ETV Bharat / state

বাতিল হতে পারে মাধ্যমিক পরীক্ষা, অনলাইনে উচ্চমাধ্যমিক ? - madhyamik

সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়তো বাতিল হতে পারে । সেক্ষেত্রে নবম ও দশম শ্রেণির মার্চ মাসের ইন্টারনাল পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে মাধ্যমিকের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হতে পারে । পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে অনলাইনে ওপেন বুক ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে । সেক্ষেত্রে কম নম্বরে ও কম সময়ের পরীক্ষা হবে । অনলাইনে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে । পরীক্ষার্থীরা বাড়িতে বসেই উত্তর লিখে হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমেলের মাধ্যমে উত্তর আপলোড বা জমা দেবে ।

how far is online examination acceptable
বাতিল হতে পারে মাধ্যমিক পরীক্ষা
author img

By

Published : Jun 4, 2021, 9:09 PM IST

কলকাতা, 4 জুন : 2021-এর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরে রিপোর্ট জমা দিল ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি । শিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈনের কাছে জমা পড়ল ওই রিপোর্ট । রিপোর্ট যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও । সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়তো বাতিল হতে পারে । সেক্ষেত্রে নবম ও দশম শ্রেণির মার্চ মাসের ইন্টারনাল পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে মাধ্যমিকের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হতে পারে । পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে অনলাইনে ওপেন বুক ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে । সেক্ষেত্রে কম নম্বরে ও কম সময়ের পরীক্ষা হবে । অনলাইনে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে । পরীক্ষার্থীরা বাড়িতে বসেই উত্তর লিখে হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমেলের মাধ্যমে উত্তর আপলোড বা জমা দেবে । এভাবে উত্তর জমা বা আপলোড করতে না পারলে পর্ষদের তরফে সেইসব পরীক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উত্তরপত্র সংগ্রহ করা হবে ।

তবে ছাত্র জীবনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মতো পরীক্ষাগুলি যদি অনলাইনে হয় তবে তার গুণমান ঠিক কতটা বজায় থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা মহলে । একাংশের মতে, করোনাকালে একেবারে পরীক্ষা বাতিল না হয়ে যদি তা অনলাইনেও করা যায় তাহলে তা পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের পক্ষে ভাল । অন্যদিকে বেশকিছু শিক্ষাবিদদের মনে করছেন যে অনলাইনে পরীক্ষা হলে তা আদতে কতটা যুক্তিসংগত হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ।

শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের মতে, "ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে প্রথম ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা । মাধ্যমিক পরীক্ষার মাধ্যমে পড়ুয়ারা নিজেদের যোগ্যতা যাচাই করতে পারে । তাই মাধ্যমিক পরীক্ষা যদি বাতিল হয়ে যায় তাহলে পড়ুয়ারা যে নিজেদের যাচাই করতে পারবে সেই সুযোগটা আর থাকবে না । ভবিষ্যতে তারা কোন দিকে যাবে বা কি নিয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করব সেই বিষয়টিও মূল্যায়ন করার কোনও সুযোগ থাকবে না । তাই এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় যদি বাতিল হয়ে যায় তাহলে তার চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছুই হবে না ।"

তিনি আরও বলেন,"বিশেষজ্ঞ কমিটি যদি পরীক্ষা বাতিল করার সুপারিশ করে তবে পড়ুয়ারা এই সিদ্ধান্তকে খুব একটা ভালোভাবে নেবে বলে আমার মনে হয় না । এখানে কিছুদিন আগেই বিধানসভায় নির্বাচন পরিচালনা করা গেল ৷ সেখানে 12 লক্ষ পরীক্ষার্থীদের নিয়ে পরীক্ষা পরিচালনা করা যাবে না, এই বিষয়টা আমাদের বিশ্বাস করতে একটু অসুবিধা হয় । সরকারের উচিত সবরকম ব্যবস্থা করে পরীক্ষা নেওয়া ।"

অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টিতে তিনি বলেন,"আমরা সবাই জানি যে অনলাইনে পরীক্ষায় নানা রকম ফাঁকি দেওয়ার উপায় থাকে । একজন শিক্ষাবিদ হিসাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা রিপোর্ট পেয়েছি যে কখনও নেটওয়ার্কের সমস্যার নামে অতিরিক্ত সময় নেওয়া হচ্ছে । আবার কোথাও উত্তর জানা থাকলে অন্যের কাছ থেকে কিংবা বই দেখে সেই উত্তর লিখে দেওয়া হচ্ছে । তাই পরীক্ষার মাধ্যমে যে যাচাইয়ের ব্যাপারটা থাকে সেটা অনলাইন পরীক্ষার ক্ষেত্রে থাকে না ।"

আরও পড়ুন : আজ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের দিন ঘোষণা নয়

পাশাপাশি একটি বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় বলেন, "অনলাইন মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়ার কোনওরকম প্রস্তুতি পড়ুয়াদের নেই । তাদের সব সময় গতে ধরা বা ট্রাডিশনাল প্রশ্নর মডেল মেনেই পড়ানো হয়েছে । আর ঠিক সেভাবেই তারাও পরীক্ষার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেছে । এখন যদি হঠাৎ করে তাদের এমসিকিউ প্রশ্নপত্রে উত্তর দিতে হয় তাহলে তা তাদের পক্ষে কিছুটা অসুবিধা হতেই পারে । অন্যদিকে বহু পরীক্ষার্থীদের কাছে এখনও মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার নেই । অনেক জায়গায় আবার নেটওয়ার্কের সমস্যা রয়েছে । সেই সমস্ত জায়গাগুলিতে অনলাইনে কী করে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে । প্রত্যন্ত গ্রাম বা পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে দিনের বেশিরভাগ সময় নেটওয়ার্ক থাকে না । সেখানে পরীক্ষার্থীরা কীভাবে পরীক্ষা দেবে বা কীভাবে তাদের উত্তরপত্র আপলোড করবে সেই বিষয়েও ধোঁয়াশা থেকে যাচ্ছে ।"

