কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: গত তিন দিনে রাজ্যে চার কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আচমকাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে শীতকালীন শস্যের চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আর এর ফলেই গত তিন দিনে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন তিন কৃষক।
এর মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার একজন যেমন রয়েছেন একইভাবে হুগলির খানাকুল এবং আরামবাগের দুইজন কৃষকের নাম রয়েছে। পাশাপাশি বর্ধমানের পূর্বস্থলীতেও একজনের আত্মহত্যা খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রত্যেক কৃষকের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মৃত্যুর কারণ ঋণের বোঝা। আর এই অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলি ময়দানে নেমে পড়েছে। তবে সোমবার রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে একটিও কৃষক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তিনি রাজ্যের কৃষকেরা আত্মহাননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন, কোনওভাবেই এই কথা মানতে রাজি নন। বরং তিনি কৃষক মৃত্যু নিয়ে প্রচারে বিরোধী কারসাজি দেখছেন।
নবান্নে সোমবার তিনি বলেন, "এরাজ্যে কোনও কৃষকের আত্মহতার ঘটনা ঘটেনি। তবে যেখানে যেখানে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে বলা হচ্ছে, তা নিয়ে সরকার তদন্ত করছে।" এদিন নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর বক্তব্য, "রাজ্য সরকার রাজ্যের সমস্ত কৃষকদের জন্য ফসল বীমা করেছে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তার প্রিমিয়াম দেওয়া হয়। এরপর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ক্ষতি হলে দু'লক্ষ টাকা পর্যন্ত সাহায্য মেলে।" তাঁর মতে, রাজ্য সরকার কৃষকদের জন্য যে সমস্ত পরিকল্পনা নিয়েছে তাতে কোনও কৃষক আত্মহত্যা করতে পারে না।
এদিন কৃষক মৃত্যু নিয়ে প্রচারের বিরোধীদের হাত রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে কৃষক মৃত্যুকে ইস্যু করে রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি দাবি তাঁর। কিন্তু এই সরকার কৃষক দরদী। এই রাজনীতি করে কোন লাভ হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিন মন্ত্রী বলেন, "রাজ্যে এক কোটি এক লক্ষ 40 হাজার কৃষক এই মুহূর্তে ফসল বীমার আওতাভুক্ত। তারা দুই লক্ষ টাকা করে এমনিতেই ক্ষতিপূরণ পাবেন। সেই কৃষকেরা কেন আত্মহননের পথ বেছে নেবেন।" এদিন মন্ত্রী এও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে যেখানে যেখানে শীতকালীন ফসলের ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের আধিকারিকেরা যাচ্ছেন। তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পর্যালোচনা করছেন। এই অবস্থায় দ্রুত চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের হাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণ যাতে তুলে দেওয়া যায় তার চেষ্টা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: