কলকাতা, 21 অগস্ট: জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে আবারও প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। রবিবার 14 নং ওয়ার্ডের এই মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আমন্ত্রণপত্রে প্রয়াত বিধায়ক সাধন পাণ্ডের স্ত্রীর নাম থাকলেও মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডের নাম নেই। আগামিদিনে আমন্ত্রণ পত্রে দুজনের নামই দেখতে চান তিনি। এরপরই এই বিষয় নিয়ে নাম না-করে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
কটাক্ষের সুরে কুণাল বলেন, "কথায় বলে, তোমরা মিলে মিশে চলো তাতে আমি অভিভাবক হব না। যদি আমি অভিভাবক হই তাহলে সমস্যার মধ্যে ঢুকে দুজনকে সামনে বসিয়ে তবেই জ্ঞান দেব। তার আগে জ্ঞান দেওয়া আমার মানায় না। পরেশ পালের সঙ্গে নাকি কারও কারও ঝগড়া ছিল ৷ পরের প্রজন্ম বয়স অনেক কম। কিন্তু আমি ঘরে বসে জ্ঞান দিইনি যে মিটিয়ে নিতে হবে। সভাই দাঁড়িয়ে নামও উচ্চারণ করিনি।" এরপর কারও নাম না করে কটাক্ষ করেন কুণাল। একজন প্রবীণ নেতার ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত তা মনে করিয়ে তিনি বলেন, "যদি কারও মনে হয় সংগঠনের কোথাও মধ্যে গলদ আছে, তাহলে তিনিই আসল নেতা যিনি নিজের বাড়িতে বা কোথাও গিয়ে দুজনকে ডেকে দরজা বন্ধ করে মান অভিমান মিটিয়ে দেন। সস্তা নাম কুড়ানোর জন্য মঞ্চে কার্ড দেখে নাম পড়ার রাজনীতি চলতে পারে না।"
কুণাল ঘোষের এই বক্তব্যে কোথাও একবারের জন্যও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আসেনি। তবে এই বক্তব্য নির্দিষ্ট করে কার উদ্দেশ্যে রাখা হয়েছে তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের। যদিও এই নিয়ে পালটা প্রতিক্রিয়া দেননি সুদীপ। কিন্তু এই ঘটনা ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে থাকা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
উত্তর কলকাতায় বহুদিন ধরেই তৃণমূলের কয়েকটি গোষ্ঠি সক্রিয়। তাছাড়া বেশ কয়েক জনের নেতার একে অপেরর সঙ্গে সদ্ভাব নেই বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। সেই সূত্র ধরেই দলের দুই নেতা প্রয়াত সাধন পাণ্ডে এবং পরেশ পাশের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয় মতান্তর ছিল বলে মনে করা হয়। জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সুদীপ এবং কুণালের বক্তব্যের মাধ্যমে সেই পুরনো বিবাদের স্মৃতি আরও একবার তাজা হয়ে গেল বলে মত রাজনীতির কারবারিদের একটা অংশের।
আরও পড়ুন : যাদবপুর নিয়ে সস্তার রাজনীতি করছেন শুভেন্দু অধিকারী, আক্রমণে কুণাল