কলকাতা, 24 মার্চ : রোজকার শহরের সকালের সেই চেনা ছবি আজ আর দেখা গেল না । এবার খবর কাগজ বণ্টনেও কোরোনার থাবা । শহরের বহু এলাকায় আজ কাগজ পাননি সাধারণ মানুষ । বিক্রেতাদের অভিযোগ, অনেক জায়গায় আবার কাগজই নিতে চায়নি জনতা । খবরের কাগজ বিক্রেতা সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন, তারা খবরের কাগজ দিতে প্রস্তুত । কিন্তু বহু আবাসনে আজ কেউ খবর কাগজ নিতেই রাজি হয়নি ।
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সব রাজ্যের মুখ্য সচিবকে দেওয়া হয়েছে চিঠি । তাতে বলা হয়েছে, কোরোনা আতঙ্কের মাঝে জনসচেতনতা তৈরি করতে সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা অনেকখানি । তাই সংবাদ মাধ্যম যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হোক । তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের ডিরেক্টরের চিঠি এসেছে এ রাজ্যেও । চিঠিতে তিনি মুখ্য সচিবকে অনুরোধ করেছেন, এই পরিস্থিতিতে সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল, ডিজ়িটাল মিডিয়া, নিউজ এজেন্সিগুলি যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে । এমনকি খবরের কাগজ বণ্টনের বিষয়টিও লক্ষ্য রাখতে হবে সরকারকে ।
কিন্তু কলকাতার ক্ষেত্রে খবরের কাগজের বণ্টনেও প্রভাব ফেলেছে কোরোনা । সল্টলেক, যাদবপুর, গড়িয়া হাটের একাংশ, নিউ আলিপুর সহ বহু এলাকার মানুষ খবরের কাগজ পাননি । হাওড়াতেও একই অবস্থা । এপ্রসঙ্গে একটি সংবাদপত্রের সার্কুলেশনের সঙ্গে যুক্ত থাকা রানা ইন্দ্র বলেন, "হকার ভাইরা অনেক কষ্ট করে কাগজ তুলছেন । কিন্তু কাগজ নিতে ভয় পাচ্ছে মানুষ । বহু কমপ্লেক্সের দেওয়ালে বড় বড় করে লিখে দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা কাগজ নেবেন না । ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হকাররা । আজ কিছু কিছু জায়গায় কাগজ পৌঁছলেও, কাল থেকে কাগজ নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হকাররা । কলকাতায় একটি বাংলা, একটি ইংরেজি এবং এটি হিন্দি কাগজ ছাপাই হয়নি ।"
পশ্চিমবঙ্গ সংবাদপত্র বিক্রেতা সমিতির যাদবপুর ইউনিটের সম্পাদক সজল দাস এপ্রসঙ্গে বলেন, "বিভিন্ন ফ্ল্যাটে, বাড়িতে কিংবা কমপ্লেক্সে আমাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না । মানুষ ভয় পাচ্ছে খবরের কাগজের মাধ্যমে যদি কোরোনা ভাইরাস বাড়িতে ঢুকে পড়ে । হকার ভাইরা অনেক কষ্ট করে সংবাদপত্র সকাল-সকাল মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দেয় । মানুষ যদি না নেয় তাহলে কি বা করার আছে ।" পশ্চিমবঙ্গ সংবাদপত্র বিক্রেতা ইউনিয়নের গড়িয়া হাট শাখার সম্পাদক নিখিল দে বলেন, "আজ কিছু জায়গায় আমরা কাগজ পৌঁছে দিয়েছি । কিন্তু আগামীকাল থেকে হয়তো তা আর হবে না । মানুষজন কাগজ নিচ্ছেন না । আমরা 28 তারিখ থেকে আবার কাগজ দেওয়ার চেষ্টা করব ।"