ETV Bharat / state

খুঁজে পায়নি ডুবুরি, 7 দিন পর ফিডার ক্যানালেই ভেসে উঠল ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর দেহ; খুন? - MISSING STUDENT BODY RECOVERED

সাতদিন পর ফিডার ক্যানাল থেকে উদ্ধার হল নিখোঁজ ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর দেহ ৷ তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ পরিবারের ৷

ETV BHARAT
উদ্ধার হল নিখোঁজ ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর দেহ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 13, 2025, 5:52 PM IST

মালদা, 13 জানুয়ারি: শেষ পর্যন্ত নিখোঁজ হওয়ার আটদিনের মাথায় ফরাক্কার ফিডার ক্যানালে মিলল হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর দেহ ৷ রবিবার ফিডার ক্যানালের শংকরপুর ঘাট থেকে ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে এনটিপিসি ফাঁড়ির পুলিশ ৷ পুলিশের তরফে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে ৷ তার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি ৷ তবে এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলেছে ওই ছাত্রীর পরিবার ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে ৷ পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে সম্পর্কে টানাপোড়েনের বিষয়ও ৷

বছর কুড়ির ওই ছাত্রীর নাম দীপ্তি ভগত ৷ বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বারদুয়ারি গ্রামে ৷ বাবা দেবচরণ ভগত ব্যবসায়ী ৷ দীপ্তি দুমকা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী ৷ দিন 12 আগে বাড়ি এসেছিলেন ৷ গত রবিবার তিনি কলেজের উদ্দেশে রওনা দেন ৷ সঙ্গে ছিল একাধিক নথিপত্রও ৷ তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশন থেকে ডাউন কুলিক এক্সপ্রেসে চাপেন ৷ রামপুরহাট পর্যন্ত টিকিট ছিল তাঁর ৷ রামপুরহাট থেকে দুমকাগামী ট্রেন ধরার কথা ছিল তাঁর ৷ কিন্তু সেদিন ফরাক্কা স্টেশনেই তিনি ট্রেন থেকে নেমে পড়েন ৷

সেদিন বিকেলে এনটিপিসি ফাঁড়ির পুলিশ ফোনে দেবচরণ ভগতকে খবর দেয় যে, দীপ্তির ব্যাগ, মোবাইল-সহ সমস্ত কিছু নেতাজি সেতুর উপর পাওয়া গিয়েছে ৷ সেই ব্যাগে 1300 টাকাও রয়েছে ৷ এক ব্যক্তি সেসব পেয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে জমা দিয়েছেন ৷ এই খবর পেয়েই পরিবারের লোকজন এনটিপিসি ফাঁড়িতে যান ৷ তাঁদের হাতে দীপ্তির ব্যাগ-সহ সমস্ত কিছু তুলে দেওয়া হয় ৷ সেই রাতেই দীপ্তির নামে মিসিং ডায়েরি করা হয় ৷ পুলিশ খোঁজ শুরু করে ৷ তাঁকে উদ্ধারে আসরে নামেন স্বয়ং রাজ্যের মন্ত্রী তজমুল হোসেনও ৷ পরদিন থেকে ফিডার ক্যানালে ডুবুরি নামিয়ে দীপ্তির খোঁজ শুরু হয় ৷ কিন্তু তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি ৷ তিনদিন অনুসন্ধানের পরও দীপ্তির খোঁজ না পেয়ে ফিডার ক্যানালে আর ডুবুরি নামানো হয়নি ৷

অবশেষে গতকাল শংকরপুর ঘাটের কাছে এক যুবতীর মৃতদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা ৷ তাঁরা বিষয়টি এনটিপিসি ফাঁড়িতে জানান ৷ এরপরেই ফিডার ক্যানাল থেকে উদ্ধার হয় ওই যুবতীর দেহ ৷ সেটি যে দীপ্তির, তা নিয়ে নিশ্চিত হন পুলিশকর্মীরা ৷ খবর পেয়ে গতকালই ফরাক্কায় গিয়ে দেহ শনাক্ত করেছেন পরিবারের লোকজন ৷ সোমবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে ৷

