ETV Bharat / state

সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ঘোষণা নির্বাচনী গিমিক, বলছে বিরোধীরা - Agro Industrial Park in Singur

প্রায় দেড় দশক আগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চেয়েছিলেন সিঙ্গুরে শিল্প আনতে । কিন্তু পারেননি । বিরোধিতা করেছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । গতকাল তিনিই সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরির ঘোষণা করেন । মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে কীভাবে দেখছে বামেরা ? গেরুয়া শিবিরই বা কী বলছে ?

Industry in Singur
প্রতীকী ছবি
author img

By

Published : Dec 25, 2020, 9:04 PM IST

Updated : Dec 25, 2020, 11:08 PM IST

কলকাতা, 25 ডিসেম্বর : শেষমেষ শিল্প ঢুকছে সিঙ্গুরে । না ! ন্যানো বা টাটার কোনও প্রজেক্ট নয় । সিঙ্গুরে তৈরি হবে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক । 11 একর জমির উপর তৈরি হবে এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক । সৌজন্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগমের হাত ধরে শিল্প ঢুকছে সিঙ্গুরে । আর এই নিয়েই রাজ্য-রাজনীতিতে নতুন করে চর্চায় উঠে এসেছে সিঙ্গুর ।

বাম আমলে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চেয়েছিলেন সিঙ্গুরে শিল্প নিয়ে আসতে । সবকিছু ঠিকও হয়ে গিয়েছিল । শিল্পের জন্য কৃষকদের থেকে জমিও নিয়েছিল টাটা । কিন্তু সেই সময় এর বিরোধিতা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আর সিঙ্গুরের সেই কৃষিজমি বাঁচাও আন্দোলনের হাত ধরেই বাংলার মসনদে তাঁর আসার পথ তৈরি হয়েছে বললেও খুব একটা ভুল বলা হবে না । কিন্তু কয়েকদিন আগেই সেই সময় তাঁর সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায় বলেছেন, সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়ানোটা বড় ভুল হয়ে গিয়েছিল । আর এই কথা তো বারবারই বলে এসেছে বামেরা ।

বুদ্ধবাবুর সাধের সিঙ্গুরে অবশেষে শিল্প ঢুকছে । শিল্প আসা মানেই তো কর্মসংস্থান । এটাই তো এতদিন ধরে চেয়ে এসেছিল বামেরা । মুখ্যমন্ত্রীর গতকালের ঘোষণার পর কী বলছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজফ্ফর আহমেদ ভবন ? বামেরা কিন্তু এখনও অভিযোগের আঙুল তুলে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে । মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের শিল্প, চাষ ও কর্মসংস্থানকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সুজন চক্রবর্তী ।

আরও পড়ুন : সিঙ্গুরে তৈরি হবে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক : মুখ্যমন্ত্রী

সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ঘোষণা নিয়ে কী বলছেন বিরোধীরা ?

তাঁর প্রশ্ন, গত -দশ বছর কোথায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ? মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, "হিম্মত থাকলে সিঙ্গুরের শিল্পের জন্য জমি যাঁরা কেনাবেচা করতে চাইছেন, তাঁদেরকে ঠেকান ।"

এদিকে সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি পার্ক তৈরির আশ্বাসকে স্রেফ নির্বাচনী গিমিক বলেই মনে করেছে বঙ্গ বিজেপি । সিঙ্গুরের বেড়াবেড়ি পঞ্চায়েতের মধুসূদনপুরে কৃষকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল ভাষণ শুনতে এসেছিলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় । মুখ্যমন্ত্রীর গতকালের ঘোষণা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "সিঙ্গুরে কোনও অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি পার্ক হবে না । সব মিথ্যা কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী । সিঙ্গুর কেন সারা বাংলায় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি পার্ক করে ফেললেও সরকার গড়তে পারবেন না তিনি । সিঙ্গুরে না কৃষি হল, না শিল্প হল । এখন তিনি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি পার্ক দেখাচ্ছেন মানুষকে ।"

তবে সিঙ্গুরে যে শিল্প আসুক, শিল্পের হাব তৈরি হোক, তা চাইছেন লকেট চট্টোপাধ্যায় ।

হুগলির সাংসদের সুরেই সুর মিলিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ । তাঁর কথায়, "সিঙ্গুরে শিল্প হবে শুনলে ঘোড়াতেও হাসবে ।" সিঙ্গুরে শিল্পের ঘোষণার বিষয়টি যেন অনেকটা বলদে দুধ দেওয়ার মতো বলেই মনে করছেন দিলীপবাবু । বললেন, " দিদিমণির হাত ধরে শিল্প আসবে না । উনি খেলা, মেলা ও পুজোর উদ্বোধন করেছেন । কোনও শিল্পের উদ্বোধন করতে দেখা যায়নি মুখ্যমন্ত্রীকে ।"

সিঙ্গুরের চাষের জমি নিয়ে তা টাটা সন্সের ন্যানো কারখানার জন্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়েছিল আজ থেকে প্রায় দেড় দশক আগে । সেই অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । অনশনও করেছিলেন । শেষপর্যন্ত সিঙ্গুরে টাটার কারখানা হয়নি । পরে আদালতের রায়ে জমিও ফেরত দেওয়া হয়েছে চাষিদের । কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরের জন্য কিছুই করেননি বলে বারবার অভিযোগ করেছে বিরোধীরা । এখন অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ঘোষণার পরও শিল্পের বিষয়ে রাজ্যের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা ।

