কলকাতা, 2 মে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয়বারের সরকারের আজ দু'বছর পূর্তি । 2021 সালে আজকের দিনে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সে দিন জনতার রায়ে বিজেপিকে কার্যত পর্যদুস্ত করেছিল ঘাসফুল । সেই দিনের কথা স্মরণ করে আজ ক্যাবিনেট বৈঠকে সব মন্ত্রীদের জন্য বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি প্রত্যেককে বলেছেন, নিজের এলাকায় সকলে যেন গিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিষ্টি ও ফল বিতরণ করে জনসংযোগ বাড়ান । বিশেষ করে হাসপাতালগুলিতে যেতে বলা হয়েছে মন্ত্রীদের ।
এই বিশেষ দিনে একটি টুইটও করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি লেখেন, "2021 সালে আজকের দিনে বাংলার মা-মাটি-মানুষ সারা পৃথিবীতে দেখিয়েছিলেন যে গণতন্ত্রে মানুষের শক্তির চেয়ে বড় কোনও শক্তি নেই । আর সে জন্য আমি তাঁদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই । প্রকৃত জাতি নির্মাণে আমাদের প্রয়াস জারি রাখতে হবে, দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে হবে, কারণ আগামী দিনে আমাদের অনেক যুদ্ধ লড়তে হবে, জিততেও হবে । আমি আজ 'মা-মাটি-মানুষ দিবসে' বাংলার সকল মানুষকে আমাদের রাজ্যে গণতন্ত্র বজায় রাখার যে ভূমিকা তাঁরা পালন করেছেন সেজন্য তাঁদের সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি ।"
-
২০২১ সালে আজকের দিনে বাংলার মা-মাটি-মানুষ সারা পৃথিবীতে দেখিয়েছিলেন যে গণতন্ত্রে মানুষের শক্তির চেয়ে বড় কোন শক্তি নেই। আর সেজন্য আমি তাঁদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 2, 2023 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
প্রকৃত জাতি নির্মাণে আমাদের প্রয়াস জারি রাখতে হবে, দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে হবে, কারণ আগামী দিনে আমাদের অনেক…
">২০২১ সালে আজকের দিনে বাংলার মা-মাটি-মানুষ সারা পৃথিবীতে দেখিয়েছিলেন যে গণতন্ত্রে মানুষের শক্তির চেয়ে বড় কোন শক্তি নেই। আর সেজন্য আমি তাঁদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 2, 2023
প্রকৃত জাতি নির্মাণে আমাদের প্রয়াস জারি রাখতে হবে, দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে হবে, কারণ আগামী দিনে আমাদের অনেক…২০২১ সালে আজকের দিনে বাংলার মা-মাটি-মানুষ সারা পৃথিবীতে দেখিয়েছিলেন যে গণতন্ত্রে মানুষের শক্তির চেয়ে বড় কোন শক্তি নেই। আর সেজন্য আমি তাঁদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 2, 2023
প্রকৃত জাতি নির্মাণে আমাদের প্রয়াস জারি রাখতে হবে, দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে হবে, কারণ আগামী দিনে আমাদের অনেক…
একুশের নির্বাচনে মূলত 10টি অঙ্গীকারকে সামনে রেখে নির্বাচনে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার । তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে জনমতের বছর দুই বাদে সেই 10 অঙ্গীকারের কতটা পূরণ হল আর কতটাই বা রইল অপূর্ণ ? একুশের 10 অঙ্গীকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অজস্র সুযোগ তৈরি করে সমৃদ্ধ বাংলা তৈরি করা হবে । দু'বছর বাদে এই সরকার তার অঙ্গীকার পূরণে কতটা সফল হল, তা একটু দেখে নেওয়া যাক ।
এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ তথা শিক্ষক শান্তনু বসু বলেন, বর্তমান সময়ে সরকারের এই প্রতিশ্রুতি অনেকটা সোনার পাথর-বাটির মতো । গোটা বিশ্বের অর্থনীতি যে এই মুহূর্তে খুব ভালো একটা অবস্থায় আছে তা নয় । তবে রাজ্য সরকার এই অবস্থায় যে পদক্ষেপগুলি করতে পারত তা করা হয়নি । আর সেই কারণেই হয়তো ডিএ দিতে গিয়ে ভাঁড়ারে টান পড়ছে । তাঁর কথায়, "মূলত এই সরকার ব্যস্ত থেকেছে ডোল পলিটিক্সে । যার একটা ফল আমাদের অর্থনীতিকে ভুগতে হচ্ছে । মুখ্যমন্ত্রীকে প্রায়শই বলতে হচ্ছে টাকা নেই ।"
নির্বাচনী ইশতেহারে দ্বিতীয় অঙ্গীকার ছিল, প্রত্যেক পরিবারের ন্যূনতম আয়ের সংস্থান করা । এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার 2021 সালের পয়লা জুলাই ঘোষণা করে সাধারণ ক্যাটাগরির জন্য আর্থিক সহায়তা প্রতি মাসে 500 টাকা এবং এসসি ও এসটি ক্যাটাগরির জন্য প্রতি মাসে 1000 টাকা হবে । শেষ পাওয়া সরকারি খবর অনুযায়ী, এই মুহূর্তে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের উপভোক্তা 1 কোটি 98 লক্ষ মহিলা ।
একুশের নির্বাচনের তৃতীয় অঙ্গীকার ছিল স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ৷ এই প্রতিশ্রুতি রূপায়ণে অনেকটাই সফল হয়েছে এই সরকার । প্রতিশ্রুতি মতো 2021 সালের 30 জুন সারা রাজ্যে চালু হয় স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড । ইচ্ছে থাকলেও ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য যাতে অর্থ অন্তরায় না হয়, সেজন্য এই প্রকল্প নিয়ে আসে রাজ্য সরকার ।
এই প্রতিশ্রুতির মধ্যেই দুয়ারে রেশন চালু এবং কৃষক বন্ধুর সাহায্যের অর্থ পাঁচ হাজার থেকে বাড়িয়ে 10,000 করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার ৷ বিগত দুই বছরের মধ্যেই এই দুই প্রতিশ্রুতিও পালন করেছে রাজ্য । তবে এই প্রতিশ্রুতি পত্রে থাকা আরও বেশি শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে । বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলি মনে করছে, মমতা সরকারের সময় সেভাবে কোনও নতুন করে শিল্পায়ন হয়নি ।
এই অবস্থায় রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, এই সরকারের আমলে উন্নয়ন যে হয়নি এমন নয় । তবে কর্মসংস্থান এবং নতুন শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বহু ক্ষেত্রে বাধা হয়েছে সরকারি নীতি । এই পরিস্থিতিতে যেভাবে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে, তাতে নতুন করে শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান প্রশ্নের মুখে পড়তে বাধ্য । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে এই মুহূর্তে দেখার কীভাবে তারা সংকট কাটিয়ে নতুন করে রাজ্যকে শিল্পায়ন এবং নতুন কর্মসংস্থানের পথে ফেরাতে পারে ।
আরও পড়ুন: কুলতলিতে মা ও তাঁর প্রেমিকের হাতে খুন 4 বছরের ছেলে !