নৈহাটি, 21 ডিসেম্বর: নৈহাটির বড়মা'র নামে পোর্টাল খুলে অনলাইনে তোলাবাজি ! সেই খবর কানে যেতেই ফাঁদ পাতে বড়মা মন্দির কমিটির এক সদস্য ৷ সেই পাতা ফাঁদের ধরা পড়ল অভিযুক্ত প্রৌঢ় ৷ পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সুরজিৎ কুণ্ডু ৷ তাঁর বাড়ি হুগলির রিষড়ায় ৷ শনিবার ধৃতকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয় ৷ এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আদালতের রায় জানা যায়নি ৷
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরজিৎ কুণ্ডু দেশের বড়-বড় মন্দিরে পুজো দেওয়ার নাম করে একটি পোর্টাল খুলেছিল ৷ তার মধ্যে নৈহাটির বড়মা'র মন্দিরের নামও ছিল ৷ ওই পোর্টালে বড়মা'র মন্দিরের ছবিও দেওয়া হয় ৷ অভিযোগ পোর্টালে উল্লেখ করা হয়, এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিলে অনলাইনে বড়মার মন্দিরে পুজো দেওয়া যাবে ৷ শুকনো প্রসাদ বাড়িতে পৌঁছে যাবে ৷
এমন বেশ কয়েকটি মন্দিরে অনলাইনে পুজো দেওয়ার নামে এরকম কথা লেখা ছিল ৷ সেখানেও মোটা অঙ্কের টাকার কথা উল্লেখ করেন প্রতারক সুরজিৎ কুণ্ডু ৷ সম্প্রতি কলম্বিয়ার বাসিন্দা এক প্রবাসী ভারতীয় পোর্টালে এমন বিজ্ঞাপন দেখে নৈহাটির বড়মার মন্দিরের পুজো কমিটিকে তা জানান ৷ মন্দির কমিটি ওই পোর্টাল দেখার পর সুরজিৎকে ধরতে ফাঁদ পাতে ৷
মন্দির কমিটি জানিয়েছে, ভক্ত সেজে মন্দির কমিটির সদস্য অয়ন সাহা হাজার টাকা সুরজিৎকে পাঠিয়ে দেন ৷ তারপর মোবাইল ফোনে সুরজিতের সঙ্গে কথোপকথনের রেকর্ড বড়মা মন্দিরে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা সংগ্রহ করেন ৷ সেই মতো বড়মা মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নৈহাটি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ শুক্রবার রাতে নৈহাটি থানার পুলিশ রিষড়া থেকে সুরজিৎকে গ্রেফতার করে ৷
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, সুরজিৎ ছাড়াও প্রতারণায় জড়িত ওই পোর্টালের সঙ্গে আরও এক মহিলা যুক্ত রয়েছেন ৷ সুরজিৎ ও ওই মহিলার বিভিন্ন ব্যাংকে একাধিক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গিয়েছে ৷ সেগুলিতে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়মিত লেনদেন হওয়ার তথ্যও হাতে এসেছে তদন্তকারীদের ৷
এই বিষয়ে নৈহাটি বড়মা মন্দির প্রসার সমিতির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য বলেন, "বড়মার নাম করে পোর্টাল খুলে টাকা তোলা হচ্ছে, আমরা তা জানতাম না ৷ সম্প্রতি কলম্বিয়া থেকে এক ভক্ত টেলিফোনে আমাদের গোটা ঘটনাটি জানিয়েছেন ৷ এরপর খোঁজখবর নিয়ে আমরা সেই অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাই ৷ সেই মতো নৈহাটি থানায় আমরা অভিযোগ দায়ের করি ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে হুগলির রিষড়া থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে ৷ আমরা চাই, ওই প্রতারণা চক্রে আরও যারা জড়িত আছে,পুলিশ তাদের গ্রেফতার করুক ৷"