কলকাতা, ২৪ মার্চ : লোগো থেকে "কংগ্রেস" বিলুপ্ত হয়ে এখন শুধুই "তৃণমূল"? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নতুন লোগো নিয়ে দিনদুয়েক হল বিস্তর শোরগোল পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। দলের ফেসবুক, টুইটার অ্যাকাউন্ট সহ সোশাল মিডিয়ায় আপাতত ছয়লাপ তৃণমূলের এই নতুন লোগো। কিন্তু, সত্যিই কি কংগ্রেস শব্দটি প্রত্যাখ্যান করল তৃণমূল? দলের তরফে কিন্তু বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "নির্বাচন কমিশনের কাছে দলের নাম সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন দলের নাম এবং প্রতীকের অনুমোদন দিয়েছে।"
এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় শ্রমিক নেত্রী দোলা সেন ETV ভারতকে বলেন, "নির্বাচন কমিশনের কাছে নথিভুক্ত করা রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নাম। তাই কংগ্রেস শব্দটি বাদ দেওয়ার কোনও কারণই নেই। প্রচারের জন্য দলের ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা এটি করে থাকতে পারে।"
তৃণমূলের সোশাল মিডিয়ার দায়িত্বে থাকা দীপাংশু চৌধুরিও দোলা সেনের সুরেই বলেন, "একটা প্রতিষ্ঠিত নাম এভাবে কখনও পরিবর্তন হয় না। কংগ্রেস কথাটি লেখা নেই মানে এই নয় যে সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন হল।"
তৃণমূলের দুই বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায় ও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এনিয়ে মুখ খুলতে চাননি।
১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি দল প্রতিষ্ঠার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করতেন, তাঁর দল-ই হচ্ছে আসল কংগ্রেস। মূল কংগ্রেস। যাদের শিকড় রয়েছে তৃণমূলস্তরের সঙ্গে। একের পর এক বছর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন ঘটেছে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের। তৃণমূল বর্তমানে রাজ্যের সবথেকে বড় দল। জাতীয় রাজনীতির মুখ হয়ে উঠেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল শব্দটি এখন সর্বজনবিদিত।
তবে বাস্তব যা-ই হোক, প্রায় একুশ বছর পর বদলে গেছে জোড়া ফুলের প্রতীকের রং। নেই কংগ্রেস শব্দটি। এরসঙ্গে জুড়েছে প্রচারমূলক একটি ক্যাপশন। দলের ফেসবুক, টুইটার অ্যাকাউন্ট সহ সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে "নতুন তৃণমূল"। জোড়া ফুলের নিচে লেখা থাকছে শুধুমাত্র "তৃণমূল"। তার নিচে ক্যাপশন হিসেবে থাকছে "আমার আপনার বাংলার"।
কিন্তু, হঠাৎ করে কেন এই পরিবর্তন তৃণমূলের ? উঠতে শুরু করেছে এই প্রশ্ন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এরাজ্যে সংকটে কংগ্রেসের অস্তিত্ব। অন্যদিকে রাজ্যে একচ্ছত্র দাপট রয়েছে তৃণমূলের। এমতাবস্থায় তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস শব্দটি বয়ে বেড়ানো অমূলক ভেবে এই বদল ঘটাতে পারে শীর্ষ নেতৃত্ব।