কলকাতা, 4 ফেব্রুয়ারি : বছর 47-র মহিলা ৷ পরণে ফিটফাট পোশাক ৷ হাবেভাবে একটা গাম্ভীর্য ৷ ইন্টেলিজেন্স বিউরোর সিনিয়র অফিসার হিসেবেই পরিচিত ৷ একজন অফিসার হিসেবে যা যা থাকা দরকার, রয়েছে সবই ৷ যাদবপুর এলাকায় রয়েছে একটি বাড়ি ৷ রয়েছে নীল বাতি লাগানো একটি গাড়ি ৷ গাড়ির সামনে লালের উপর সাদা দিয়ে লেখা, "ভারত সরকার, ইন্টেলিজেন্স বিউরো" ৷
তবে, সবার ভুলটা ভাঙল সত্যব্রত বসু রায় নামে এক যুবকের থানায় অভিযোগের পর ৷ বছর তেইশের এই যুবক অভিযোগ করেন, সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে তাঁর থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে ৷ প্রতারণা করেছেন ইন্টেলিজেন্স বিউরোর সিনিয়র অফিসার ৷ টাকা ফেরত চাইলে জোটে হুমকি ৷ তারপর থেকেই শুরু হয় খোঁজ ৷ নীল বাতি লাগানোর গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে চলে তদন্ত ৷ খতিয়ে দেখা হয় CCTV ফুটেজও ৷ অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েন ওই মহিলা ৷
শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ ৷ তাতেই আত্মসমর্পণ করেন ওই মহিলা ৷ জানা যায়, তাঁর নাম অচিরা যাদব ৷ বড় হয়ে ওঠা অসমের গুয়াহাটিতে ৷ স্কুল ও কলেজ পাশ করেন তিনসুকিয়া থেকে ৷ তারপর স্নাতকোত্তর গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৷ এরপর দিল্লিতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'গ্লোবাল টেররিজ়ম'-র উপর Ph.D করেন ৷ বাবা সুবোধচন্দ্র চৌধুরি ৷ অরুণাচল প্রদেশ ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত IFS ৷ একজন বোন আছে ৷ অঙ্কিতা সোনার ৷ বর্তমানে বিয়ে করে বেঙ্গালুরুতে থাকেন ৷
তাঁর স্বামী মহেন্দ্রপ্রসাদ যাদব 2017-তে মারা গেছেন ৷ তিনি কসবা ও হলদিয়াতে কাস্টম অফিসার হিসেবে কাজ করতেন ৷ সে সময় কাস্টম হাউজ়ের কোয়ার্টার্সে স্বামীর সঙ্গেই থাকতেন অচিরা ৷ পরে স্বামী মারা গেলে তিনি যাদবপুরে চলে আসেন ৷ তারপর থেকেই যুবক যুবতিদের চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আদায়, প্রতারণা ৷
সত্যব্রত ছাড়া আর কতজনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন অচিরা, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