কলকাতা, 21 অগাস্ট : রাজনৈতিক ময়দানে এক সময়ের সহকর্মী ৷ কাজের ফাঁকে বন্ধুত্বটাও হয়েছিল বেশ ৷ তাদের দেখে মনে হত 'মমতা'-ময়ী মায়ের যেন দুই সন্তান ৷ কানন ও পার্থ ৷ বছর কয়েক আগেও ভাবেননি একে বিরোধীতে পরিণত হবেন তাঁরা ৷ ভাঙা সম্পর্ক জোড়া লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন অনেকবার ৷ কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি ৷ 14 অগাস্ট বান্ধবী বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে BJP-তে যোগ দেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ৷ সেদিনও 'বিরোধী বন্ধু' শোভনের BJP-তে যোগ নিয়ে বিশেষ কিছু মন্তব্য শোনা যায়নি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায় ৷ তবে, তাঁর গলায় শোনা গেছিল অভিমানের সুর ৷ বলেছিলেন, "সম্পর্ক যদি জোড়া না লাগে তবে তার দায়িত্ব কার?" আজও এক সংবাদিক বৈঠকে শোভনের BJP-তে যোগ নিয়ে পার্থর গলায় শোনা গেল অভিমানের সুর ৷ বললেন, "আমি তৃণমূল চলে গেলেও ক্ষতি হবে না । যে দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সক্রিয় থাকবেন না, সে দিনই, সেটাই হবে বড় ক্ষতি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন থাকবে, লতা পাতা ওকে জড়িয়ে থাকবে । যাঁরা জড়িয়ে না থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করবেন, তাঁরা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না । কেউ পারেনি । সবাইকে ফিরতে হয়েছে ।"
আজ বিধানসভায় BA কমিটির বৈঠক হয় । বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷ বিশেষ এই বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয় জালিয়ানাওয়ালাবাগের শতবর্ষ পূর্তিতে বিশেষ বক্তব্য পেশ হবে অধিবেশনে । ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষ্যে হবে আলোচনা । এ ছড়াও, বেশ কিছু বিল আসার কথা রয়েছে বিধানসভায় । এ বিষয়ে সাংবাদিকে বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "নতুন রাজ্যপাল এসেছেন । বিলের সই পেন্ডিং রয়েছে । সই ও ছাপার অপেক্ষায় থাকা বিলগুলোকে মুক্ত করে আনতে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ।"
এর পরই এই বৈঠকে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের BJP-তে যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে ৷ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা না দিয়ে দলবদল করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ৷ এর জন্য তৃণমূলের তরফ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এ বিষয়ে পার্থবাবু বলেন, "অন্য বিধায়কদের ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও একই হবে । তাঁর জন্য আলাদা নিয়ম তৈরি হবে না । কী ব্যবস্থা হবে তা পরিষদীয় দলের বৈঠকে ঠিক হবে । পরিষদীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক হবে ।"
শোভনের দল ত্যাগের ফলে তৃণমূল কোনও ক্ষতির সম্মুখীন হবে কি ? এ প্রশ্নের উত্তরে পার্থ বলেন, "অনেকদিন ধরে তৃণমূল ছেড়ে চলে গেছিলেন শোভন । অর্থাৎ তাঁকে দলের সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যেত না । আমি চাই ও সুস্থ থাকুক । যেমনটা দেখলাম । কথা বার্তার মধ্যে যথেষ্ট সপ্রতিভ ছিল ।"