কলকাতা, 4 জুন : 2021-এর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরে রিপোর্ট জমা দিল ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি । শিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈনের কাছে জমা পড়ল ওই রিপোর্ট । রিপোর্ট যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও । সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়তো বাতিল হতে পারে । সেক্ষেত্রে নবম ও দশম শ্রেণির মার্চ মাসের ইন্টারনাল পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে মাধ্যমিকের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হতে পারে । পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে অনলাইনে ওপেন বুক ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে । সেক্ষেত্রে কম নম্বরে ও কম সময়ের পরীক্ষা হবে । অনলাইনে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে । পরীক্ষার্থীরা বাড়িতে বসেই উত্তর লিখে হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমেলের মাধ্যমে উত্তর আপলোড বা জমা দেবে । এভাবে উত্তর জমা বা আপলোড করতে না পারলে পর্ষদের তরফে সেইসব পরীক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উত্তরপত্র সংগ্রহ করা হবে ।

তবে ছাত্র জীবনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মতো পরীক্ষাগুলি যদি অনলাইনে হয় তবে তার গুণমান ঠিক কতটা বজায় থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা মহলে । একাংশের মতে, করোনাকালে একেবারে পরীক্ষা বাতিল না হয়ে যদি তা অনলাইনেও করা যায় তাহলে তা পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের পক্ষে ভাল । অন্যদিকে বেশকিছু শিক্ষাবিদদের মনে করছেন যে অনলাইনে পরীক্ষা হলে তা আদতে কতটা যুক্তিসংগত হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ।

শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের মতে, "ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে প্রথম ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা । মাধ্যমিক পরীক্ষার মাধ্যমে পড়ুয়ারা নিজেদের যোগ্যতা যাচাই করতে পারে । তাই মাধ্যমিক পরীক্ষা যদি বাতিল হয়ে যায় তাহলে পড়ুয়ারা যে নিজেদের যাচাই করতে পারবে সেই সুযোগটা আর থাকবে না । ভবিষ্যতে তারা কোন দিকে যাবে বা কি নিয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করব সেই বিষয়টিও মূল্যায়ন করার কোনও সুযোগ থাকবে না । তাই এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় যদি বাতিল হয়ে যায় তাহলে তার চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছুই হবে না ।"

তিনি আরও বলেন,"বিশেষজ্ঞ কমিটি যদি পরীক্ষা বাতিল করার সুপারিশ করে তবে পড়ুয়ারা এই সিদ্ধান্তকে খুব একটা ভালোভাবে নেবে বলে আমার মনে হয় না । এখানে কিছুদিন আগেই বিধানসভায় নির্বাচন পরিচালনা করা গেল ৷ সেখানে 12 লক্ষ পরীক্ষার্থীদের নিয়ে পরীক্ষা পরিচালনা করা যাবে না, এই বিষয়টা আমাদের বিশ্বাস করতে একটু অসুবিধা হয় । সরকারের উচিত সবরকম ব্যবস্থা করে পরীক্ষা নেওয়া ।"

অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টিতে তিনি বলেন,"আমরা সবাই জানি যে অনলাইনে পরীক্ষায় নানা রকম ফাঁকি দেওয়ার উপায় থাকে । একজন শিক্ষাবিদ হিসাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা রিপোর্ট পেয়েছি যে কখনও নেটওয়ার্কের সমস্যার নামে অতিরিক্ত সময় নেওয়া হচ্ছে । আবার কোথাও উত্তর জানা থাকলে অন্যের কাছ থেকে কিংবা বই দেখে সেই উত্তর লিখে দেওয়া হচ্ছে । তাই পরীক্ষার মাধ্যমে যে যাচাইয়ের ব্যাপারটা থাকে সেটা অনলাইন পরীক্ষার ক্ষেত্রে থাকে না ।"

আরও পড়ুন : আজ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের দিন ঘোষণা নয়

পাশাপাশি একটি বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় বলেন, "অনলাইন মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়ার কোনওরকম প্রস্তুতি পড়ুয়াদের নেই । তাদের সব সময় গতে ধরা বা ট্রাডিশনাল প্রশ্নর মডেল মেনেই পড়ানো হয়েছে । আর ঠিক সেভাবেই তারাও পরীক্ষার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেছে । এখন যদি হঠাৎ করে তাদের এমসিকিউ প্রশ্নপত্রে উত্তর দিতে হয় তাহলে তা তাদের পক্ষে কিছুটা অসুবিধা হতেই পারে । অন্যদিকে বহু পরীক্ষার্থীদের কাছে এখনও মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার নেই । অনেক জায়গায় আবার নেটওয়ার্কের সমস্যা রয়েছে । সেই সমস্ত জায়গাগুলিতে অনলাইনে কী করে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে । প্রত্যন্ত গ্রাম বা পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে দিনের বেশিরভাগ সময় নেটওয়ার্ক থাকে না । সেখানে পরীক্ষার্থীরা কীভাবে পরীক্ষা দেবে বা কীভাবে তাদের উত্তরপত্র আপলোড করবে সেই বিষয়েও ধোঁয়াশা থেকে যাচ্ছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.