়র হন । এরপর 2001 সালে বিধায়ক । কিন্তু 2005 সালে বনিবনা না হওয়ায় মমতার সঙ্গ ছেড়ে ফের কংগ্রেসে যান । এরপর 2010 সালে আবার তৃণমূলে ।
অভিজ্ঞ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কদর ভালই বোঝেন মমতা । তাই যতই তাঁর জার্সিবদলের রেকর্ড থাক, যতই আজ তৃণমূল তো কাল কংগ্রেস হোন... কোনওদিক তাঁকে অবহেলা করেননি । সবসময় সামনের সারিতে রেখেছেন । মন্ত্রী করেছেন । মমতার তৃতীয় ইনিংসেও মন্ত্রী সুব্রত । পঞ্চায়েতের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর তাঁর হাতে ৷
অজিত পাঁজা কিংবা নির্বেদ রায়ের মতো উদাহরণও রয়েছে । একবার তো অজিত পাঁজা ভোটে হেরে বলে বসেছিলেন মমতার মাথার ঠিক নেই । তৃণমূল ছেড়েও দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু তৃণমূল সুপ্রিমো বরাবর অজিতকে ‘দাদা-দাদা’ বলেই সম্বোধন করতেন । কোথাও কোনও ক্ষোভ রাখেননি মনে । খুব পছন্দও করতেন অজিত পাঁজাকে ।
আরও পড়ুন : হাজার ওয়াটের আলোর মধ্যেও নিষ্প্রভ মুকুল...
সৌগত রায় । কংগ্রেসে থাকাকালীন তৃণমূলের জন্মলগ্নে মমতার বিপরীতে ভোটে লড়েছিলেন । পরে তৃণমূলে আসেন । যত দিন গড়িয়েছে, মমতার সঙ্গে সৌগতর সম্পর্ক তত মধুর হয়েছে ।
ইতিহাস বলছে, যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য সম্মান দিতে দ্বিতীয়বার ভাবেন না মমতা । আর আজ যখন, মুকুল রায়ের ঘর ওয়াপসিতে হাজার রকম প্রশ্ন উঠছে... কী দায়িত্ব দেওয়া হবে মুকুলকে... কীভাবে তাঁকে ব্যবহার করা হবে... তখন এই ইতিহাস আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে । সুতরাং, অতীতের কথা দেখলে, মুকুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে খুব একটা চিন্তিত হওয়ার কথা নয় ।
মুকুল রায় যেমন দক্ষ সংগঠক হিসেবে তৃণমূলে এর আগে নিজেকে প্রমাণ করেছেন, তারপর মমতা তাঁর প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ নিশ্চয়ই করবেন না ।