দীপ্তির জ্যেঠু গুরুচরণ ভগত জানিয়েছেন, "গতকাল মেয়ের দেহ উদ্ধারের খবর এনটিপিসি ফাঁড়ির পুলিশ ফোন করে আমাদের জানায় ৷ খবর পেয়েই আমরা সেখানে যাই ৷ ওই দেহটি আমার ভাইঝিরই ৷ কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে আমাদের ধন্ধ রয়েছে ৷ মালদা স্টেশনে ট্রেন ঢোকার আগে ও তার মাকে ফোন করে জানিয়েছিল, মালদা টাউন স্টেশনে সে প্রাতঃরাশ করবে ৷ রামপুরহাট পৌঁছে দুপুরের খাবার খেয়ে দুমকার ট্রেন ধরবে ৷ তাহলে ও ফরাক্কায় ট্রেন থেকে কেন নামল ? ওকে নিশ্চয়ই কেউ বা কারা ট্রেন থেকে নামতে বাধ্য করেছিল ৷ আমাদের ধারণা, ওকে খুন করা হয়েছে ৷ কারণ, শনিবারই আমাদের এক আত্মীয়ের মোবাইলে ফোন করে একজন দীপ্তির মুক্তিপণ বাবদ দু’লাখ টাকা দাবি করেছিল ৷ তবে ভাইঝির মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই জানা যাবে ৷ পুলিশ তদন্ত করে এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করুক ৷"

এদিকে, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার এক পুলিশ অফিসার জানাচ্ছেন, "ফরাক্কা স্টেশনের সিসিটিভির ফুটেজে দীপ্তির ছবি ধরা পড়েছে ৷ তিনি একাই প্ল্যাটফর্ম দিয়ে হেঁটে স্টেশনের বাইরে বেরোন ৷ তাঁর সঙ্গে অন্য কাউকে সেখানে দেখা যায়নি ৷ তবে ঘটনার তদন্তে নেমে মধুসূদন মাহাতো নামে একজনের নাম বারবার সামনে উঠে আসছে ৷ এই ব্যক্তির সঙ্গে দীপ্তির প্রায়শই ফোনে কথা হত ৷ তাঁর সঙ্গে দীপ্তির কোনও সম্পর্ক ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ মধুসূদন দীপ্তিদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় ৷ তবে এনিয়ে এখনও তাঁর পরিবারের লোকজন পুলিশকে তেমন কিছু জানাননি ৷ আমরা গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি ৷ আশা করছি, খুব দ্রুত এই ঘটনার পুরো বিষয় সামনে আসবে ৷"

মালদা, 13 জানুয়ারি: শেষ পর্যন্ত নিখোঁজ হওয়ার আটদিনের মাথায় ফরাক্কার ফিডার ক্যানালে মিলল হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর দেহ ৷ রবিবার ফিডার ক্যানালের শংকরপুর ঘাট থেকে ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে এনটিপিসি ফাঁড়ির পুলিশ ৷ পুলিশের তরফে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে ৷ তার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি ৷ তবে এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলেছে ওই ছাত্রীর পরিবার ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে ৷ পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে সম্পর্কে টানাপোড়েনের বিষয়ও ৷

বছর কুড়ির ওই ছাত্রীর নাম দীপ্তি ভগত ৷ বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বারদুয়ারি গ্রামে ৷ বাবা দেবচরণ ভগত ব্যবসায়ী ৷ দীপ্তি দুমকা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী ৷ দিন 12 আগে বাড়ি এসেছিলেন ৷ গত রবিবার তিনি কলেজের উদ্দেশে রওনা দেন ৷ সঙ্গে ছিল একাধিক নথিপত্রও ৷ তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশন থেকে ডাউন কুলিক এক্সপ্রেসে চাপেন ৷ রামপুরহাট পর্যন্ত টিকিট ছিল তাঁর ৷ রামপুরহাট থেকে দুমকাগামী ট্রেন ধরার কথা ছিল তাঁর ৷ কিন্তু সেদিন ফরাক্কা স্টেশনেই তিনি ট্রেন থেকে নেমে পড়েন ৷

