কলকাতা, 19 মে: প্রাথমিকে 32 হাজার শিক্ষকের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ ৷ শুক্রবার সকালে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর 23 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ এর মানে, এখনই চাকরি খোয়াতে হচ্ছে না 32 হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের ৷
পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো নতুন করে ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে ৷ বেঞ্চের বক্তব্য, 32 হাজার চাকরি বাতিল করার আগে সব পক্ষের বক্তব্য ভালো করে খতিয়ে দেখেনি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ ৷ আদালতের পর্যবেক্ষণ দ্রুত বিচার পাওয়া সবার অধিকার ৷ তবে তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চ কি সব পক্ষের বক্তব্য ভালো করে খতিয়ে দেখেছেন ? প্রশ্ন তুলেছে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি সবার কথা শুনে দেখার উপর জোর দিয়েছে । তাই আপাতত 32 হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ৷
গত 12 মে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় 36 হাজার কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ পরে তা কমে 32 হাজার হয় ৷ 2014 সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে 2016 সালে প্রায় 42 হাজার 942 জন শিক্ষক নিয়োগ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ৷ এদিকে নিয়োগে একাধিক গলদ রয়েছে দাবি করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন প্রিয়ঙ্কা নস্কর নামে এক প্রার্থী-সহ প্রায় 140 জন ৷
মামলাকারীদের অভিযোগ, এই শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে অ্যাপটিটিউড টেস্ট করা হয়নি ৷ প্রশিক্ষণ ছাড়াই প্রার্থীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে ৷ সংরক্ষণের তালিকা মেনে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি ৷ এদিকে ডিভিশন বেঞ্চে চাকরিরতদের ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট একসঙ্গেই করা হয়েছিল ৷ আর প্রশিক্ষণের বিষয়ে কেন্দ্র সরকারে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে পরিস্কার উল্লেখ করা হয়েছিল ২০১৯ সাল পর্যন্ত যাদের প্রশিক্ষণ নেই সেই প্রার্থীরা চাকরি পাওয়ার ২ বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ নিলেই হবে। ডিভিশন বেঞ্চ এই সমস্ত কিছুর পরিপ্রেক্ষিতে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল আজ
আরও পড়ুন: 36 হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের
উল্লেখ্য, 12 মে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় 36 হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেন ৷ চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকরা আরও চার মাস কাজ করলেও পুরো বেতন পাবেন না বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি ৷ পাশাপাশি আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ইন্টারভিউ নেওয়ারও নির্দেশ দেন ৷ এরপর 15 মে তাঁর এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ৷ তার শুনানিতে আজ এই নির্দেশ দিল দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ৷