কলকাতা, 3 এপ্রিল: এবার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে মতপ্রকাশ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র । জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর, তাঁর জন্য কয়েকটি প্রশ্ন রাখেন সোমেনবাবু । "অতীতেও প্রধানমন্ত্রী থালা বাজানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন দেশবাসীকে । সেটা ছিল বিকেলবেলা । এবার রাত্রিকে কেন বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী?" প্রশ্ন কংগ্রেস সভাপতির ।
আজ এক বিবৃতিতে সোমেন মিত্রের প্রশ্ন, "প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনটা অগ্রাধিকার ? থালা বাজানো, মোমবাতি জ্বালানো, না কি দেশের অর্থনীতি এবং গরিব মানুষকে বাঁচানো? আগে থেকে পরিকল্পনা না করে লকডাউন ঘোষণা করছেন প্রধানমন্ত্রী । এর আগেই প্রধানমন্ত্রীর ভুল সিদ্ধান্ত ছিল নোটবন্দী । ত্রুটিপূর্ণ GST চালু করে দেশের অর্থনীতিকে খাদের কিনারায় নিয়ে এসেছেন । প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে দেশের মানুষ কীভাবে বাঁচবে তার কোনও উল্লেখ নেই ।" তিনি আরও বলেন, "পরিযায়ী শ্রমিকদের আগেই তাঁদের বাড়ি চলে যেতে বলতে পারতেন । তাহলে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে গরিব মানুষগুলোকে বিষ দিয়ে স্নান করাতে হত না । প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই গরিব মানুষগুলো, তাঁদের বিরুদ্ধ অমানবিক কাজের জন্য একটু সহানুভূতি আশা করেছিলেন । সহানুভূতি পেলেন না । প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে তাঁদের সম্পর্কে কোনও উল্লেখ নেই । যাঁরা মাইলের পর মাইল হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়ে রাস্তায় মারা গেলেন তাঁদের পরিবারের উদ্দেশ্যেও কিছু বললেন না প্রধানমন্ত্রী । আশা ছিল তিনি হয়তো ন্যায় প্রকল্পের মতো কিছু ঘোষণা করবেন, যাতে গরিব মানুষের ব্যাঙ্কের খাতায় সরাসরি অর্থ পৌঁছায় । সে বিষয়ে কোনও উল্লেখই রইল না তাঁর বক্তব্যে ।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে সোমেন মিত্র বলেন, "বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী এই দেশে কোরোনা ভাইরাস শনাক্ত করার পর্যাপ্ত পরীক্ষা কোথায় করা হচ্ছে ? তার জন্য পরিকাঠামো কোথায় ? সেইসব বিষয়েগুলি নিয়েও কোনও কথা বললেন না নরেন্দ্র মোদি । চিকিৎসক এবং চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত মানুষগুলির সুরক্ষার ব্যবস্থা সম্পর্কে নীরব তিনি । বিশ্ববাজারে পরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু প্রায় কুড়ি ডলারে নেমেছে । ডিজ়েলের দাম কমিয়ে কৃষকের কষ্ট লাঘব করার কোনও ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ছিল না । বাজারে জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস উঠেছে । সেই বিষয়েও কোনও মন্তব্য কেন করলেন না প্রধানমন্ত্রী ? তাঁর কথায় " প্রধামন্ত্রীকে বলছি, আপনি থালা বাজান, আর মোমবাতি জ্বালান, তাতে কোনও আপত্তি নেই । কিন্তু দয়া করে দেশের মানুষকে দূরদর্শনের সামনে টেনে নিয়ে এসে আর নাটক করবেন না ।"