সেদিন বিকেলে এনটিপিসি ফাঁড়ির পুলিশ ফোনে দেবচরণ ভগতকে খবর দেয় যে, দীপ্তির ব্যাগ, মোবাইল-সহ সমস্ত কিছু নেতাজি সেতুর উপর পাওয়া গিয়েছে ৷ সেই ব্যাগে 1300 টাকাও রয়েছে ৷ এক ব্যক্তি সেসব পেয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে জমা দিয়েছেন ৷ এই খবর পেয়েই পরিবারের লোকজন এনটিপিসি ফাঁড়িতে যান ৷ তাঁদের হাতে দীপ্তির ব্যাগ-সহ সমস্ত কিছু তুলে দেওয়া হয় ৷ সেই রাতেই দীপ্তির নামে মিসিং ডায়েরি করা হয় ৷ পুলিশ খোঁজ শুরু করে ৷ তাঁকে উদ্ধারে আসরে নামেন স্বয়ং রাজ্যের মন্ত্রী তজমুল হোসেনও ৷ পরদিন থেকে ফিডার ক্যানালে ডুবুরি নামিয়ে দীপ্তির খোঁজ শুরু হয় ৷ কিন্তু তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি ৷ তিনদিন অনুসন্ধানের পরও দীপ্তির খোঁজ না পেয়ে ফিডার ক্যানালে আর ডুবুরি নামানো হয়নি ৷

অবশেষে গতকাল শংকরপুর ঘাটের কাছে এক যুবতীর মৃতদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা ৷ তাঁরা বিষয়টি এনটিপিসি ফাঁড়িতে জানান ৷ এরপরেই ফিডার ক্যানাল থেকে উদ্ধার হয় ওই যুবতীর দেহ ৷ সেটি যে দীপ্তির, তা নিয়ে নিশ্চিত হন পুলিশকর্মীরা ৷ খবর পেয়ে গতকালই ফরাক্কায় গিয়ে দেহ শনাক্ত করেছেন পরিবারের লোকজন ৷ সোমবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে ৷

দীপ্তির জ্যেঠু গুরুচরণ ভগত জানিয়েছেন, "গতকাল মেয়ের দেহ উদ্ধারের খবর এনটিপিসি ফাঁড়ির পুলিশ ফোন করে আমাদের জানায় ৷ খবর পেয়েই আমরা সেখানে যাই ৷ ওই দেহটি আমার ভাইঝিরই ৷ কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে আমাদের ধন্ধ রয়েছে ৷ মালদা স্টেশনে ট্রেন ঢোকার আগে ও তার মাকে ফোন করে জানিয়েছিল, মালদা টাউন স্টেশনে সে প্রাতঃরাশ করবে ৷ রামপুরহাট পৌঁছে দুপুরের খাবার খেয়ে দুমকার ট্রেন ধরবে ৷ তাহলে ও ফরাক্কায় ট্রেন থেকে কেন নামল ? ওকে নিশ্চয়ই কেউ বা কারা ট্রেন থেকে নামতে বাধ্য করেছিল ৷ আমাদের ধারণা, ওকে খুন করা হয়েছে ৷ কারণ, শনিবারই আমাদের এক আত্মীয়ের মোবাইলে ফোন করে একজন দীপ্তির মুক্তিপণ বাবদ দু’লাখ টাকা দাবি করেছিল ৷ তবে ভাইঝির মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই জানা যাবে ৷ পুলিশ তদন্ত করে এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করুক ৷"

এদিকে, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার এক পুলিশ অফিসার জানাচ্ছেন, "ফরাক্কা স্টেশনের সিসিটিভির ফুটেজে দীপ্তির ছবি ধরা পড়েছে ৷ তিনি একাই প্ল্যাটফর্ম দিয়ে হেঁটে স্টেশনের বাইরে বেরোন ৷ তাঁর সঙ্গে অন্য কাউকে সেখানে দেখা যায়নি ৷ তবে ঘটনার তদন্তে নেমে মধুসূদন মাহাতো নামে একজনের নাম বারবার সামনে উঠে আসছে ৷ এই ব্যক্তির সঙ্গে দীপ্তির প্রায়শই ফোনে কথা হত ৷ তাঁর সঙ্গে দীপ্তির কোনও সম্পর্ক ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ মধুসূদন দীপ্তিদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় ৷ তবে এনিয়ে এখনও তাঁর পরিবারের লোকজন পুলিশকে তেমন কিছু জানাননি ৷ আমরা গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি ৷ আশা করছি, খুব দ্রুত এই ঘটনার পুরো বিষয় সামনে আসবে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.