কলকাতা, 14 সেপ্টেম্বর: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মন্তব্যের জেরে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন প্রাক্তন উপাচার্যরা ৷ তাই রাজ্যপাল নয়, আচার্যের বিরুদ্ধে এবার আইনি চিঠি দিলেন 12 জন প্রাক্তন উপাচার্য তথা অধ্যাপক । তাঁর মন্তব্যের জন্য 15 দিনের মধ্যে আচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং প্রত্যেক উপাচার্যকে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা জরিমানা হিসাবে দিতে হবে ৷ এর অন্যথা হলে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের হতে পারে কলকাতা হাইকোর্টে । বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন প্রাক্তন উপাচার্যরা ।
উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে 27 জন উপাচার্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ কথা জানানো হয়েছিল আচার্যকে । তবে সেখানে 24 জনের মেয়াদ উত্তীর্ণ করেননি রাজ্যপাল । এর কারণ হিসেবে সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো বার্তায় আচার্য জানিয়েছেন, ওইসব উপাচার্যদের বিরুদ্ধে ছাত্রী হেনস্তা, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির অভিযোগ রয়েছে । তাই জন্যই তাঁদের মেয়াদ উত্তীর্ণ করা হয়নি । রাজ্যপালের এই অভিযোগের পরের দিনকেই রাজভবনে গিয়ে প্রতিবাদ দেখান এডুকেশন'স ফোরামের সদস্যরা । সেদিনই আচার্যের বিরুদ্ধে আইনের পরামর্শের হঁশিয়ারির কথা শোনা গিয়েছিল তাঁদের গলায় । আর কিছুদিনের মধ্যেই তা সত্যি করে এবার আইনি চিঠি পাঠালেন 12 জন প্রাক্তন উপাচার্য ।
এই 12 জনের তালিকায় রয়েছেন, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রানি রাসমণি গ্রীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আশুতোষ ঘোষ, কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক সাধন চক্রবর্তী, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক নিমাইচন্দ্র সাহা, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক মানস সান্যাল, বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক স্বাগতা সেন, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক দেবকুমার মুখোপাধ্যায়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন উপাচার্য ড. শান্তি ছেত্রী, সিধু কানু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড.দীপককুমার কর, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিত্র এবং বারাসত স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মহুয়া দাস ।
আরও পড়ুন: নয়া সিদ্ধান্ত ! বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য পদে বসছেন রাজ্যপাল
এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে অধ্যাপক আশুতোষ ঘোষ বলেন, "রাজ্যপালের কথা অনুযায়ী আমরা নয় কোন ছাত্রীকে হেনস্তা করেছি অথবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বা কোন দুর্নীতির সঙ্গে আপোস করেছি । এই সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর থেকে কীভাবে হেনস্তা হতে হচ্ছে তা বলে বোঝাতে পারব না । পরিবার থেকে বন্ধু-বান্ধব এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে প্রশ্নের মুখে পড়ছি । কেন এর প্রতিবাদ করছি না? সেই প্রশ্ন বারবার আমাদের করা হচ্ছিল । আমি মনে করি অন্যায় যে করে এবং অন্যায় যে সহে দুজনেই এক । নিজের আত্মবিশ্বাস কমে যাচ্ছিল । সেই জন্যই আমরা এই প্রতিবাদ জানাচ্ছি ।"