কলকাতা, 17 মার্চ: আঞ্চলিক শক্তিগুলিকে একজোট করেও জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করা যায় । এমনটাই মনে করে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) । আর সেটা যে তারা করে দেখাতে বদ্ধপরিকর, তা শুক্রবার লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (TMC MP Sudip Bandopadhyay) কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে ৷ আর ঠিক সেই প্রেক্ষিতেই এদিন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবের (SP Leader Akhilesh Yadav) সঙ্গে বৈঠক থেকেই করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) ৷ কার্যত বুঝিয়ে দিলেন যে আঞ্চলিক শক্তিগুলিকে একজোট করার কাজ এদিন কালীঘাট থেকেই শুরু হয়ে গেল ৷
প্রসঙ্গত, শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ছিল কালীঘাটে । এই বৈঠকের শেষেই সমাজবাদী পার্টির প্রধান তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (Mamata meets Akhilesh at her Residence) । যদিও এই বৈঠকের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের তরফ থেকে লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন, বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আঞ্চলিক শক্তির উপর ভরসা রাখতে চাইছে তাঁদের দল । আর এদিন অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক সেই পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে চলেছে ।
তিনি এও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এদিন অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠকের পর আগামী সপ্তাহে ওড়িশা যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী । সেক্ষেত্রে তাঁর বৈঠক হবে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গেও । চলতি মাসের শেষে অথবা আগামী মাসের শুরুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি যাওয়ার কথা । সেখানেও একাধিক আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
ফলে এই আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে একজোট করে বিজেপি বিরোধী লড়াইকে যে পূর্ণতা দিতে চান তৃণমূল নেত্রী, তা এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে । আর শুক্রবার অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক ছিল সেই পথেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ।
এদিন বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ কালীঘাটে এসে পৌঁছন অখিলেশ যাদব । তাঁর সঙ্গে ছিলেন একদা পশ্চিমবঙ্গে মৎস্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো সপার গুরুত্বপূর্ণ নেতা কিরণময় নন্দও । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে অখিলেশ মিনিট 45 ছিলেন । জানা গিয়েছে, এই স্বল্প পরিসরেই দু’জনের মধ্যে অত্যন্ত ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে ।
প্রসঙ্গত, এদিন সপা ও তৃণমূল উভয়ের মুখেই কংগ্রেস বিরোধিতার সুর শোনা গিয়েছে । দলের সাংগঠনিক বৈঠকের ফাঁকে যেমন অখিলেশ যাদব স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন যে 24 এর নির্বাচনের তারা চাইছে বিজেপি ও কংগ্রেসের থেকে সম দূরত্ব বজায় রাখতে । তৃণমূলও বলছে, এ রাজ্যে কংগ্রেস ও বিজেপি হাত মিলিয়ে চলছে । কেন্দ্রেও বিজেপি চাইছে রাহুলই বিরোধী শিবিরের মুখ হোন । কারণ, তাতে নরেন্দ্র মোদির জিততে সুবিধা হবে । কিন্তু তৃণমূলও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল । তৃণমূল এটা প্রমাণ করবে, কীভাবে বিরোধীদের একত্রিত করতে হয় ।
ফলে এদিনের বৈঠক থেকে স্পষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই গোটা দেশে অবিজেপি, অকংগ্রেসী জোটের সলতে পাকানো শুরু হয়ে গেল । তবে ভোট বাক্সে এই জোট কতটা কার্যকরী হয়, সেটা এখন দেখার ।
আরও পড়ুন: আঞ্চলিক দলগুলিকে সম্মান না দিয়ে বিগবসের মতো আচরণ কংগ্রেসের, অভিযোগ সুদীপের