কলকাতা, 25 ডিসেম্বর : শেষমেষ শিল্প ঢুকছে সিঙ্গুরে । না ! ন্যানো বা টাটার কোনও প্রজেক্ট নয় । সিঙ্গুরে তৈরি হবে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক । 11 একর জমির উপর তৈরি হবে এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক । সৌজন্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগমের হাত ধরে শিল্প ঢুকছে সিঙ্গুরে । আর এই নিয়েই রাজ্য-রাজনীতিতে নতুন করে চর্চায় উঠে এসেছে সিঙ্গুর ।

বাম আমলে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চেয়েছিলেন সিঙ্গুরে শিল্প নিয়ে আসতে । সবকিছু ঠিকও হয়ে গিয়েছিল । শিল্পের জন্য কৃষকদের থেকে জমিও নিয়েছিল টাটা । কিন্তু সেই সময় এর বিরোধিতা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আর সিঙ্গুরের সেই কৃষিজমি বাঁচাও আন্দোলনের হাত ধরেই বাংলার মসনদে তাঁর আসার পথ তৈরি হয়েছে বললেও খুব একটা ভুল বলা হবে না । কিন্তু কয়েকদিন আগেই সেই সময় তাঁর সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায় বলেছেন, সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়ানোটা বড় ভুল হয়ে গিয়েছিল । আর এই কথা তো বারবারই বলে এসেছে বামেরা ।

বুদ্ধবাবুর সাধের সিঙ্গুরে অবশেষে শিল্প ঢুকছে । শিল্প আসা মানেই তো কর্মসংস্থান । এটাই তো এতদিন ধরে চেয়ে এসেছিল বামেরা । মুখ্যমন্ত্রীর গতকালের ঘোষণার পর কী বলছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজফ্ফর আহমেদ ভবন ? বামেরা কিন্তু এখনও অভিযোগের আঙুল তুলে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে । মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের শিল্প, চাষ ও কর্মসংস্থানকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সুজন চক্রবর্তী ।

আরও পড়ুন : সিঙ্গুরে তৈরি হবে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক : মুখ্যমন্ত্রী

সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ঘোষণা নিয়ে কী বলছেন বিরোধীরা ?

তাঁর প্রশ্ন, গত -দশ বছর কোথায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ? মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, "হিম্মত থাকলে সিঙ্গুরের শিল্পের জন্য জমি যাঁরা কেনাবেচা করতে চাইছেন, তাঁদেরকে ঠেকান ।"

এদিকে সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি পার্ক তৈরির আশ্বাসকে স্রেফ নির্বাচনী গিমিক বলেই মনে করেছে বঙ্গ বিজেপি । সিঙ্গুরের বেড়াবেড়ি পঞ্চায়েতের মধুসূদনপুরে কৃষকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল ভাষণ শুনতে এসেছিলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় । মুখ্যমন্ত্রীর গতকালের ঘোষণা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "সিঙ্গুরে কোনও অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি পার্ক হবে না । সব মিথ্যা কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী । সিঙ্গুর কেন সারা বাংলায় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি পার্ক করে ফেললেও সরকার গড়তে পারবেন না তিনি । সিঙ্গুরে না কৃষি হল, না শিল্প হল । এখন তিনি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি পার্ক দেখাচ্ছেন মানুষকে ।"

তবে সিঙ্গুরে যে শিল্প আসুক, শিল্পের হাব তৈরি হোক, তা চাইছেন লকেট চট্টোপাধ্যায় ।

হুগলির সাংসদের সুরেই সুর মিলিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ । তাঁর কথায়, "সিঙ্গুরে শিল্প হবে শুনলে ঘোড়াতেও হাসবে ।" সিঙ্গুরে শিল্পের ঘোষণার বিষয়টি যেন অনেকটা বলদে দুধ দেওয়ার মতো বলেই মনে করছেন দিলীপবাবু । বললেন, " দিদিমণির হাত ধরে শিল্প আসবে না । উনি খেলা, মেলা ও পুজোর উদ্বোধন করেছেন । কোনও শিল্পের উদ্বোধন করতে দেখা যায়নি মুখ্যমন্ত্রীকে ।"

সিঙ্গুরের চাষের জমি নিয়ে তা টাটা সন্সের ন্যানো কারখানার জন্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়েছিল আজ থেকে প্রায় দেড় দশক আগে । সেই অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । অনশনও করেছিলেন । শেষপর্যন্ত সিঙ্গুরে টাটার কারখানা হয়নি । পরে আদালতের রায়ে জমিও ফেরত দেওয়া হয়েছে চাষিদের । কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরের জন্য কিছুই করেননি বলে বারবার অভিযোগ করেছে বিরোধীরা । এখন অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ঘোষণার পরও শিল্পের বিষয়ে রাজ্যের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা ।

Last Updated : Dec 25, 2020, 11:08 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.