কলকাতা, 19 জুলাই : কাজের দিন নয় । এবার রাজ্যের শাসকদলের শহিদ দিবস পড়েছে রবিবার । তাই সাধারণ মানুষের নাকাল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম । পথে যানজটের আশঙ্কাও কম । তবু, ভিড় সামলাতে এবারও কড়া নিরাপত্তাতেই পালিত হবে শাসকদলের শহিদ সমাবেশ । কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে প্ল্যানিংয়ের কাজ শেষ ।
গতকাল কলকাতা পুলিশের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয় 21 জুলাই তৃণমূলের শহিদ সমাবেশ নিয়ে । যেখানে হাজির ছিলেন সব DC । প্ল্যানিং আগে থেকেই তৈরি ছিল । অভিজ্ঞ অফিসাররা জানেন, এইদিন কী ভাবে সামলাতে হয় ভিড় । কিন্তু, ঝুঁকি নিতে নারাজ লালবাজার । কারণ, শাসকদলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রায় 10 লাখ মানুষের সমাবেশ হতে পারে সেদিন । কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে এই সমাবেশ স্বাভাবিকভাবেই সমস্যা তৈরি করবে কিছুটা হলেও । যদিও হাওড়া স্টেশন থেকে উত্তর কলকাতা এবং দক্ষিণ কলকাতা যাওয়ার জন্য আলাদা রুট তৈরি করে ফেলেছে কলকাতা পুলিশ । ফলে কিছুটা হলেও যানজট এড়িয়ে শহরবাসী যাতায়াত করতে পারবে উত্তর কিংবা দক্ষিণে ।
গতকাল লালবাজারের উচ্চপর্যায়ের ঠিক হয়েছে, এবার 5000 অতিরিক্ত পুলিশ সেদিন মোতায়েন হবে কলকাতায় । সূত্র জানাচ্ছে, সমাবেশের দায়িত্বে ওইদিন রাস্তায় থাকবেন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার 23 জন আধিকারিক ৷ সঙ্গে রাস্তায় থাকবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার 60 জন অফিসারও ৷ দায়িত্বে থাকছেন 160 জন পুলিশ ইন্সপেক্টর ৷ সার্জেন্ট এবং SI মিলিয়ে ওই দিন থাকতে চলেছে প্রায় 500 অফিসার । এছাড়াও সাদা পোশাকে থাকতে চলেছেন বহু পুলিশকর্মী । সঙ্গে থাকতে চলেছে কলকাতা পুলিশের বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স । থাকবে তিনটি কুইক রেসপন্স টিম । থাকবে ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ । এছাড়াও থাকবে ট্রমা কেয়ার ইউনিট । DC সেন্ট্রাল সহ চারজন DC থাকতে চলেছেন মঞ্চের মূল দায়িত্বে । মূলত যে মিছিলগুলি আসবে, তা মৌলালি ক্রসিং দিয়ে । সেখানকার দায়িত্বে থাকতে চলেছেন DC, DSD । আগের দিন রাতে দায়িত্ব পালন করবেন একজন ডেপুটি কমিশনার ।
কলকাতা পুলিশের কাছে যে খবর এসেছে তাতে শহরে বড় মিছিল আসবে শ্যামবাজার, শিয়ালদা, হাজরা গিরিশ পার্ক এবং হেদুয়া অঞ্চল থেকে । এই প্রস্তাবটি অঞ্চলে থাকবেন একজন করে ডেপুটি কমিশনার । কলকাতা পুলিশের বক্তব্য, কোন সমাবেশ শহরে কতটা সচল থাকবে তা নির্ভর করে পার্কিং এবং ম্যান ম্যানেজমেন্টের উপরে । লালবাজার সূত্রের খবর, সমাবেশের জন্য জেলা থেকে আসা বাস-ম্যাটাডর রাখার নির্দিষ্ট বন্দোবস্ত করা হয়েছে ।
উত্তর ২৪ পরগনার একটি অংশ থেকে আসা গাড়ি পার্ক করা হবে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে ৷ পশ্চিম মেদিনীপুর , বর্ধমান, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া থেকে আসা গাড়ি থাকবে হেস্টিংস থানা এলাকায় ৷ উত্তর শহরতলি এবং মালদা , মুর্শিদাবাদ আসা গাড়িগুলি পার্ক করতে হবে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় রোডে ৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনা , উত্তর ২৪ পরগনার অবশিষ্ট এলাকা থেকে আসা গাড়ি বাইপাস সংলগ্ন বঙ্গবাসী মাঠ এবং রেঞ্জার্স মাঠে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজ হয়ে যেসব গাড়ি শহরে ঢুকবে সেগুলি লাভার্স লেনে রাখা বাধ্যতামূলক ৷ শিয়ালদহ -বৌজাবার , বড়বাজারের ছোটো হোটেল এবং লজগুলিতে বহু তৃণমূল কর্মী আগের দিন থেকেই এসে যাবে ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে সেই সব অতিথিনিবাসে দু'দিন আগে থেকেই কড়া নজর রাখা হচ্ছে ৷