কলকাতা, 3 অক্টোবর: আকাশে শরতের মেঘ না-থাকলেও মাঠে কাশ ফুলের দোলা জানান দিচ্ছে উমার আগমন বার্তা ৷ দেবীকে আমন্ত্রণ জানাতে শহরের থিম যুদ্ধের মণ্ডপ তৈরি ৷ থিম ভাবনায় এক বৈচিত্র্য তুলে ধরাই উদ্দেশ্য পুজো উদ্যোক্তাদের ৷ যেমন উল্টোডাঙা সংগ্রামী ক্লাবের পুজো ৷ এবারের পুজোর থিম 'মহালীলায় মহামায়া ।' মণ্ডপ জুড়ে তুলে ধরা হয়েছে শ্রীকৃষ্ণের মহালীলা ক্ষেত্র ৷
কথিত আছে, কার্তায়নী বা যোগমায়া দেবীশক্তির অন্যরূপ। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের চালিকাশক্তি। মহামায়া আবার একদিকে ব্রহ্মার সরস্বতী, বিষ্ণুর লক্ষ্মী এবং শিবের পার্বতী। মহিষাসুর নিধনে শক্তি-স্বরূপা দুর্গার আহ্বান করেছিলেন দেবতারা। এখানে যোগমায়া মহিষাসুরমর্দিনী। অন্যদিকে, তিনিই কার্তায়নী হয়ে ভালোবাসার লীলাক্ষেত্র রচনা করছেন কৃষ্ণভূমিতে। এখানে দুর্গাকে মহিষাসুরমর্দিনী রূপে নয় ৷ তবে দেবী এখানে প্রেম ও শান্তির বার্তাবাহক। একইভাবে অসুরকেও দেখা যাবে অন্যরূপে ৷ এখানে অসুর চৈতন্যের মতো লীলারত ৷ অসুররে মধ্যেও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চৈতন্যের শান্ত- সৌম্যরূপ ৷ এ প্রসঙ্গে শিল্পী কালাচাঁদ পাঁজা বলেন, 'লীলাক্ষেত্র ফুটিয়ে তোলা হবে বিভিন্ন রঙের মূর্তির মাধ্যমে। মণ্ডপের দেওয়াল জুড়ে লীলার ছবি। তুলির টানে রঙিন মা দুর্গা থেকে তাঁর সন্তান-সন্ততিরা ।"
আরও পড়ুন: পুজোর বাকি দিন কুড়ি, বৃষ্টিতে বন্ধ মণ্ডপের কাজ! মাথায় হাত শিল্পী-কমিটির
কথিত আছে, দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের লীলাক্ষেত্রে গোপিনীরা কৃষ্ণকে প্রেমিক তথা স্বামীরূপে পেতে দেবী কার্তায়নীর পুজো করেছিলেন। তারপরেই শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলা ক্ষেত্রে 1600 গোপিনীর ইচ্ছেপূরণ হয় । সেই দেবী কার্তায়নী শ্রীকৃষ্ণ তথা ভগবান বিষ্ণুর অন্তরঙ্গাশক্তি, যোগমায়া। ধরাধামে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে মনুষ্য জীবনে লীলা রচনা করতে তিনি সহযোগিতা করেছেন। তাঁর মায়া বলেই ব্রজভূমে তৈরি হয়েছে মহা লীলাক্ষেত্র। তাই, কৃষ্ণকে পতি হিসেবে পেতে সেই কার্তায়ানীকে গোপিনীরা প্রার্থনা করেছিলেন, 'কার্তায়নী মহামায়ে নন্দগোপ সূত দেহি'। কার্তায়নী তাঁদের প্রার্থনা পূরণ করেন ।